
দক্ষিণ জার্মানির ভেয়ার্টহাইমে আকাশ থেকে দেখলে একটি রেস্তোরাঁকে সাধারণ হাইওয়ে বিশ্রামাগার মনে হবে। কিন্তু আরও নিবিড়ভাবে দেখলে সেটিতে নানা প্রযুক্তির দেখা মিলবে।
‘হোম অব মবিলিটিতে’ চালকরা তাদের ইলেক্ট্রিক গাড়ি চার্জ দিতে এবং রোবটের রান্না করা খাবার কিনতে পারেন।
পাঁচটি পদ থেকে বাছাই করতে পারেন অতিথিরা। এগুলোর দাম ১২ ইউরো থেকে শুরু। চাহিদার ভিত্তিতে এসব খাবার রোবট তৈরি করে। রেস্তোরাঁর কর্মীরা অবশ্য প্রয়োজনীয় উপাদান আগেই রোবটে দিয়ে রাখেন।
সেগুলোই এটি রান্না ও পরিবেশন করে। এরপর কড়াইগুলো ধুতে দেওয়া হয়। এটি দিনে তিন হাজার বার রান্না করতে পারে।
প্রধান বাবুর্চি হ্যলগার স্ট্রমবার্গ রোবটকে নতুন রেসিপি দেন। রোবটের কর্মক্ষমতা মানুষের বেশি হওয়ায় উদ্বিগ্ন নন তিনি। কারণ প্রকৃত বাবুর্চিদের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা রয়েছে। তিনি বলেন, “এটা স্বাদ এবং সংবেদন, সংকলন ও সতেজতা ও বিভিন্ন উপাদানের উৎসের ওপর নির্ভরশীল। এটা হাইজিনের ব্যাপার। এটা বন্ধুত্বপূর্ণ হাসি, অতিথিকে আমন্ত্রণ এবং বিভিন্ন পদের প্রচারণার ব্যাপার। বাবুর্চিদের করার মতো এখনও অনেক কিছু রয়েছে। কিন্তু আপনি যদি তা করতে না পারেন, কারণ আপনি সারাদিন একটি উৎপাদনের লাইনে আছে, তাহলে তা অর্থহীন।”
জার্মান গ্যাস্ট্রোনমি ব্যাপক কর্মী সংকটে রয়েছে। এখাতে সাড়ে তিন হাজার বাবুর্চিসহ ৯ হাজারের মতো দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন। এক্ষেত্রে রোবট সহায়তা করতে পারে।
কেভিন ড্যয়েটমার্গ একমত। তিনি হামবুর্গভিত্তিক রোবট বাবুর্চি নির্মাতা স্টার্টআপ গুডবাইট্স এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বলেন, “এই রোবটের অর্থ এটা নয় যে আমরা যেমন রেস্তোরাঁ চিনি সেগুলো আর থাকবে না বা সব রান্না স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাবে। আমরা প্রতিদিনের খাদ্য চাহিদায় ইতিবাচকভাবে অবদান রাখতে চাই যাতে আপনি সবসময় সদ্য তৈরি খাবার কিনতে পারেন। নতুন প্রজন্মের কাছে টিকটকে কয়েকটি রান্নার ভিডিও তৈরি আনন্দের হলেও আট থেকে দশঘন্টা রান্না ঘরে কাটানোর কাজ তাদের টানে না।”
সত্যি করে বলতে গেলে রান্নার কাজে রোবট ব্যবহার একেবারে নতুন ব্যাপার নয়। ফ্রান্সে কয়েকবছর আগে এই সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পিৎসা মেকার সাড়া জাগিয়েছিল। সুইস নির্মাতা সেবোটিক্সের এই রোবটটি সেবাখাতে ব্যবহৃত হচ্ছে : মানুষ ওয়েটারের ঘাটতি মেটাতে খদ্দেরদের খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করে এটি।
হামবুর্গের রোটট পাচক নির্মাতারা এই যন্ত্রের ক্ষমতা আরেও বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছেন। কেভিন ড্যয়েটমার্গ বলেন, “আমরা শিগগিরই একটি প্লেটিং মডিউল চালু করব যাতে সত্যিকারের প্লেটে খাবার পরিবেশন করতে পারে রোবট। বিভিন্ন কোম্পানি রেস্তোরাঁর কাছে এটা বেশ আকর্ষণীয় হবে। আমরা অন্যান্য রান্নার উপকরণ সম্পর্কে অনেক আগ্রহের কথা জানছি যেগুলো আমরা আমাদের সিস্টেমে যোগ করছি। যেমন, স্যুঁ ভিঁদ্যে খাবার দিতে একটি কনভেকশন ওভেন ব্যবহারের দিকে অনেকটাই এগিয়েছি। যেমন, স্যুঁ ভিঁদ্যে রান্না করা স্টেক, ফালাফাল ইত্যাদি তৈরি করা যাবে এবং বিভিন্ন পন্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা যাবে।”
নিজস্বতার ক্ষেত্রে আপস হচ্ছে কিনা সেই বিতর্কের মাঝেও রোবট বাবুর্চির চাহিদা ইতোমধ্যে বেড়েছে। কারণ এটি এখনও খদ্দেরের বিশেষ চাহিদা অনুযায়ী খাবার তৈরি করতে পারে না।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]