শিরোনাম
রাখাইনে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে না: মিয়ানমার
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:৩৫
রাখাইনে ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে না: মিয়ানমার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

রাখাইন রাজ্যে ত্রাণকর্মীদের ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ্য হতে। শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে তিনি এ দাবি করেন। তবে নিরাপত্তা বিবেচনায় সেখানে প্রবেশাধিকার সীমিত রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

 

জ্য হতে বলেন, আমরা কোনো সংগঠনকে ওইসব এলাকায় ত্রাণ পাঠাতে বাধা দিচ্ছি না। তবে নিরাপত্তার কারণে স্থানীয় প্রশাসন সেখানে প্রবেশ সীমিত রাখায় সে সব এলাকায় ঢোকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

মিয়ানমারের সমাজকল্যান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী উইন মিয়াত আইয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত সংঘাতময় এলাকায় বিদেশি কোনো ত্রাণ সংস্থা প্রবেশ করেনি। তবে এ ধরনের কোনো সংস্থাকে প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে কিনা না এমন প্রশ্নে জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।

 

এদিকে, সম্প্রতি ফ্রান্সভিত্তিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা মিতস সঁ ফ্রঁতিয়ে কর্তৃপক্ষ রাখাইনে তাদের ক্লিনিক পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানায়। মিয়ানমার সরকারের অভিযোগ, কয়েকটি ত্রাণ সংস্থা জঙ্গিদের খাবার সরবরাহ করছে। 

 

গত ২৪ আগস্ট রাতে বিদ্রোহী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) রাখাইনের মং তাও এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ২৪টি পুলিশ স্টেশনে হামলা চালায়। তারা সেনা ঘাঁটি ও সীমান্ত চৌকিতেও হামলা চালায়। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের এ হামলার পর নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হয়।

 

রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রাম জ্বালাও-পোড়াও, হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমার সেনার বিরুদ্ধে। এ সেনা অভিযানে নারী ও শিশুসহ অসংখ্য রোহিঙ্গা নিহত হয়। জীবন বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে বাংলাদেশ সীমান্তে শরণার্থীদের ঢল নামে। ইতিমধ্যে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে ধারণা জাতিসংঘের।

 

অবশ্য, মিয়ানমার সরকারের দাবি, সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে এআরএসএ জঙ্গি দমন অভিযান চলাচ্ছে এবং বেসামরিক লোকজন তাদের লক্ষ্য নয়।

 

তবে স্যাটেলাইট থেকে তোলা রাখাইন রাজ্যের ছবি বিশ্লেষণ করে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী পরিকল্পিতভাবে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিচ্ছে। রাজ্যটিতে গত তিন সপ্তাহে ৮০টিরও বেশি স্থানে বিশাল এলাকা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

 

স্যাটেলাইটে তোলা ছবি, স্যাটেলাইটে আগুন সনাক্ত করতে পারে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং ওই অঞ্চল থেকে পাওয়া ছবি ও মানুষের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে অ্যামনেস্টি জানায়, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এমন সংঘবদ্ধ দলগুলো একসাথে মিলে এই জ্বালাও-পোড়াও চালাচ্ছে। তারা গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে এবং পলায়নপর মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে।

 

এদিকে, গত শনিবার একতরফাভাবে এক মাসের জন্য অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয় এআরএসএ। তারা জানায়, সেনা অভিযানে সৃষ্ট মানবিক সংকট থেকে উত্তরণে ত্রাণ সহায়তাকারী সংস্থাগুলোকে কাজ করার সুযোগ দিতে রবিবার থেকে তারা এক মাসের অস্ত্রবিরতিতে যাচ্ছে। তারা আশা করছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও সেখানে অস্ত্রবিরতি করবে। তবে, মিয়ানমার সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, তারা জঙ্গিদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপে যাবে না।

 

বিবার্তা/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com