
ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন সংস্কারপন্থি মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাঈদ জলিলিকে পরাজিত করেছেন। নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন ৫৩.৩ শতাংশ ভোট এবং সাঈদ জালিলি পেয়েছেন ৪৪.৩ শতাংশ ভোট।
মাসুদ পেজেশকিয়ান পেশার একজন হার্ট বিশেষজ্ঞ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াইয়ে তিনি বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নৈতিক পুলিশের কট্টর সমালোচক পেজেশকিয়ান ঐক্য ও সংহতির পাশাপাশি বিশ্ব থেকে ইরানকে কোণঠাসার অবসান ঘটানোরও প্রতিশ্রুতির কথা বলে বেশ আলোচনায় ছিলেন।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরই মাসুদ পেজেশকিয়ানের সমর্থকরা রাজধানী তেহেরানের রাস্তায় নেমে উল্লাস প্রকাশ করেন। এছাড়া দেশটির অন্যান্য বড় শহরেও তার বিজয় উল্লাস করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওতে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ভিডিওতে বেশিরভাগ তরুণদের নাচতে এবং পেজেশকিয়ানের স্বাক্ষর করা সবুজ পতাকা ওড়াতে দেখা যায়। বিজয় উল্লাসের মিছিলের পাশ দিয়ে হর্ণ বাজিয়ে গাড়িও ছুটতে দেখা যায়।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবরে বলা হয়েছে, ভোট গণনা শেষে প্রাথমিক ফলাফলে সংস্কারপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন এক কোটি ৬৩ লাখ ভোট। অন্য দিকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কটরপন্থী সাঈদ জালালি পেয়েছেন এক কোটি ৩৫ লাখ ভোট।
দেশটির নির্বাচন কমিশনের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম। এই জয়ের মধ্যে দিয়ে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন পেজেশকিয়ান।
নিজ মেয়াদের আড়াই বছরের মাথায় গত ২০মে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তার মৃত্যুর পর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে দেশটিতে ক্ষমতাসীন কট্টর ইসলামপন্থি সরকার। সেই তারিখ ছিল ২৮ জুন।
ভোটার টার্নআউটের হার নিম্ন হওয়ায় দ্বিতীয় দফা ভোট বা রান-অফে গড়ায় নির্বাচন। সেই দ্বিতীয় দফা ভোটের তারিখ ছিল গতকাল ৫ জুলাই।
এবারের নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৬ জন। এরা হলেন মোস্তফা পুরমোহাম্মাদী, সাঈদ জালিলি, মোহাম্মদ বাকের কলিবফ, আলী রেজা যাকানি, সাইয়্যেদ আমির হোসেন কাজীজাদেহ হাশেমি ও মাসুদ পেজেশকিয়ান।
নির্বাচনে লড়াই হয়েছে মূলত সাঈদ জালিলি ও মাসুদ পেজেশকিয়ানের মধ্যে। ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে জালিলি কট্টরপন্থি এবং মাসুদ সংস্কারপন্থি রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। তবে উভয়েই দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ।
জানা গেছে, এবারে ভোটারের উপস্থিতিও বেশি ছিল। প্রায় ৫০ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছেন। এর আগে ২৮ জুন অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রায় ৪০ ভাগ।
গত ২৮ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তবে কেউ এককভাবে শতকরা ৫০ ভাগের বেশি ভোট না পাওয়ায় নির্বাচন রান অফে গড়ায়।
২৮ জুনের নির্বাচনে ২ কোটি ৪৫ লাখ ভোটার ভোট দেন। এরমধ্যে সংস্কারপন্থী প্রার্থী পেজেশকিয়ান পান এক কোটি ৪ লাখ ভোট। অন্যদিকে, সাবেক প্রধান পরমাণু আলোচক ও বিপ্লবের মূলনীতির অনুসারী সাঈদ জালিলি পান ৯৪ লাখ ভোট।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]