ছেলে রাহুলের হাতে কংগ্রেস দলের নেতৃত্ব তুলে সরে দাঁড়িয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু নতুন নেতার অধীনেও কংগ্রেসের অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি। ফলে আবার সামনে চলে এসেছে সোনিয়া-কন্যা প্রিয়াঙ্কা ভদ্রার ভবিষ্যৎ ভূমিকার প্রশ্ন।
২০১৪ সালের ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর থেকেই স্লোগান উঠেছে, দলের হাল ধরুক প্রিয়াঙ্কা। পোস্টারও পড়েছে এখানে-সেখানে - ‘প্রিয়াঙ্কা আসুক, দেশ বাঁচুক’। রাহুলের ওপর অনেকেরই তখন আস্থা ছিল না। কেননা, রাহুল স্বভাবে ছিলেন অন্তর্মুখী। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কার মধ্যে সবার সঙ্গে মেলামেশা করার একটা স্বাভাবিক প্রবণতা আছে, যেটা দলের পক্ষে ইতিবাচক। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা চাননি পরিবারে এই নিয়ে ফাটল ধরুক। বরং চেয়ে এসেছেন সোনিয়া, রাহুল এবং নিজের পারিবারিক বন্ধনে দলকে মজবুত করতে।
কংগ্রেসের অন্দরমহলের ধারণা, প্রিয়াঙ্কাই মায়ের নির্বাচনী এলাকা উত্তর প্রদেশের রায়বেরিলি কেন্দ্রের সবথেকে উপযুক্ত প্রার্থী। কংগ্রেস থেকেও বলা হয়েছিল সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের আঁতাত গড়ে তুলতে প্রিয়াঙ্কার অগ্রণী ভূমিকা অনস্বীকার্য। দ্বিতীয়ত, ১৯৯৯ সাল থেকে উত্তর প্রদেশের আমেথি ও রায়বেরিলী সংসদীয় আসন দুটি ধরে রাখতে প্রিয়াঙ্কার ভূমিকা প্রশ্নাতীত।
সোনিয়া গান্ধী ১৯৯৯ সালে প্রথমে ভোটে জিতেছিলেন আমেথি থেকে। ২০০৪ সালে আসনটি ছেলে রাহুলের হাতে দিয়ে সোনিয়া দাঁড়ালেন রায়বেরিলী কেন্দ্র থেকে। দুটি আসনই তখন থেকে গান্ধী পরিবারের ঝুলিতে। তার আগে অবশ্য দাঁড়িয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। সেদিক থেকে ঠাকুরমা এবং মায়ের কেন্দ্র হিসেবে রায়বেরিলী আসনটি প্রিয়াঙ্কার জন্য উপযুক্ত। রাহুলকে দলীয় কাজকর্মে সাহায্য করছেন প্রিয়াঙ্কা, যা আগে সামলাতেন সোনিয়া নিজে।
তবে দলে প্রিয়াঙ্কার ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি - আগেও যেমন ছিল, এখনো আছে। সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি এআইসিসির জেনারেল সেক্রেটারি শাকিল আহমেদের কথায়, ''প্রিয়াঙ্কা নিজেই ঠিক করবেন আরো সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন কি না।'' কাজেই ধন্দটা রয়েই গেছে।
এবিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অমূল্য গাঙ্গুলির অভিমত হলো, ‘‘কংগ্রেসের দুর্দিন কেটে গেছে. এখন অবস্থাটা আগের চেয়ে ভালো। তাই প্রিয়াঙ্কার আসার কোনো কারণ নেই। প্রিয়াঙ্কা ফিরে আসুক শ্লোগান সম্পর্কে বলা যায়, দলের মধ্যে অনেকে প্রিয়াঙ্কার সমর্থক। প্রিয়াঙ্কা ভোটে দাঁড়ালেও দাঁড়াতে পারেন, তবে রাহুল শীর্ষ নেতা হয়েই থাকবেন, রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে গান্ধী পরিবারের কেন্দ্রগুলো প্রিয়াঙ্কা যেমন দেখাশুনা করছিলেন, তা তেমনি চলবে। সামনেই চারটি রাজ্যে বিধানসভা ভোট, তাতে কংগ্রেস ভালো ফল করবে বলে মনে হয়। তারপরই ছবিটা পরিষ্কার হবে। আগে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে যত সন্দেহ ছিল, এখন আর তা নেই। রাহুল আগের চেয়ে এখন অনেক পরিণত। মিডিয়াও তা বলছে৷ আর প্রিয়াঙ্কার স্বামী রবার্ট ভদ্রার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ তো অনেক পুরানো, যা এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি।'' সূত্র ডয়চে ভেলে
বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]