সৌদি রাজকুমারী আমিরা বিন তায়িল ১৯৮৩ সালের ৬ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন সৌদি রাজপুরুষ আইদান বিন নায়েফ আল তায়িল। আমিরা আমেরিকার নিউ হেভেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছেন সৌদি আরবের এই রাজকন্যা। সুন্দরী হিসেবেও তার যথেষ্ট খ্যাতি। তবু রাজপরিবারের মেয়েদের চেয়ে অনেকটাই আলাদা আমিরা।
মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই প্রবল মনের জোর, অদমনীয় সাহস আর তীব্র ইচ্ছাশক্তির সুবাদে দেশে-বিদেশে সাড়া জাগিয়েছেন রূপসী সৌদি রাজকন্যা আমিরা আল-তায়িল। শুধু সৌদিতেই নয়, গোটা বিশ্বে মানবাধিকারের স্বার্থে লড়াই করতে তিনি সদা তৎপর। বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে এর মধ্যে ৭০টি দেশে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। সমাধান করেছেন মানবাধিকার সংক্রান্ত বেশ কিছু সমস্যার।
দরিদ্র ও দুর্গতদের জন্য লড়াই করা আমিরার স্বভাব। বিশ্বের বেশ কয়েকটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক। পশ্চিম আফ্রিকার দুর্যোগ পীড়িতদের জন্য ত্রাণশিবির, পাকিস্তানের বন্যাকবলিত অঞ্চলের বাসিন্দাদের সাহায্য, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলা বা সোমালিয়ায় দুর্গতদের সেবায় ত্রাণ উদ্যোগ- সর্বত্র সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন এই রাজকন্যা।
গোঁড়ামির বিরুদ্ধেও তার প্রতিবাদ সুবিদিত। সৌদি আরবের মহিলাদের পরিধেয় ঢিলেঢালা পোশাক ‘আবায়াসে’র বিরুদ্ধে প্রথম যে কয়েক জন নারী প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন, আমিরা তাদের অন্যতম। পাশ্চাত্যের পোশাকই তার বরাবরের পছন্দ। তবে তাতেও প্রতীচ্যের শৈল্পিক ছোঁয়া দেখা যায়।
গোঁড়া সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবশ্য স্রেফ পোশাকের মাধ্যমেই চ্যালেঞ্জ জানাননি আমিরা। পুরুষের লাল চোখকে অগ্রাহ্য করে সৌদি আরবের রাস্তায় তীব্র গতিতে গাড়ি চালাতেও তিনি ওস্তাদ। ২০১৩ সালে জর্ডানে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের প্যানেল আলোচনায় ‘সৌদি পুরুষরা খুব ভীতু বলে মন্তব্য করে হইচই ফেলে দেন প্রিন্সেস আমিরা।
ওই আলোচনায় তিনি আরও বলেন, সৌদিতে নারীরা পিছিয়ে আছে। এর মূল কারণ রাজতন্ত্র নয় পুরুষতন্ত্র। নারীর সম্মানহানি হবে এই কথা বলে তারা নারীদের কাজ করতে দিতে চায় না।
আসল ঘটনা তা নয়। আসল ঘটনা হল তারা নারীদের ভয় পায়। আমরা সবাই জানি নারীরা পুরুষদের তুলনায় শক্তিশালী। কারণ তারা এই সমাজের সংখ্যালঘু। আর সংখ্যালঘুরা সবসময় নিজেদের প্রমাণ করতে চায়। এই কারণে সৌদি পুরুষেরা নারীদের অধিকার দেয়ার ব্যাপারে ভীষণ ভয় পায়।
নারীদের কেবল পরিবার ও সন্তানের দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত নয়। তাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য স্বার্থে কাজ করার প্রয়োজন। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু নিজেই নন, আমিরা চান তার দেশের সব নারীই স্বাধীন ও স্বাবলম্বী হয়ে উঠুন। এই ব্যাপারে তিনি সচেষ্ট উদ্যোগ প্রায়ই নেন।
বিবার্তা/জিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]