রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ‘দীর্ঘ’ নীরবতা ভেঙে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি। তার ওই ভাষণ নিয়ে অনেকের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও, ভাষণের পর অনেকে অভিযোগ করছেন, সু চি বাস্তবতা এড়িয়ে গেছেন। ইতিমধ্যে সু চির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে এ বক্তব্যকে সেনাবাহিনীর বক্তব্য বলে আখ্যায়িত করেছেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতারা।
তার ভাষণের সমালোচনা আসতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকেও। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সু চিকে ফোন করে বলেন, তার বক্তব্যকে তিনি স্বাগত জানাচ্ছেন যে শরণার্থীদের যাচাই করে ফিরিয়ে নেয়া হবে। কিন্তু তিনি একই সাথে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার দিকেও নজর দিতে বলেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেন, রাখাইনে সামরিক অভিযান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। মানবিক সহায়তার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। জাতিগত নিধন বন্ধে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন, সহিংসতা বন্ধ করে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য তারা নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে একটি উদ্যোগ নেবেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেসও সামরিক অভিযান বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ক্ষোভের দিকে দৃষ্টি দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেফ এরদোয়ান সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যতক্ষণ না পর্যন্ত মিয়ানমারের ট্রাজেডির অবসান না হয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একজন মুখপাত্র বলেন, আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের মিয়ানমার পরিদর্শনে যে আহ্বান জানিয়েছেন সু চি; তা এক ধাপ অগ্রগতি। কারণ আগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী তেরেজা মেও রাখাইনে সামরিক অভিযান বন্ধ করার কথাই বলছেন। আর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সু চির সমালোচনা করে বলেছে, তিনি বালিতে মাথা গুঁজে আছেন।
মঙ্গলবারের ভাষণে সু চি রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা করেছেন কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিষয়ে কিছু বলেননি। অথচ রাখাইনে ভয়াবহ নির্যাতনের জন্য সেনাবাহিনীকেই দায়ী করছে রোহিঙ্গারা।
আগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশে আসতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে শতাধিক রোহিঙ্গার, আবার অনেকে এসেছেন যারা গুলিতে আহত হয়েছেন কিংবা বয়ে এনেছেন নিজের অগ্নিদগ্ধ শরীর। অথচ সু চি বলেন, অধিকাংশ মুসলিমই রাখাইনে অবস্থান করছে। তিনি মুসলিমরা সেখান থেকে কেন পালাচ্ছে, তা খুঁজে বের করার কথাও বলেছেন।
বিবার্তা/নিশি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]