শিরোনাম
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০১৮, ১০:৩৭
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

পাকিস্তানে আজ বুধবার ১১তম জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের সময় ধারাবাহিক সন্ত্রাসী হামলা ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের অভিযোগের মধ্যেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।


এ নির্বাচনেও সহিংসতা ঘটতে পারে এবং ফল পাল্টে দেয়ার নানান ধরনের চক্রান্ত ছায়া ফেলতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।


দেশটির স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় দেশজুড়ে একযোগে ভোট শুরু হয়েছে এবং শেষ হবে সন্ধ্যা ৬টায়। প্রায় ১০ কোটি ৬০ লাখ ভোটার ভোট দেবেন। দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ও চারটি প্রদেশের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে জনগণ।


পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বিলির ২৭২ আসনের ভোটে মসনদে বসতে দরকার ১৩৬ আসন। এছাড়া পার্লামেন্টের ৭০টি আসন নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত।


নির্বাচনে ৩০টির বেশি রাজনৈতিক দলের ১২ হাজার ৫৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১৭১ জন নারী প্রার্থী। দেশজুড়ে ৮৫ হাজার ভোট কেন্দ্রে আট লাখের বেশি পুলিশ ও সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।


নির্বাচনে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট অধিনায়ক ইমরান খান জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই আশাবাদী।


মূলত পিটিআই, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এই তিন দলের মধ্যে লড়াইটা হবে। তবে এবার তিন দলের মধ্যে ইমরান খানের পিটিআই জনমত জরিপে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে আছেন। দেশটির রাজনীতিতে নেপথ্যে থাকা প্রভাবশালী শক্তি সেনাবাহিনীও পিটিআই-র পক্ষে বলেও অনেকের ইঙ্গিত।


অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার পালাবদলের আশা করা হলেও উদ্বেগের নানা কারণ বিদ্যমান। গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতার হাতবদল দেশটির ইতিহাসে খুব অল্প সময়েই ঘটেছে।


৭০ বছরের ইতিহাসে দেখা যায়, পাকিস্তানে কখনো আপাতদৃশ্যের গণতন্ত্র এসেছে। আবার পালাবদল করে এসেছে পুরোপুরি সামরিক সরকার। এই দুই ধরণের ব্যবস্থা যেন বারবার পালাবদল করেছে। আর এই প্রক্রিয়ার মাঝে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পাকিস্তানের সাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দ্বন্দ্ব এবং পাকিস্তান হয়ে উঠেছে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয়স্থল।


এবারের নির্বাচন নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, সেটাকে কেউ কেউ ‘গণতান্ত্রিক অভ্যূত্থানের’ ঝুঁকি হিসেবে দেখছেন। সেজন্য বরাবরের মতো এবারো সন্দেহ করা হচ্ছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে।


অতীতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সরাসরি অভ্যূত্থান ঘটিয়েছে, আর তা নাহলে বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটিয়েছে। সেনাবাহিনী বিভিন্ন সময় নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটিয়ে নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় এমন কৌশল নিয়েছে, যেন সেই সরকার আবার ক্ষমতায় আসতে না পারে।


এসব বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার বন্ধ হয়েছিল ২০০৮ সালে। সে কারণে পাকিস্তানে প্রথমবারের মতো একটি নির্বাচিত সরকার ২০১৩ সালে তাদের মেয়াদ শেষ করতে পেরেছিল। এরপর থেকেই আবার পাকিস্তানের গণতন্ত্রের স্রোত উল্টোদিকে বইতে শুরু করেছে।


সমালোচকরা বলছেন, সামরিক প্রশাসন অতীতের মতো এখন আবার পূর্ণ ক্ষমতা ফিরে পেতে পুরোনো কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে।


নির্বাচনের পরিবেশ ও বর্তমান অবস্থা দেখে পাকিস্তানের সাবেক কূটনীতিক হুসেইন হাক্কানি এএফপিকে বলেছেন, নির্বাচনে ফল যা-ই হোক না কেন, ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচন পাকিস্তানে শুধু অস্থিতিশীলতা বাড়াবে। এ নির্বাচন হবে এমন, যাতে আসলে কেউই জিতবে না। সূত্র: বিবিসি ও আল জাজিরা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com