শিরোনাম
পাকিস্তানে ইমরান খানের বিজয় : কী ভাবছে ভারত
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০১৮, ২০:১৩
পাকিস্তানে ইমরান খানের বিজয় : কী ভাবছে ভারত
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+


পাকিস্তান ও ভারত প্রতিবেশী দেশ; কিন্তু আজন্ম বৈরী। দু'প্রতিবেশী দেশের একটি, পাকিস্তানে নির্বাচন হয়ে গেল বুধবার। যদিওভোটের পূর্ণ ফলাফলজানা যায়নি, তবুও স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, পাকিস্তানের মসনদে এবার আসীন হতে যাচ্ছেন সেনা মদদপুষ্ট নতুন ''রাজা'' ইমরান খান।



এ ফলাফল নিয়ে কী ভাবছে দিল্লী - কলকাতার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার বিশ্লেষণ থেকে তার খানিকটা আঁচ পাওয়া যায়। পত্রিকাটি লিখেছে -


পাকিস্তানের ভোটের পূর্ণ ফলাফল জানা যাবে কাল (শুক্রবার)। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) সারা দিন ধরে তোলপাড় চলল দিল্লির নর্থ ব্লক-সাউথ ব্লকে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল দফায় দফায় রিপোর্ট নিচ্ছেন র’ এবং আইবি-র কাছ থেকে।


ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হলে ভারতের লাভ না লোকসান, শুরু হয়ে গিয়েছে সেই মূল্যায়ন। র-এর প্রাক্তন বাঙালি কর্তা রানা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিমত, ইমরান গদিতে বসলে তিনি হবেন পাক সেনাবাহিনীর ‘রোবট’। সেটা এক দিক থেকে ভারতের জন্য 'শাপে বর' হতে পারে।




কারণ? কারণ, গোয়েন্দাদের একটা বড় অংশ মনে করেন, ইমরানের সরকার কার্যত সেনানিয়ন্ত্রিত সরকার হবে, গণতন্ত্র থাকবে শুধু নামেই। সেক্ষেত্রে মূলত নওয়াজ় শরিফের পুরনো ভোটব্যাঙ্ক পাক ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে এবং সার্বিকনভাবে দেশের আর্থিক উন্নয়নের স্বার্থেও অস্থিরতা চাইবে না সেনাবাহিনী। বরং সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে রাখার দায় থাকবে তাদের ওপরই।


নরেন্দ্র মোদীর শপথে এসেছিলেন নওয়াজ় শরিফ। তার পরে একাধিক বৈঠক হয় দুই নেতার। নওয়াজ়ের মেয়ের বিয়েতেও প্রোটোকল ভেঙে গিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু ভারতের কোনো কথাই রাখেনি পাক সেনা। গোয়েন্দাদের অনেকের মতে, ইমরান ক্ষমতায় এলে সেনার সঙ্গেই সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করতে পারে দিল্লি।


কূটনীতিকদের একটা বড় অংশ যদিও বলছেন, সেনাবাহিনীর শাসন যদি এত ভালোই হয়, তাহলে নির্বাচনের প্রহসন কেন? আদালত থেকে আইএসআই - সবই তো সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। ২০১৩ সালে যখন সন্ত্রাসবাদ চরমে, তখন পাক ভোটে নামানো হয়েছিল ৭০ হাজার সেনা। আর আজকের ভোটে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার সেনা! পাক নির্বাচন কমিশন সেনা অফিসারদের ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছিল। ফলে বুথে ঢুকে ভোট প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র ছিল তাঁদের। ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতি বার এক মাসেরও বেশি আগে পাকিস্তানে পৌঁছয়। এ বার তাদের সেই অনুমতিই দেওয়া হয়েছে এক সপ্তাহ আগে।


গোয়েন্দারা বলছেন, ইমরান একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না-পেলে তাঁকে পিপিপি-র সঙ্গে সমঝোতা করতে বলতে পারে সেনাবাহিনী। ভো্টের প্রচারে পিপিপি নেতা আসিফ আলি জ়ারদারির দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিস্তর বাগবিস্তার করেছেন ইমরান। সরকার গড়তে জ়ারদারির সঙ্গে হাত মেলানোটা তাই অস্বস্তিকর। তবু ইমরান হয়তো তা-ও মেনে নেবেন বাধ্য হয়ে। নওয়াজ়ের দলকে রুখতে মরিয়া সেনাবাহিনী প্রথমে অবশ্য চাইবে, তেহরিক-এ-ইনসাফের সঙ্গে ছোট ছোট মুসলিম দল আর নির্দলদের মিলিয়ে সরকার গঠন করে নিতে! তাতে যদি না হয়, শেষ বিকল্প পিপিপি।



গোয়েন্দারা তাই বলছেন, পুরোপুরি সেনাবাহিনীর শাসন বরং ভালো। গণতন্ত্রের নামাবলি জড়িয়ে এক দিকে আমেরিকা, অন্য দিকে সেনা, আইএসআই এবং মোল্লাতন্ত্রের চাপে নড়বড়ে পাক সরকারের সঙ্গে আদান-প্রদান করাটা ভারতের পক্ষেই কূটনৈতিকভাবে জটিল হয়ে যায়!



ভারতে কর্মরত পাক হাইকমিশনার সোহেল মেহমুদ বলেছেন, ‘‘পাক নির্বাচনে ভারত কোনো বিষয় নয়। এ বার ভারতও দেখল, এই ভোটে কোনোভাবেই কাশ্মীর প্রসঙ্গ আসেনি।’’



সব মিলিয়ে গোটা বিষয়টিকে ইতিবাচক বলেই মনে করছে ভারত।


বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী




সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com