ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দেশটির দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসহ ৩২টি রাজ্যের বিধানসভা ও দিল্লির সংসদ ভবনে ভোটগ্রহণ চলছে। সোমবার সকাল ১০টায় শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
রাষ্ট্রপতি ভবন রাইসিনা হিলসে প্রণব মুখার্জির পর কে পা রাখবেন, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে এই ভোটে। এবার ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দৌড়ে রয়েছেন দুই দলিত প্রার্থী। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবিরের প্রার্থী হলেন দলিত সম্প্রদায়ের রামনাথ কোবিন্দ। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন বিরোধী শিবিরের আরেক দলিত প্রার্থী হলেন মীরা কুমার।
দেশটির রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন-১৯৫২ অনুসারে, এই ভোটে প্রতিটি রাজ্যের নির্বাচিত বিধায়ক ও সংসদের দুই কক্ষের নির্বাচিত সদস্যরাই অংশ নেবেন। তবে মনোনীত সাংসদ (শচীন তেন্ডুলকর) বা রাজ্যগুলোর বিধানসভায় মনোনীত বিধায়কদের এখানে কোনো ভোটাধিকার নেই। এছাড়া, এই নির্বাচনে কোনো প্রতীক থাকে না। আসন্ন নির্বাচনের ব্যালটে এ দুই প্রার্থীরই নাম রয়েছে।
ভোট দেবেন পশ্চিমবঙ্গের ২৯৪ জন বিধায়কও। পাশাপাশি ভোট দেবেন রাজ্যটির লোকসভার ৩১ জন সাংসদ ও ১১ জন রাজ্যসভার সাংসদ। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে বিধানসভাকে। বিধানসভা কক্ষে ভোটদান ভিডিও করায় সংবাদমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন।
অন্যান্য নির্বাচনের থেকে ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পূর্ণ আলাদা। দেশের নাগরিকদের প্রতিনিধি হিসেবে নিজের ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন সাংসদ ও বিধায়করা। তবে কজন সাংসদ বা বিধায়কের ভোট রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী পেলেন তার ওপর নয়, ফলাফল নির্ভর করবে কে কত মূল্যের ভোট পেলেন।
কোনো রাজ্যের বিধায়কের ভোটমূল্য নির্ভর করে সেই রাজ্যের জনসংখ্যার ওপর। সেই রাজ্যের জনসংখ্যাকে বিধায়ক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে যে ভাগফল পাওয়া যাবে, সেটাই ওই রাজ্যের বিধায়কের ভোটের মূল্য। তবে এক্ষেত্রে একটি পূর্বনির্ধারিত নিয়ম রয়েছে।
১৯৭১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, প্রতিটি রাজ্যের জনসংখ্যা যা ছিল, সেই সংখ্যাকেই এখনো রাজ্যের জনসংখ্যা হিসেবে ধরে নির্বাচিত বিধায়ক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। ২০২৬ সাল পর্যন্ত এই পন্থায় চলবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।
এবার আসা যাক, সাংসদদের ভোটমূল্যে। বিধায়কদের মোট ভোটের মূল্যের সমান হতে হবে সাংসদদের মোট ভোটমূল্য। সাংসদদের মোট ভোটমূল্যকে দেশের মোট সাংসদ সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলেই পাওয়া যাবে প্রতি সাংসদের ভোটের মূল্য।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য দেশটির মোট ৪১২০ জন বিধায়ক এবং ৭৭৬ জন সাংসদ মিলিয়ে মোট ভোটমূল্য দাঁড়ায় ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮২। বিধায়ক ও সংসদ সদস্যের মোট ভোটমূল্যের অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ পাঁচ লাখ ৪৯ হাজার ৪৪২টি ভোট পেলেই রাইসিনা হিলসে প্রবেশাধিকার মিলবে। রামনাথ কোবিন্দ ও মীরা কুমার- দু’জনের যে এই লক্ষ্যমাত্রা ছোঁবেন, আগামী পাঁচ বছর রাইসিনা হিলসে চলবে তারই রাজত্ব।
বিবার্তা/নিশি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]