শিরোনাম
লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসার
প্রকাশ : ০৮ জানুয়ারি ২০১৮, ১০:২০
লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরসার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভ্যাশন আর্মি (আরসা) লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানিয়েছেছে, তারা শুক্রবার দেশটির সামরিক বাহিনীর উপর আরো একটি হামলা চালিয়েছে।


উত্তর রাখাইনের মংডু এলাকার একটি গ্রামে চালানো চোরাগোপ্তা এই হামলায় তিনজন আহত হয়েছে বলে তারা দাবি করেছে। বিদ্রোহীরা এই হামলার কৃতিত্ব দাবি করলেও এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।


গত বছরের ২৪ আগস্ট রাতে একযোগে মিয়ানমারের ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় এই গোষ্ঠী। এরপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে সাড়ে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সেনাবাহিনীর ওই অভিযান শুরুর পর অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল আরসা। এরপর প্রায় চার মাস তাদের আর কোনো খবর ছিল না।


আরসা রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখায় সামরিক বাহিনীর উপর তারা সবশেষ এই হামলাটি চালিয়েছে। সেনাবাহিনীর উপর আরো হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়ে এই রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের হামলা চালানো ছাড়া তাদের কাছে আর কোনো বিকল্প নেই।


আরসা বলেছে, দেশটির নেত্রী আউং সান সুচি রাখাইনে সামরিক অভিযান বন্ধের আশ্বাস দেয়া সত্ত্বেও রোহিঙ্গাদের উপর সেনাবাহিনীর নিপীড়ন নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে।


এই সশস্ত্র সংগঠনের নেতা আতা উল্লাহ রবিবার এক টুইটে হামলার দায় স্বীকার করে বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে রক্ষা, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ‘বার্মিজ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই। মানবিক প্রয়োজন ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনার জন্য রোহিঙ্গাদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।


বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা জনাথন হেড বলছেন, আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার কারণে আরসা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তখনই তাদের পক্ষ থেকে অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয়া হয়। তবে শুক্রবার সৈন্যদের বহনকারী গাড়িতে হামলা চালানোর ঘটনা প্রমাণ করছে যে এখনো কিছু রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সেখানে রয়ে গেছে।


মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে এই হামলার বিষয়ে বলা হয়, একদল সশস্ত্র জঙ্গি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রোগীদের বহনকারী সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে হামলা চালায়। এতে দু'জন সৈন্য এবং একজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়।


মিয়ানমার সরকারের তরফ থেকে তাদেরকে সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করা হলেও দেশটির সেনাবাহিনী তাদেরকে আরসা বলে উল্লেখ করেছে।
কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, সেখানে বোমা হামলাও হয়েছে। আবার কোথাও বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর গাড়িটি ল্যান্ড মাইনের উপর পড়ে গেলে বোমাটি বিস্ফোরিত হয় এবং তখন একদল সশস্ত্র জঙ্গি তাদের উপর হামলা চালায়।


আরসার নেতা পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত রোহিঙ্গা আতা উল্লাহ আগস্ট মাসে কতোগুলো ভিডিও পোস্ট করেছেন। এতে দাবি করা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের আত্মরক্ষায় এসব হামলা চালানো হয়েছে। সামরিক বাহিনীর নিপীড়নের হাত থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্ষা করতেই তাদের এই যুদ্ধ এবং তাদের এই লড়াই বৈধ। সূত্র: বিবিসি


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com