শিরোনাম
গ্যাসের খনি পেয়েও অসুখী মোজাম্বিক
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০১৮, ১৬:৪৫
গ্যাসের খনি পেয়েও অসুখী মোজাম্বিক
বিবার্তা ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

আফ্রিকার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় দেশ মোজাম্বিক তাদের উত্তরপশ্চিম উপকূলে ১৮০ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফুট মজুদসম্পন্ন গ্যাসখনি আবিস্কার করে সোনালি এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। ভেবেছিল, এ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে তারাও কাতারের মতো ধনাঢ্য দেশে পরিণত হবে। মোজাম্বিক সরকার ধারণা করেছিল, ২০৩৫ সাল নাগাদ তাদের মাথাপিছু আয় হবে বর্তমানের সাত গুণ।


এমন স্বপ্ন দেখা দোষের কিছু নয়, অস্বাভাবিকও নয়। যেটা দোষের ও অস্বাভাবিক সেটা হলো, মোজাম্বিক নামের দরিদ্র আফ্রিকান দেশটির এ স্বপ্ন দ্রুত ফিকে হতে চলেছে এবং সেটা ওই দেশেরই একদল বিদ্রোহীর অপতৎপরতার কারণে। দক্ষিণ মোজাম্বিকে একের পর এক অভূতপূর্ব সামরিক হামলার ফলে দেশটিতে এমন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে যে, দেশ কি এ বিশাল গ্যাস মজুদের সুফল পুরো মাত্রায় ভোগ করতে পারবে?


মোজাম্বিক সরকার যে অঞ্চলটিকে গ্যাসশিল্পের কেন্দ্রবিন্দুরূপে স্থির করেছে সেখানেই একদল রক্তপিপাসু বিদ্রোহী একের পর এক হামলা চালিয়ে চলেছে। গত বছর অক্টোবর থেকে তাদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ৩০ জনেরও বেশি নিরস্ত্র গ্রামবাসী।


হামলা মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু চোরাগোপ্তা হামলার মুখে এখন পর্যন্ত তাদেরও অসহায় বলেই মনে হচ্ছে। আতঙ্কিত গ্রামবাসীদের অনেকেই ইতিমধ্যে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। ফলে গ্যাস শিল্পের বৃহত্তর সম্প্রসারণ পরিকল্পনাও মুখ থুবড়ে পড়তে চলেছে।


মার্কিন অয়েল অ্যান্ড গ্যাস জায়ান্ট আনাদারকো-ই এ অঞ্চলে গ্যাস আহরণে নিয়োজিত সবচাইতে বড় কম্পানি। তারা এ পর্যন্ত এখানে ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে, তাদের পরিকল্পনা হচ্ছে, গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মেয়াদ থাকা পর্যন্ত তারা এখানে ২,০০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে।


এত বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগের পরিকল্পনা সত্ত্বেও গত ৮ জুন মার্কিন দূতাবাসের এক সতর্কবার্তার পর নড়েচড়ে বসেছে কম্পানিটি। ওই বার্তায় মার্কিন দূতাবাস আভাস দিয়েছিল যে, শিগগিরই পলমা আঞ্চলিক গ্যাস হাবে হামলা হতে পারে। এ বার্তা পেয়েই আনাদারকো কম্পানি তাদের কিছু কার্যক্রম স্থগিত করে এবং কর্মরত শ্রমিক ও ঠিকাদারদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়।


একই অবস্থা কানাডার ওয়েন্টওয়র্থ রিসোর্সেসেরও। নিরাপত্তার কারণে তারা তাদের প্রকল্পগুলো চালু করতেই গড়িমসি করছে। গ্যাস আহরণ কাজ শুরু করার জন্য তারা আরো এক বছরের মতো সময় চাইছে।


ওয়েন্টওয়র্থ রিসোর্সেস বলেছে, এ অঞ্চলে গত অক্টোবর থেকে ১০ বারেরও বেশি হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা গ্রামবাসী ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, কারো বা মাথা কেটে নিয়েছে। অবশ্য ওরা একবারও গ্যাস কম্পানিকে হামলার টার্গেট করেনি। কিন্তু হামলার কারণে কম্পানির কর্মী ও ঠিকাদাররা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।


দেশের প্রধান বিরোধী দল রেনামো পার্টির অনুগত মিলিশিয়ারাই এ হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সূত্র : আরব নিউজ


বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com