সেই ২১০২ সালের কথা। সে বছর মার্কিন-কানাডীয় দম্পতি জসোয়া বয়েল ও তার স্ত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তালেবান জঙ্গিরা। গত বুধবারই পাকিস্তানি সেনাদের অভিযানের পর মুক্তি পেয়েছেন পাঁচ বছরের বিশাল বন্দি জীবন থেকে।
গতকাল শনিবার টরন্টো বিমানবন্দরে নেমে পাঁচ বছর ধরে বন্দিজীবনের কাহিনি শোনাচ্ছিলেন হতভাগ্য জসোয়া। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিভৎস কাহিনী শোনাতে গিয়ে তিনি জানান, চোখের সামনেই জঙ্গিরা হত্যা করে তার একমাত্র ছোট্ট মেয়েটিকে। ধর্ষণ করে তার স্ত্রীকে।
গত বুধবার আফগানিস্তান সীমান্তের কাছ থেকে ওই দম্পতি এবং তাদের তিন সন্তানকে উদ্ধার করেছে পাকিস্তান সেনা। শনিবার সপরিবারে কানাডায় আসেন। বিমানবন্দরে নামার পরে তাদের স্বাগত জানিয়েছে কানাডা সরকার। সরকারি তরফে মিলেছে সব রকম সাহায্যেরও আশ্বাসও।
বিমানবন্দরে চোখে মুখে পাঁচ বছরের বিশাল ক্লান্তির চাপ রেখেই তিনি জানালেন, ২০১২ সালে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন আফগানিস্তানে। সেখানে তালেবান অধ্যুষিত এক প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছেছিলেন তারা। যে গ্রামে পৌঁছতে পারে না কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এমনকী সরকারি সাহায্যও সেখানে পৌঁছায় না। সেই গ্রামের মানুষকে সাহায্য করতেই গিয়েছিলেন ওই দম্পতি। সেখান থেকেই তাদের অপহরণ করে বন্দি করেছিল জঙ্গিরা।
বন্দি অবস্থায় জন্ম নেয়া কন্যা শিশুকে হত্যা, স্ত্রীকে ধর্ষণসহ তালেবানের বিভৎসতার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বন্দি অবস্থাতেই জন্ম হয়েছিল আমাদের সন্তানদের। এরপর ২০১৪ সালে ওই জঙ্গিরা আমাদের সামনেই মেরে ফেলে এক কন্যাসন্তানকে। ওই বছরেই আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়।’
মার্কিন সেনাবাহিনী জানায়, বয়েল পরিবারকে দেশে ফেরানোর জন্য বুধবারই পাকিস্তান উড়ে গিয়েছিল একটি মার্কিন দল। সেখানে তাদের শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে বিমানে তোলার তোড়জোড় চলছিল। সেই সময়ে জোশুয়া ওই উড়ানে ফিরতে অস্বীকার করেন।
তার বাবার বক্তব্য, ‘ওই বিমানটির ফেরার কথা ছিল আফগানিস্তানের বাগরাম বায়ু-সেনা ঘাঁটি হয়ে। কিন্তু ওরা এতটাই আতঙ্কে ছিল যে, সরাসরি কোনও উড়ানে ফিরতে চেয়েছিল।'
বিবার্তা/ইমদাদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]