শিরোনাম
মক্কা-মদিনার আগা সম্প্রদায়
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০১৬, ১৮:১০
মক্কা-মদিনার আগা সম্প্রদায়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সময় কতো বদলে গেছে, বদলেছে আরো অনেক কিছু। যদিও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রাগ্রসরতায় অনেক কিছু হারিয়ে গেছে এবং আরো অনেক কিছু হারিয়ে যাওয়ার পথে, কিন্তু কালের ঘূর্ণি হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারেনি মক্কা ও মদিনার পবিত্র মসজিদ্গুলোর প্রাচীণ কিছু ঐতিহ্য ও সেবাকে।


কালের হাওয়ায় উড়ে না যাওয়া এরকম একটি হলেন হারাম শরিফের আগা সম্প্রদায়। এরা হাজি এবং দুই পবিত্র মসজিদে আসা মুসল্লীদের সেবা দিয়ে থাকেন। সউদি সমাজে এদের মর্যাদা অত্যন্ত উঁচু।


আগা শব্দটি আরবি নয়, তুর্কি। এটি এসেছে পুরনো তুর্কি শব্দ আকা থেকে, যার অর্থ বড় ভাই। কুর্দিরা অগ্রজ কিংবা গোত্রপতিকে সম্মান জানাতে আগা শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। আর তুর্কিরা মহানবী (সা)-এর বংশধরদের আগা সম্বোধন করে থাকে। ওসমানীয় শাসনামলে বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদেরও সম্মানসূচক পদবি ছিল আগা। আদালতসংশ্লিস্ট কাউকে কাউকেও এ নামে ডাকা হতো। আর মক্কা ও মদিনায় সেসব মানুষকেই সম্মানভরে আগা সম্বোধন করা হয়, যারা পবিত্র মসজিদের সেবার জন্য মনোনীত হন।


অতীতে আগাদের ১২ রকম দায়িত্ব ছিল। যেমন, পবিত্র কাবার চারপাশ ধোয়া, হারাম শরিফ পরিচ্ছন্ন রাখা, এর বাতি জ্বালিয়ে দেয়া ইত্যাদি। এখন কাজ বলতে বাদশা কিংবা অন্য কোনো রাষ্ট্রীয় মেহমান পবিত্র মসজিদ পরিদর্শনে এলে তাদের অভ্যর্থনা জানানো, তাদেরকে জমজমের পানি প্রদান এবং কাবা ধোয়ামোছার সময় সাধারণ মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখা।


মদিনার মসজিদে নববীতে আগারা মহানবী (সা)-এর রওজা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন এবং রাষ্ট্রীয় মেহমান এলে তা খুলে দেন।


মসজিদে নববীর এরকম একজন আগা সাঈদ। ১৯৬০ সালে তিনি হজ করেন। এর ছয় মাস পর তিনি মদিনায় যান। সউদি আরবের বাদশা তখন সউদ। মসজিদে নববীতে তখন যিনি আগাদের সরদার, সাঈদ তার কাছে আবেদন জানালেন আগা হওয়ার। সরদার তার শারিরীক সামর্থ্য ও ঈমানের মজবুতি যাচাই করে দেখলেন এবং তাকে নিয়োগ দিলেন।


সাঈদের বয়স তখন ২০-এর কোঠায়। নিয়োগ পেয়ে তিনি হলেন ১৪ আগার একজন। দু সপ্তাহ পরে তাকে সউদি আরবের নাগরিকত্ব দেয়া হলো। কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠাবলে পরে তিনি আগা দলের সরদার নিযুক্ত হন।


শেখ আবদুল আজিজ বিন বায-এর এক ফতোয়ার পর ১৯৭০-এর দশকে আগাদের নিয়োগদান বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ আগা নিয়োগ পান ১০৭৮ সালে। তবে নিয়োগ বন্ধ হলেও আগারা আছেন। বর্তমানে পবিত্র কাবায় ১৪ জন এবং মসজিদে নববীতে ১২ জন আগা আছেন।


সউদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশা আবদুল আজিজ নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন যেন আগাদের কাজে কেউ হস্তক্ষেপ না করে। বাদশা ফয়সল প্রতি বছর তাদের জন্য নগদ অর্থ ও উপহারসামগ্রী পাঠাতেন। মাসিক বেতন ছাড়াও তারা ওয়াকফ সম্পত্তির আয় থেকে রাজস্ব পেয়ে থাকেন। সূত্র : সউদি গেজেট


বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com