শিরোনাম
এবার রোহিঙ্গারাই প্রকাশ করলো নিহতদের তালিকা
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৩২
এবার রোহিঙ্গারাই প্রকাশ করলো নিহতদের তালিকা
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর অভিযানে কত রোহিঙ্গা নারীপুরুষশিশু নিহত হয়েছে? এ পর্যন্ত এ প্রশ্নের নির্ভরযোগ্য কোনো হিসেব পাওয়া যায়নি। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য কাজ করা সাহায্য সংস্থা ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স’-এর হিসেব অনুযায়ী, গত বছরের সহিংসতার প্রথম মাসেই অন্তত ৬,৭০০ রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন। টেকনাফে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে জরিপ চালিয়ে তৈরি করা সেই হিসেবে শুধু এক মাসে নিহতের সংখ্যা বলা হলেও তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।


সবচাইতে ‘মজাদার’ হলো গণহত্যাযজ্ঞের আসামি মিয়ানমার বাহিনীর বয়ান। গত বছরের শেষ দিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী দাবি করেছিল যে, ‘রোহিঙ্গা জঙ্গিদের’ বিরুদ্ধে ২৫ আগস্ট থেকে ৫ অক্টোবর অবধি সেনাঅভিযান চলাকালে ৩৭৬ জন রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।


কোথায় ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স’-এর হিসেব অনুযায়ী অন্তত ৬,৭০০ আর কোথায় মিয়ানমার বাহিনীর ৩৭৬ জন!


এ অবস্থায় এগিয়ে এসেছেন স্বয়ং রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। দেখতে-শুনতে অতি সাধারণ একজন মানুষ আরো কয়েকজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে সঙ্গে নিয়ে গত বছর মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চলে সেদেশের সেনাবাহিনীর দমনপীড়ন চলাকালে যারা নিহত হয়েছেন, তাঁদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন। এটি এমন এক অসাধারণ কাজ, যা কোনো উন্নয়নসংস্থা, বিভিন্ন দেশের সরকার, এমনকি সাংবাদিকদের পক্ষেও করা সম্ভব হয়নি।


রোহিঙ্গাদের তৈরি তালিকাটি বেশ বিস্তৃত। তাঁদের হিসেবে, সহিংসতায় প্রাণ হারানো রোহিঙ্গার সংখ্যা দশ হাজারের বেশি। এতে অবশ্য শুধু গত আগস্টই নয়, ২০১৬ সালের অক্টোবরে আরেক সহিংসতায় নিহতদের কথাও যোগ করা হয়েছে। তালিকায় নিহতের নাম, বয়স, বাবার নাম, মিয়ানমারের ঠিকানা এবং কিভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল তার বিশদ বিবরণ রয়েছে।


যার নেতৃত্বে এ কাজটি এমন অসাধারণ কাজটি সম্পন্ন হয়েছে, তাঁর নাম মুহিব উল্লাহ। এ মানুষটিকে দেখলে কোনো মানবাধিকার তদন্তকারী মনে হবে না। তিনি থাকেন প্লাস্টিক ও বাঁশ দিয়ে তৈরি এক ঝুপড়ি ঘরে আর সারাক্ষণ পান চিবান। মাঝেমাঝে তাঁকে রোহিঙ্গা শিবিরে লাইনে দাঁড়িয়ে রেশন সংগ্রহ করতেও দেখা যায়।


নতুন এই তালিকার বিষয়ে মুহিব উল্লাহ বলেন, ‘আমি যখন নিজেই শরণার্থীতে পরিণত হয়ে যাই, তখন এ ব্যাপারে কিছু একটা করার তাগাদা অনুভব করি।’ তিনি মনে করেন, ভবিষ্যতে এই তালিকা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতার এক ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে কাজ করবে।


রোহিঙ্গাদের তৈরি তালিকার বিষয়ে কথা বলতে মিয়ানমার সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স; কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সূত্র : রয়টার্স ও এএফপি


বিবার্তা/হুমায়ুন/সোহান

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com