শিরোনাম
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানে মমতাই দায়ী!
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০১৭, ১৬:১১
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানে মমতাই দায়ী!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ধীরে হলেও উত্থান ঘটছে হিন্দু মৌলবাদী বিজেপির। এ অবস্থায় বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ। তার জবাবে বিরোধী রাজনীতিকরা বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-বিরোধী শক্তিকে দুর্বল করেছেন খোদ মমতাই। এ নিয়ে রিপোর্ট করেছে জার্মান বেতার ডয়চে ভেলে।


বসিরহাট কাণ্ডের পর আর বিজেপিকে খালি জমি ছেড়ে দেয়ার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সম্প্রতি ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ভোট দিতে যখন বিধানসভায় জড়ো হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী বামফ্রন্ট ও জাতীয় কংগ্রেসের বিধায়করা, স্পিকারের ঘরে তাঁদের বৈঠকে ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরিই বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে আটকাতে হবে, আর তার জন্যে দরকার ঐক্যবদ্ধ লড়াই।


সব বিজেপি-বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে যে তিনি আগ্রহী, সেকথা জানান মমতা। কিন্তু বিরোধীরা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর এই ডাকে সেভাবে সাড়া দিচ্ছেন না। বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা, সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী কিছুটা শ্লেষের সুরেই বললেন, মমতা যে বিরোধীদের মতকেও গুরুত্ব দেবেন, দিচ্ছেন, তা কিন্তু তাঁর শরীরের ভাষায় বোঝা যাচ্ছে না!‌ তাছাড়া সাম্প্রতিক অতীতেও মমতা ব্যানার্জি এবং তাঁর দল নানা সময়, দরকারে-অদরকারে বিজেপির পাশে দাঁড়িয়েছে, বিশেষত জাতীয় স্তরে। এই অবস্থায় তিনি যদি ঐক্যবদ্ধ বিজেপি-বিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন, তা বিশ্বাসযোগ্য হয় না।


উল্টোদিকে অনেকেই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অতিমাত্রায় মুসলিমতোষণই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানের কারণ। সে অভিযোগেও প্রকারান্তরে সায় জানালেন সুজন চক্রবর্তী। বললেন, ‘‘ইনশাল্লাহ দিয়ে ভাষণ শুরু করার অকারণ রাজনীতির একটা ক্ষতিকর প্রভাব তো পড়েইছে। এটা পুরোপুরিই ভোটের রাজনীতি, সুবিধাবাদী রাজনীতি, যা এই তোষণের অভিযোগ তুলতে লোককে বাধ্য করেছে৷''


বসিরহাটে সাম্প্রদায়িক হাঙ্গামার পর রাজ্যের অনেক মানুষ এ কথাও বলছেন যে, বামফ্রন্ট আমলে হিন্দু-মুসলমান বিভাজন এত প্রকট ছিল না। এভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ কখনও ছড়ায়নি রাজ্যে। সেক্ষেত্রে চলতি পরিস্থিতি কি বামেদের আরও সদর্থক এবং সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলছে না?‌


সুজন চক্রবর্তী জানালেন, তাঁরা দলের নেতা ও সাংসদ মহম্মদ সেলিমের উদ্যোগ ও নেতৃত্বে বাদুড়িয়া ও বসিরহাট যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রশাসন ও পুলিশ তাঁদের রাস্তা আটকায়।ঐক্যবদ্ধ মিছিলের প্রস্তাবও তাঁরা দিয়েছিলেন। তাতেও ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস কোনো সাড়া দেয়নি। তবে তার মধ্যেও একটা ব্যাপার ঘটেছে, যা সংবাদমাধ্যমে সেভাবে প্রচার পায়নি। বসিরহাট ও সংলগ্ন এলাকায় যে-ক'টি পঞ্চায়েত বামেদের দখলে আছে, সেখানে দুই ধর্মের মানুষকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে, শান্তি মিছিল হয়েছে। সেসব জায়গায় অশান্তি ছড়াতে দেয়া হয়নি।


আর মমতা ব্যানার্জির যৌথ বিজেপি-বিরোধী আন্দোলনের ডাক সম্পর্কে কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া হলো, তৃণমূল কংগ্রেসের পথ নিষ্কণ্টক রাখতে গিয়ে, বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দুর্বল থেকে দুর্বলতর করতে গিয়ে সবথেকে বড় ক্ষতিটা উনিই করেছেন। গত কয়েক বছরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কংগ্রেস থেকে নেতা-কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তৃণমূল নেত্রীর অজুহাত, কেউ যদি স্বেচ্ছায় দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন, তা হলে তাঁর কী-ই বা করার থাকতে পারে!‌ কিন্তু ঘটনা হলো, প্রতিপক্ষ দলকে দুর্বল করতে গিয়ে মমতা এভাবেই বিজেপির আসার রাস্তা বানিয়ে দিয়েছেন, এখন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিলে কী হবে!‌


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com