শিরোনাম
লড়তে রাজি রোহিঙ্গারা
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:০৮
লড়তে রাজি রোহিঙ্গারা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি আর্মির (এআরএসএ) বার্তায় উজ্জীবিত হচ্ছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। তাঁরা বলছেন, সুযোগ পেলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে রাজি তাঁরা। এরকম অনেকের সঙ্গে কথা বলেছে জার্মান বেতার ডয়চে ভেলে। নিচে ডয়চে ভেলে'র প্রতিবেদন :


দুই সপ্তাহ আগে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন আইয়ুব (২০)। কিন্তু এখানকার অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী মতো তিনিও চান না কেবলই শরণার্থী হয়ে থাকতে, বরং চান নিজ দেশে ফিরে গিয়ে এআরএসএ-তে যোগ দিতে।


মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ছে এআরএসএ। আইয়ুবও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে লড়তে চান। কারণ, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে দেশছাড়া করেছে। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এআরএসএ যদি আমাকে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয় এবং অস্ত্র দেয়, আমি অবশ্যই তাদের সঙ্গে যোগ দেবো।’’


কেবল আইয়ুব নন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকেই বললেন, মিয়ানমারের বর্বর সেনাবাহিনীকে উপযুক্ত জবাব দেয়ার এটাই সঠিক সময়। আইয়ুব আরও বললেন, ‘‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে আমাদের শোষণ করে চলেছে। তাই এআরএসএ'র প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ যে, তাঁরা আমাদের রক্ষায় এবং আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করছে। আমি আমার সম্প্রদায়কে বাঁচানোর জন্য লড়াই করতে চাই।


সহিংসতার বিরুদ্ধে পাল্টা সহিংসতা


গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ৩০টি থানা ও পুলিশফাঁড়িতে হামলা চালায়। তাতে ১২ জন নিহত হয়। এর পরই রাখাইন রাজ্যে ''অভিযান'' শুরু করে সেনাবাহিনী - জ্বালিয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম, হত্যা ও নির্যাতন চালানো হয় রোহিঙ্গাদের উপর, ধর্ষণ করে নারীদের। শরণার্থীদের মুখে এসব ঘটনার বিভৎস বর্ণনা শুনেছেন ডয়চে ভেলের প্রতিবেদক।


এমনই একজন শরণার্থী সদু মিয়া জানালেন, সেনাবাহিনী একটি গ্রামের সব তরুণকে ধরে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি তখন জঙ্গলেই এক জায়গায় লুকিয়ে ছিলেন। রাত নামলে তিনি জীবিতদের খোঁজে বের হন - ভাগ্য গুণে যদি তরুণদের কেউ বেঁচে গিয়ে থাকে! কিন্তু তেমন কাউকে পাননি।


এসব কথা যখন বলছিলেন সদু মিয়া, তাঁর চোখে তখন জ্বলছিল ক্ষোভের আগুন। জানালেন, ফিরে গিয়ে বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগ দিতে প্রস্তুত তিনি।


সদু মিয়াসহ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বেশিরভাগই পেশায় কৃষক ও জেলে। কিন্তু প্রশিক্ষণ পেলে তাঁরা যুদ্ধে যেতে প্রস্তুত।


জঙ্গি নাকি মুক্তিযোদ্ধা


ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বা আইসিজি'র তথ্য অনুযায়ী, এআরএসএ বিদ্রোহী নেতাদের সবাই রোহিঙ্গা। তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদা বা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কোনো যোগসূত্র নেই। ভিডিও বার্তায় এআরএসএ'র বিদ্রোহীরা জানিয়েছেন, তারা জঙ্গি নন, তারা যোদ্ধা, যারা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা এবং তাদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com