থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে একটি গুহার ভেতর আটকে পড়া কিশোর ফুটবল দলের চারজনকে উদ্ধার করে বাইরে আনা হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে উদ্ধার অভিযান সোমবার সকাল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। এই ফুটবল দল গুহায় ১৬ দিন ধরে আটকে আছে। প্রথমে ধারণা করা হচ্ছিল, এই গুহায় কিশোরের দল মাসব্যাপী থাকতে পারবে। তবে ভারী বৃষ্টির পর গুহার ভেতর পানির উচ্চতা আরো বেড়ে যেতে পারে এমন আশংকায় রবিবারই এই উদ্ধার অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দক্ষ ডুবুরিরা আটকে পড়া কিশোরদের ডুবে যাওয়া সুড়ঙ্গের পানির ভেতর দিয়ে পথ দেখিয়ে গুহার প্রবেশ মুখে নিয়ে আসেন। তাদেরকে গ্রুপে গ্রুপে উদ্ধার করা হচ্ছে। এই উদ্ধার অভিযান শেষ হতে কতদিন সময় লাগবে তা পরিস্কার নয়।
তবে কর্মকর্তারা আগে যা ধারণা করেছিলেন তার চেয়ে অনেক দ্রুত আগাচ্ছে উদ্ধার অভিযান। চার কিশোরকে এ পর্যন্ত বাইরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।
চিকিৎসক পাঠিয়ে আটকে পড়া কিশোরদের অবস্থা উদ্ধার অভিযান শুরুর আগে পরীক্ষা করে দেখা হয়। সবচেয়ে দুর্বল শারীরিক অবস্থা যাদের, তাদের আগে উদ্ধারের সিদ্ধান্ত হয়। এখন প্রশ্ন, কীভাবে চলেছে উদ্ধারকাজ।
থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম গুহার একটি থাম লুয়াং। গুহাটি সাপের মতো প্যাঁচানো। এর ভেতরে অনেক ফাটল আছে, যা উদ্ধারকারীদের জন্য যেকোনো সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে। থাম লুয়াং গুহাটির কোথাও কোথাও ১০ মিটার পর্যন্ত উঁচু, কোথাও কোথাও অত্যন্ত সরু আবার কোথাও কোথাও সেটি পানিতে পূর্ণ হয়ে আছে।
বন্যার পানিতে নিমজ্জিত গুহার যে শুকনো উঁচু জায়গাটিতে দুই সপ্তাহ ধরে দলটি আশ্রয় নিয়ে আছে, তাদের উদ্ধারে ৯০ জন অভিজ্ঞ ডুবুরি কাজ করছেন। দুজন ডুবুরির তত্ত্বাবধানে একেকজন কিশোরকে বের করে আনা হচ্ছে।
গুহার যে জায়গায় এই ছেলেরা আটকে পড়েছে, সেখানে যাওয়া এবং সেখান থেকে আবার গুহামুখ পর্যন্ত ফিরে আসতে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ডুবুরিরও প্রায় ১১ ঘন্টা সময় লাগছে।
এর মধ্যে কিছুটা পথ হাঁটতে হয়, কিছুটা পথ পানির ভেতর দিয়ে হেঁটে আগাতে হয়। অনেক চড়াই-উৎরাই আছে। আর অনেক জায়গা পানিতে ডুবে আছে। সেখানে ডুব সাঁতার ছাড়া উপায় নেই। আর এই পুরো যাত্রাটাই ঘুটঘুটে অন্ধকারে।
প্রত্যেক ছেলেকে পুরো মুখ ঢাকা অক্সিজেন মাস্ক পড়তে হচ্ছে। প্রতিজনের সামনে ও পেছনে দুজন ডুবুরি থাকছে গাইড হিসেবে। এরা তাদের এয়ার সিলিন্ডারও বহন করছে। সবচেয়ে কঠিন অংশটা মাঝামাঝি জায়গায়। এটিকে একটা টি-জাংশন বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। এই জায়গাটা এতটাই সরু যে সেখানে ডুবুরিদের তাদের এয়ার ট্যাংক খুলে ফেলতে হচ্ছে।
এরপর ক্ষণিকের যাত্রাবিরতির জন্য গুহার মধ্যে একটা ক্যাম্প মতো করা হয়েছে। সেখান থেকে বাকিটা পথ পায়ে হেঁটে তাদের গুহামুখে আসতে হচ্ছে। বেরিয়ে আসার পর তাদের সরাসরি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]