শিরোনাম
ভারতে কৃষকের কান্না শুনছে না কেউ
প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৬:২৫
ভারতে কৃষকের কান্না শুনছে না কেউ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে ভয়াবহ খরায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা তাই অনেক দিন ধরেই ঋণ মওকুফ এবং খরার জন্য বিশেষ অর্থ অনুদানের দাবি জানাচ্ছিলেন সরকারের কাছে । কিন্তু সরকার সেই দাবি কানেই তোলে না।


তামিলনাড়ৃতে থেকে দাবি আদায় সম্ভব নয় - বুঝতে পেরে রাজ্যের অনেক কৃষক ৩৯ দিন আগে চলে যান রাজধানী নয়া দিল্লিতে। শুরু করে নানা উপায়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সহানুভূতি আদায় করে দাবি পূরণের চেষ্টা। যন্তরমন্তর এলাকায় অবস্থান নিয়ে অভিনব সব উপায়ে শুরু হয় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ।


গত কয়েক বছরে ভারতের খরা উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকায় যেসব কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, তাঁদের স্মরণ করে, সেরকম পরিণাম এড়াতে মৃতদের মাথার খুলি নিয়ে করা হয় মিছিল। এক কৃষককে নরেন্দ্র মোদী সাজিয়ে তার পায়ে মেখে দেয়া হয় নিজের শরীরের রক্ত। এসবের একটাই লক্ষ্য - যদি প্রধানমন্ত্রীর টনক নড়ে!


বিক্ষোভকারীরা এক পর্যায়ে মাথার অর্থেক চুল চেঁছে ফেলেন। যাঁদের পরিবারের সদস্যদের মুখে দু'বেলা অন্ন তুলে দেওয়ার নিশ্চয়তা নেই, আধা-ন্যাড়া হলে যে খারাপ দেখায় তা নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার কী তাঁদের!


এভাবে অভিনব প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেও কোনো কাজ না হওয়ায় এক সময় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে যান হতদরিদ্র কৃষকরা। উদ্দেশ্যে – প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে নিজেদের কথা সরাসরি তাঁকে জানানো। কিন্তু চাইলেই তো প্রধানমন্ত্রীর দেখা পাওয়া যায় না! পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নগ্ন হয়ে গড়াগড়ি যান কৃষকরা।


ভারতের রাজধানীতে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের সামনে দাবি আদায়ের জন্য 'বেআব্রু' হন অসহায় কৃষক, তবুও আসে না আশ্বাস, আসে না মোদীর দর্শন লাভের সুযোগ।


কৃষকরা অবশেষে ‘আব্রু' ঢাকেন। পোশাক নির্বাচনেও থাকে প্রতিবাদ, পুরুষ হয়েও কৃষকরা এবার লজ্জা নিবারণ করেন নারীর শাড়িতে!


তাতেও কিছু হয় না। কিন্তু এভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকলে এক সময় কী অবস্থা দাঁড়াতে পারে তা কল্পনা করে রাস্তায় ভাত ছিটিয়ে তাতে ডাল ঢেলে কৃষকরা সেই ভাত খান। এভাবে বোঝাতে চান, অভাবে ঘটি-বাটি সব গেলে প্রকৃতিই হবে শেষ আশ্রয়।


যখন ক্ষেতে ফসল আর থাকবেই না, তখন কী করবেন, ভাত, ডালই বা পাবেন কোথায়? তখন হয়ত ইঁদুর বা সাপও খেতে হবে, এটা বোঝাতে সত্যি সত্যিই ইঁদুর ও সাপ মুখে তুলে নেন কৃষকরা।


শুধু প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেই থেমে থাকেননি তারা। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, পানিসম্পদ মন্ত্রী উমা ভারতী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং কৃষি মন্ত্রী রাধানাথ সিং-এর সঙ্গে দেখা করেও নিজেদের দাবির কথা জানিয়েছেন। আশা করেছেন, মন্ত্রীদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কানে যাবে গরিব কৃষকদের দুঃখ-কষ্টের কথা।


বৃথা আশা। কোথাও নরেন্দ্র মোদীর কোনো বক্তব্যে বোঝার উপায় নেই যে, দেশের একটি রাজ্যের কৃষকরা চাষবাস ছেড়ে রাজধানীতে এসে দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। সূত্র : ডয়চে ভেলে


বিবার্তা/হুমায়ুন/কাফী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com