মিয়ানমার সফরের সময় রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ না করার ব্যাখ্যা দিয়েছেন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।
তিন দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে শনিবার রোমের পথে বাংলাদেশ ছাড়ার পর উড়োজাহাজে তিনি সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের কাছে রোহিঙ্গা শব্দটি না উচ্চরণের কারণ জানিয়েছেন।
পোপ ফ্রান্সিস মনে করেন, মিয়ানমার সফরে রোহিঙ্গা শব্দটি এড়িয়ে গেলেও আলোচনার পথ বন্ধ করে না দিয়ে দেশটির সরকার ও সামরিক বাহিনীর কাছে তিনি আসল বার্তাটি ঠিকই পৌঁছে দিতে পেরেছেন।
মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর বিষয়টি দৃঢ়তার সঙ্গেই তুলে ধরেছেন বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
পোপ বলেন, আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বার্তাটি ঠিকভাবে পৌঁছে দেয়া। একটি বিষয়ে কথা বলা এবং অন্যপক্ষের জবাব শোনা।
তিনি বলেন, আমি যদি বক্তৃতায় ওই শব্দটি ব্যবহার করতাম, তারা হয়ত আলোচনার পথ আমার মুখের ওপরই বন্ধ করে দিত। প্রকাশ্যে বক্তৃতায় আমি পরিস্থিতিটা তুলে ধরেছি, অধিকারের বিষয়গুলো সামনে এনেছি এবং বলেছি, নাগরিকত্বের অধিকার থেকে কাউকেই বঞ্চিত করা উচিৎ নয়। এটা করতে হয়েছে, যাতে একান্ত বৈঠকে আমি আরো কিছু বলতে পারি।
মিয়ানমারে দেয়া ভাষণে পোপ সম্প্রীতির ডাক দিয়ে প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীকে সম্মান দেখানোর আহ্বান জানালেও রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি।
বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশ মিয়ানমার সফরের আগেই স্থানীয় ক্যাথলিক চার্চ কর্তৃপক্ষ পোপকে অনুরোধ জানিয়েছিল, তিনি যেন তার বক্তৃতায় রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার না করেন। তাদের আশঙ্কা ছিল, পোপের মুখ থেকে ওই শব্দটি এলে মিয়ানমারের খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর নতুন করে সহিংসতা শুরু হতে পারে।
মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ইয়াঙ্গুনে পৌঁছানোর পরপরই সোমবার দেশটির সেনাপ্রধানের সাথে একান্ত বৈঠক করেন পোপ। তবে বৈঠকটি বৃহস্পতিবার সকালে হওয়ার কথা ছিল।
ওই বৈঠকের বিষয়ে পোপ বলেন, মিয়ানমারের সেনা নেতৃত্বের সাথে তার আলোচনা ভালো হয়েছে এবং সত্য প্রকাশে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই।
ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, যে বার্তা আমি দিতে চেয়েছি সেজন্য প্রয়োজনীয় শব্দই আমি ব্যবহার করেছি। যখন বুঝলাম, আমার বার্তা তাদের কাছে পৌঁছেছে, তখন আমার যা যা বলার ছিল সবকিছুই বলার সাহস পেলাম।
পোপ সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকায় শুক্রবার সন্ধ্যায় রোহিঙ্গাদের তিনটি পরিবারের কাছ থেকে তাদের দুর্দশার কথা শুনে তিনি কেঁদে ফেলেন এবং তা লুকাতে চেয়েছিলেন।
ওই অনুষ্ঠানেই পোপ এশিয়া সফরে প্রথমবারের মত রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ঈশ্বরের উপস্থিতি রোহিঙ্গাদের মধ্যেও বিরাজ করছে। সূত্র: রয়টার্স
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]