শিরোনাম
রাখাইনে গণহত্যায় জড়িত আরসাও: অ্যামনেস্টি
প্রকাশ : ২৩ মে ২০১৮, ১০:২০
রাখাইনে গণহত্যায় জড়িত আরসাও: অ্যামনেস্টি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) গত বছরের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযানের সময় শিশুসহ অন্তত ৯৯ জন হিন্দু নাগরিককে হত্যা করেছে বলে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।


আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, সম্ভবত একটি অথবা দুটি গণহত্যা চালিয়ে ওই হিন্দু নাগরিকদের হত্যা করে আরসা। তবে আরসা এর সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছে এবং সংগঠনটি গত চার মাস ধরে নিস্ক্রিয় রয়েছে।


রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর প্রথমদিকেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ও সেনা চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের উপর দমন অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তাদের নির্বিচার হত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মুখে কয়েক মাসের মধ্যে পালিয়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়।


সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ও রাখাইনে থাকা রোহিঙ্গারা নিশ্চিত করেছে উত্তরাঞ্চলীয় মংডু শহরের আশেপাশের গ্রামে হিন্দু জনগোষ্ঠীর এসব রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে আরসা।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট সকাল ৮টার দিকে রাখাইনের মংডুর উত্তরাঞ্চলের আহ নুক খা মং সেইক গ্রামে হিন্দুদের ওপর চড়াও হয় আরসা সদস্যরা। কালো পোশাকের সশস্ত্র লোকজনের সঙ্গে সাধারণ পোশাকের স্থানীয় রোহিঙ্গা গ্রামবাসী মিলে হিন্দু নারী, পুরুষ ও শিশুদের ঘিরে ফেলে। তারা ঘর-বাড়ি লুটের পর ৫৩ জন হিন্দুকে চোখ বেঁধে গ্রামের বাইরে নিয়ে হত্যা করে।


প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, আরসা যোদ্ধাদের চাপে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে রাজি হওয়ায় আট নারী ও তাদের আট শিশু সন্তানকে তুলে নেয়ার পর মুক্তি দেয়া হয়।



অ্যামনেস্টি বলছে, বেশ কয়েক দিন পরে আরসা যোদ্ধাদের সঙ্গে ওই হিন্দু বন্দিরা বাংলাদেশে সীমান্তে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। পরে তারা আবার মিয়ানমারে ফেরত যান। এছাড়া অন্যান্য এলাকাতেও স্বল্প পরিসরে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যায় জড়িত রয়েছে আরসা।


আহ নাউক খা মং সেইক গ্রামের এক নারী বলেছেন, তারা আমাদের পুরুষদের যখন হত্যা করছিল তখন আমাদের সেদিকে না তাকাতে বলা হয়েছিল। তাদের হাতে ছোরা, কোদাল আর লোহার রডও ছিল। আমরা ঝোঁপের আড়ালে লুকিয়ে থেকে অল্প দেখতে পাচ্ছিলাম...আমার চাচা, বাবা, ভাই সবাইকে হত্যা করা হয়।


আরসা সদস্যদের বিরুদ্ধে ২০ জন পুরুষ, ১০ নারী ২৩ শিশুকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এসব শিশুদের ১৪ জনের বয়স আট বছরের নিচে।


অ্যামনেস্টি বলেছে, সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে চারটি গণকবর থেকে ৪৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে পাশের ইয়ে বাউক কিয়ার গ্রামে আরসার হাতে নিহত হওয়া অপর ৪৬ হিন্দু রোহিঙ্গার মরদেহের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।


প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইয়ে বাউক কিয়ার গ্রামে এসব রোহিঙ্গার হত্যাকাণ্ড একই দিনে সংগঠিত হয়েছিল। আর এই সংখ্যা নিয়ে মোট হত্যাকাণ্ডের শিকারের সংখ্যা ৯৯ জন।


গণকবর ও মরদেহগুলো দেখতে সাংবাদিকদের ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে আহ নাউক খা মং সেইক ও ইয়ে বাউক কিয়ার গ্রামে প্রকৃতপক্ষে কি হয়েছিল তা তদন্তে স্বাধীন মানবাধিকার গবেষকদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি মিয়ানমার সরকার। সূত্র: বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com