যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর দুই সপ্তাহও বাকি নেই। তার আগেই বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয়েছে আগাম ভোট। এখন পর্যন্ত ৭৩ লাখেরও বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আগাম ভোটে বিভিন্ন রাজ্যে প্রার্থীদের অবস্থান সম্পর্কেও তথ্য আসতে শুরু করেছে।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগাম ভোটে এগিয়ে আছেন ডেমোক্রেটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। বেশ কয়েকটি সুইং স্টেটে তার শক্তিশালী অবস্থান দেখা যাচ্ছে। নর্থ ক্যারোলাইনা, নেভাদা বা অ্যারিজোনার মতো রাজ্যে অনেক ভালো অবস্থানে আছেন হিলারি।
অন্যদিকে, আইওয়াতে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের জন্য রয়েছে খুশি হওয়ার মতো সংবাদ। আবার ফ্লোরিডাতে ২০০৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় রিপাবলিকান প্রার্থীর তুলনায় ভালো অবস্থানে আছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী।
ডাটা কোম্পানি ক্যাটালিস্ট এই আগাম ভোটের তথ্য নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে। কয়েকটি রাজ্যের ক্ষেত্রে সেই বিশ্লেষণের ফলাফল তুলে ধরেছে সিএনএন।
অ্যারিজোনা
এই রাজ্যে আগাম ভোটে ডেমোক্রেট দলের নিবন্ধিত ভোটাররা এগিয়ে আছেন রিপাবলিকান দলের নিবন্ধিত ভোটারদের চেয়ে। ডেমোক্রেটরা এখনও পর্যন্ত চার হাজার ১১৬ ভোটে এগিয়ে আছে এই রাজ্যে। চার বছর আগে ডেমোক্রেটরা ২১ হাজারেরও বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল। ওই বছরের নির্বাচনে আগাম ভোট দিয়েছিলেন দুই-তৃতীয়াংশ ভোটার। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
কলোরাডো
কলোরাডোতে নিবন্ধিত ভোটাররা ডাকযোগে ভোট দিতে পারেন। গত সপ্তাহেই সব ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে ব্যালট। আগাম ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে এই রাজ্যেও এগিয়ে আছেন ডেমোক্রেটরা। এখন পর্যন্ত ডেমোক্রেটরা ১০ হাজার ভোটে এগিয়ে আছেন তারা। অবশ্য ২০১২ সালের নির্বাচনে একই সময়ে এই রাজ্যের রিপাবলিকানরা সাত হাজার ৬০০ ভোটে এগিয়ে ছিলেন।
জর্জিয়া
এই রাজ্যে এখনও পর্যন্ত পাঁচ লাখ ৮৩ হাজারেরও বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। ২০১২ সালের হিসাবে এটা একই সময়ে ৪০ শতাংশ বেশি। এই রাজ্যে ভোটাররা দলীয়ভিত্তিতে নিবন্ধিত নয়। ফলে এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে দলের অবস্থান নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। ২০১২ সালের নির্বাচনে অর্ধেকেরও বেশি ভোটার এই রাজ্যে আগাম ভোট দিয়েছিলেন।
ফ্লোরিডা
এই রাজ্যে আগাম ভোট শুরুর পর রিপাবলিকানরাই এগিয়ে আছেন। বর্তমানে ডেমোক্রেটদের সঙ্গে তাদের ব্যবধান ১৮ হাজার ১২০ ভোট। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা এই সময়ে ১ লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিলেন। সেই হিসেবে রিপাবলিকানরা ওই বছরের তুলনায় পিছিয়েই আছেন এই রাজ্যে। এর কারণ হতে পারে এই রাজ্যের হিস্প্যানিকদের ভোট অর্জনে হিলারির সাফল্য। এখন পর্যন্ত হিস্প্যানিকদের ১২ শতাংশ আগাম ভোট দিয়েছেন। ২০০৮ সালে একই সময়ে দিয়েছিলেন ৮ শতাংশ। তাছাড়া শ্বেতাঙ্গদের ভোটও এসময় নেমে এসেছে ৭৭ শতাংশে, যা আগে ছিল ৮২ শতাংশ।
আইওয়া
২০১২ সালের নির্বাচনে আইওয়ার ৪৩ শতাংশ ভোটারই আগাম ভোট দিয়েছিলেন। এই রাজ্যে ট্রাম্পের অবস্থান ভালো। ২০১২ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটরা এসময় যে পরিমাণ ভোটে এগিয়ে ছিলেন, এ বছর সেই ব্যবধান অনেক কমেছে। গত সপ্তাহেও ডেমোক্রেটরা রিপাবলিকানদের তুলনায় বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল। ফলে ডেমোক্রেটদের অবস্থান এই রাজ্যে খানিকটা দুর্বলই বলা যায়।
নেভাদা
সপ্তাহখানেক হলো নেভাদায় শুরু হয়েছে আগাম ভোট। এই রাজ্যে আগাম ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে ডেমোক্রেটরা। ২০১২ সালে আগাম ভোট দিয়েছিলেন ৬৯ শতাংশ ভোটার। এবার এখন পর্যন্ত আগাম ভোটের পরিমাণ খানিকটা কম। তবে তার মধ্যে ডেমোক্রেটরা এগিয়ে আছে প্রায় ১৫ হাজার ভোটে।
নর্থ ক্যারোলাইনা
এই রাজ্যে ডেমোক্রেট দলের নিবন্ধিত ভোটাররা রিপাবলিকান দলের নিবন্ধিত ভোটারদের তুলনায় বিপুল পরিমাণে এগিয়ে আছেন আগাম ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে। এখন পর্যন্ত ডেমোক্রেটরা এক লাখেরও বেশি ভোটে এগিয়ে আছেন এখানে। ২০১২ সালের একই সময়েও ডেমোক্রেটরা এই রাজ্যে এত ব্যবধানে এগিয়ে ছিল না। তা সত্ত্বেও এই রাজ্যে হিলারির জয় অনেকটাই নির্ভর করছে আফ্রিকান-আমেরিকানদের ভোটের ওপর। ২০১২ সালে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটাররা এই সময়ে ৩০ শতাংশ ভোট দিয়েছিলেন, এ বছর তার পরিমাণ ২৫ শতাংশ।
ইউটাহ
গতবারের নির্বাচনের এই সময় পর্যন্ত ইউটাহতে রিপাবলিকানরা ডেমোক্রেটদের তুলনায় ৩১ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল। এ বছরে এর পরিমাণ এখন পর্যন্ত ১৬ হাজারেরও কম। ইউটাহ বরাবরই রিপাবলিকানদের শক্তিশালী একটি ঘাঁটি। কিন্তু এ বছরের নির্বাচনে ট্রাম্প বিমুখিতা তাতে প্রভাব ফেলছে। অন্যদিকে, স্বতন্ত্র রক্ষণশীল প্রার্থী ইভান ম্যাকমুলিন এই রাজ্যে ভালো প্রভাব ফেলতে সমর্থ হয়েছেন। ফলে ইউটাহতে কেবল ডেমোক্রেট নয়, ম্যাকমুলিনের বিরুদ্ধেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। ফলে শক্তিশালী এই ঘাঁটিতেও সহজে জয় পাওয়া সম্ভব হবে না ট্রাম্পের জন্য।
বিবার্তা/নিশি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]