শিরোনাম
ট্রাম্পের সৌদি সফর ঘিরে সোস্যাল মিডিয়ায় ঝড়
প্রকাশ : ২২ মে ২০১৭, ০৯:৩৯
ট্রাম্পের সৌদি সফর ঘিরে সোস্যাল মিডিয়ায় ঝড়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বগ্রহণের পর শনিবার প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরব যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। সাথে ছিলেন তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প, কন্যা ইভাঙ্কা এবং জামাতা জেরার্ড কুশনার।

 

নির্বাচনী প্রচারকালে মুসলিমবিরোধী বক্তব্য, প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেকের পর বহু দেশের মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি- এতকিছুর পর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে একটি মুসলিম দেশকেই বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে তার এ সফরকে ঘিরে মানুষের মনে তৈরি হয়েছে ব্যাপক কৌতূহল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ঝড়।

 

শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল ‘ট্রাম্পের কন্যা’র আরবি শব্দ এবং এই বিষয়টি। অনেকে ট্রাম্পকে নিয়ে ব্যঙ্গও করছেন, ইসলাম সম্পর্কে তার করা কটূক্তির প্রসঙ্গ টেনে পোস্ট করছেন ট্রাম্পের ব্যঙ্গচিত্র। কম্পিউটারে তৈরি করা এই ছবিতে দেখা যায়, ট্রাম্পের মুখে দাড়ি এবং মাথায় টুপি।

 

এসব ছবির সাথে যেসব শিরোনাম দেয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘সৌদি ধর্মীয় নেতাদের ফতোয়া: ট্রাম্প হচ্ছেন আল্লাহর একজন দূত।’

 

 

আরেকটি ব্যঙ্গচিত্রও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, বিশেষ করে টুইটারে; যেখানে ইয়েমেন যুদ্ধের জন্যে ট্রাম্প এবং সৌদি নেতাদের দায়ী করা হচ্ছে। কার্টুনটিতে দেখা যায়, ট্রাম্প যখন বিমান থেকে নেমে আসছেন তখন সৌদি বাদশাহ তার ছেলে এবং ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে সাথে নিয়ে তাকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

 

লাল গালিচার একপাশে পড়ে আছে ইয়েমেনিদের মৃতদেহ। আর অন্য পাশে মাথা নত করে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হচ্ছে। সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যদের পেছনে বোরকা পরিহিত একজন নারী হাঁটু মুড়ে বসে আছেন এবং তার পেছনে তলোয়ার হাতে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যক্তি । দেখে মনে হয়, এখনই হয়তো তার শিরশ্ছেদ করা হবে।

 

এই কার্টুনের নিচে অনেকে মন্তব্য করেছেন। একজন লেখেন, ‘সাতটি আরব দেশের মুসলমানদেরকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর সৌদি আরবের বাদশাহ তাকে স্বাগত জানাতে ১৭টি মুসলিম দেশের নেতাদের জড়ো করেছেন।’  

 

সৌদি আরবের ধর্মীয় নেতা সাদ বিন ঘনিম গত মাসে একটি পোস্ট করেছিলেন। পরে অবশ্য পোস্টটি ডিলিট করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বহু লোক সেটির স্ক্রিন শট এখন আবার পোস্ট করেছেন।

 

ওই পোস্টে বলা হয়, ‘ওহ আল্লাহ, ট্রাম্প হচ্ছে তোমার বান্দাদের একজন। তার ভাগ্য তোমার হাতে। তাকে আদেশ দিন যাতে, তিনি চান আর না চান, মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষা করেন এবং তাদের ওপর নিপীড়ন বন্ধে কাজ করেন। তার শয়তানের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করুন এবং তাকে আপনার পথে পরিচালিত করুন।’

 

এই সফরকে কেন্দ্র করে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সৌদি ছাত্র খালেদ আল-দাওসারির কথাও তুলে ধরছেন। মার্কিন স্থাপনায় হামলার চেষ্টা করার অভিযোগে তাকে এই সাজা দেয়া হয়।

 

তার মুক্তির জন্যে প্রচারণা চালাচ্ছে এমন একটি অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করা একটি ছবিতে দেখা যায় ট্রাম্প এবং সৌদি বাদশাহ সালমান পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন। তার নিচে ক্যাপশন দেয়া, ‘ওহ জাতি, তোমাদের একজন ছেলে আরেক দেশের কারাগারে মরছে। এখনই তার মুক্তি চাওয়ার সময়।’

 

আবার অনেকেই বলছেন, ‘ট্রাম্পের এই সফর সৌদি আরবের জন্যে গর্ব করার মতো এক ঘটনা।’ আরেকজন লেখেন, ‘সারা পৃথিবীর চোখ এখন রিয়াদের দিকে। সবাই তাকিয়ে আছেন এই সম্মেলনের সাফল্যের দিকে।’

 

উল্লেখ্য, শনিবার সফরের প্রথম দিনে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদ আরবের মধ্যে ৩৫ হাজার কোটি ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর হয়, যার মধ্যে রয়েছে ১১ হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি। সেই সঙ্গে ট্রাম্পকে সৌদি আরবের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা দেন সৌদি বাদশা সালমান। শুধু তাই নয়, সৌদির ঐতিহ্যবাহী তলোয়ার নৃত্যেও অংশ নেন তিনি।

 

দ্বিতীয় দিন রবিবার রিয়াদের কিং আব্দুল আজিজ কনভেনশন সেন্টারে ৫৫ দেশের নেতাদের অংশগ্রহণে ‘আরব ইসলামিক আমেরিকান সামিটে’ বক্তৃতা দেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বিশ্বব্যপী জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় মুসলিম বিশ্বের নেতাদের নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। সূত্র: বিবিসি

 

বিবার্তা/নিশি

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com