শিরোনাম
মূলপর্ব উদ্বোধনে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট
নাতি-পুতির প্রশ্নের জবাব দেবেন কি?
প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:০০
নাতি-পুতির প্রশ্নের জবাব দেবেন কি?
আবুল কাশেম, বালি (ইন্দোনেশিয়া) থেকে
প্রিন্ট অ-অ+

প্রযুক্তির বিকাশ আগামী দিনে মানুষের কাজের ধরণ পাল্টে দেবে। অটোমেশন, রোবটের ব্যবহার বাড়লে একদিকে কাজ কমে যাবে, অন্যদিকে সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থান। নয়া সেই কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে এখন থেকেই উপযুক্ত শিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে নতুন প্রজন্মকে। না হলে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় পিঁছিয়ে পড়ে টিকে থাকাই মুশকিল হবে নিজেদের।


শুক্রবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার পর্যটন দ্বীপ বালির ওয়েস্টিন-বিআইসিসিতে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন-২০১৮ এর মূল পর্বেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইএমএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টিন ল্যাগার্ডে ও বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এ বার্তা দিলেন।


বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্বব্যাপী মানুষের প্রত্যাশা বাড়ছে। স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ও স্যোশাল মিডিয়ার কারণে এক জায়গার মানুষ অন্য জায়গার মানুষদের জীবনমান সম্পর্কে প্রায় সবই জানতে পারছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে, এর মধ্য দিয়ে মানুষের আয় বাড়ানোর একটা প্রবণতাও সৃষ্টি হয়েছে।


‘এ বিষয়ে কোন প্রশ্ন নেই যে, মানুষের প্রত্যাশা বাড়ার এই প্রবণতা বাড়তেই থাকবে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৫ এর মধ্যে বিশ্বের ৮০০ কোটি মানুষের সবার হাতে স্মার্টফোন ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ থাকবে- বলেন তিনি।


জিম ইয়ং কিম বলেন, প্রযুক্তি মানুষের কাজের ধরণ পাল্টে দিচ্ছে। প্রযুক্তি, অটোমেশন ও নতুন নতুন উদ্ভাবন অনেক ক্ষেত্রে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। তবে নতুন নতুন পেশার সৃষ্টি করছে, যা কয়েক বছর আগেও ছিল না।


তিনি বলেন, প্রযুক্তি একই সঙ্গে যদি প্রত্যাশা বাড়ায় এবং কাজের ধরণ পাল্টে দেয়, আমাদের অবশ্যই কিছু কঠিন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। মানুষ তাহলে কি করবে? কিভাবে তারা তাদের পরিবারের খরচ মেটাবে? জটিল বিশ্বব্যাবস্থায় মানুষ কিভাবে তার স্বপ্ন পূরণ করবে?


বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘উত্তর একটিই- ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণের জন্য সরকারগুলোর উপযুক্ত খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। প্রত্যেকটি মানুষ যাতে তার সম্ভাবনার পুরোটা কাজে লাগাতে পারে, সেজন্য উপযুক্ত শিক্ষা, দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’


‘আমাদের নাতি-পুতিরা যখন প্রশ্ন করবে- তুমি যখন জানলে দুনিয়া আমার জন্য খুবই কঠিন হবে, তখন আমার ভালোর জন্য তুমি কি করেছিলে? তুমি যখন দেখলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের মধ্য দিয়েই পুরো দেশের কোটি মানুষের উন্নয়ন সম্ভব ছিল, তখন তুমি আমার জন্য কি করেছো? এখনই প্রস্তুতি না নিলে এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার কিছু থাকবে না’- সতর্ক করে দেন বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট।


এমডি ক্রিস্টিন ল্যাগার্ডে বলেন, ডিজিটাল বিপ্লব একই সঙ্গে অনেক আনন্দ ও বেদনার কারণ হবে আমাদের জন্য। বায়োটেক, রোবটিকস ও আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স নতুন শিল্প ও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে। তবে একইসঙ্গে অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান কমাবে। তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির যুগেও নিজের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে টিকে থাকার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করতে হবে এখন থেকেই।


বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মারাত্বকভাবে কমিয়ে দেবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, গত ৭০ বছর ধরে বিশ্বেও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা আজ অন্ধকারাচ্ছন্ন। বিশ্ব বাণিজ্যের চলমান এই সংকট আগামী দুই বছর ধরে বিশ্ব প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ কমবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।


অনুষ্ঠানে ইন্দোনেশিয়া সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও ১৮৭ দেশ থেকে আসা অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/কাশেম/শারমিন

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com