শক্তিশালী চার আরব প্রতিবেশীর দেয়া অবরোধ শিথিলের উদ্দেশ্যে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। তবে যেকোনো সমাধানই কাতারের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাপূর্ণ হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সংকট শুরুর পর প্রথম দেয়া ভাষণে কাতারের আমির দেশটির বিরুদ্ধে কলুষিত অপবাদের প্রচারণার নিন্দা জানান এবং দেশটির জনগণের সহ্যশক্তির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কাতারের জীবনযাত্রা স্বাভাবিকভাবেই চলছে। বরং সৌদি জোটের চলমান অবরোধ তার দেশের জন্য বড় সুযোগ বয়ে এনেছে। দেশের জনগণ ও সর্বস্তরে ঐক্য আরো সুদৃঢ় হয়েছে।

তবে টেলিভিশনে দেয়া ওই বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সরকারের মধ্যে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের দ্বন্দ্ব থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্ত করার সময় এসেছে। যতক্ষণ কাতারের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা হবে; আমরা আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান করতে আগ্রহী।’

সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগ তুলে গত মাসের শুরুতে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশ কাতারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। অবশ্য, কাতার তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এই সংকটে কাতারের পাশে দাঁড়িয়েছে ইরান ও তুরস্ক। ওই দুই দেশ কাতারে খাদ্য পাঠিয়েছে। এছাড়া, শক্তি প্রদর্শনের জন্য সেনা ও সামরিক যান পাঠিয়েছে তুরস্ক।

চারটি আরব দেশের অবরোধের কারণে গ্যাসসমৃদ্ধ দেশ কাতার তাদের ২৭ লাখ মানুষের জন্য সমুদ্র এবং আকাশপথে খাদ্য আমদানি করতে বাধ্য হচ্ছে।

পরে কাতার সংকট সমাধানে ১৩টি শর্ত দেয় দোহার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা চারটি আরব দেশ। এসব শর্তের মধ্যে আল-জাজিরা টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া এবং ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাসের কথাও আছে। এছাড়া, কাতারে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি বন্ধ এবং দেশটিতে অবস্থান করা ওই চার দেশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের হস্তান্তরেরও দাবি জানানো হয়।

এসব শর্ত মেনে নিতে ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। সেই সময়সীমা শেষ হলে শর্ত মেনে নিতে দোহাকে আরো ৪৮ ঘণ্টা সময় দেয় সৌদি আরব। তবে এসব শর্তের একটিও মেনে নেয়নি কাতার।

পরে গত মঙ্গলবার জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আল-মুয়াল্লিমি সাংবাদিকদের জানান, সংকট নিরসনের জন্য কাতারকে নতুন ছয়টি শর্তের তালিকা দিয়েছে সৌদি আরব ও তার তিন মিত্র দেশ- আমিরাত, বাহরাইন, মিসর। কায়রো বৈঠকে চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এসব শর্ত দেন। সূত্র: বিবিসি ও আল-জাজিরা 

বিবার্তা/নিশি