
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারতে সাত দফার বিশাল নির্বাচনি যজ্ঞ শুরু হয়েছিল গত ১৯ এপ্রিল। টানা দেড় মাস পর গত শনিবার (১ জুন) সপ্তম ও শেষ দফার ভোট হয়। তবে শেষ দফার ভোটের আগে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারীতে ধ্যানে বসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
গেল ৩০ মে সন্ধ্যা থেকে কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ শিলা ‘ধ্যানমণ্ডপম’-এ যোগমগ্ন হন মোদি। ধ্যান করেন টানা ৪৫ ঘণ্টা। সেই সময়ই বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, ধ্যানে বসা মোদির নির্বাচনী কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। বিরোধীদের সেই অভিযোগ সত্যি ধরা হলে, আদতে ধ্যানে বসেও লাভ হয়নি মোদির। কারণ, তামিলনাড়ুতে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির।
তামিলনাড়ুতে শূন্যই রয়ে গেছে বিজেপির ফল। দলটির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট আসন পেলেও, তার সংখ্যা মাত্র একটি।
অনেক বিশ্লেষকের মতে, শুধু তামিলনাড়ু নয়, ধর্মীয় আবেগ কাজে লাগিয়ে অন্যান্য রাজ্যেও ভোট পাওয়ার যে কৌশল মোদি নিয়েছিলেন তা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, ২২টি আসন পেয়ে তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে দাপট দেখিয়েছে এবারের নির্বাচনে। কংগ্রেস পেয়েছে ৯টি আসন। দুটি করে আসন পেয়েছে সিপিএম এবং সিপিআই। এছাড়া ইন্ডিয়া জোটের অন্য দুই শরিক দল একটি করে আসন পেয়েছে।
এদিকে, ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোটপ্রাপ্তির হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চেয়েও বড় জয় তুলে নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের শীর্ষ দুই নেতা উত্তর প্রদেশে লড়েছেন। নিজ নিজ আসনে জয়ীও হয়েছেন। তবে মোদির চেয়ে রাহুলের জয়ে ভোটের ব্যবধান আকাশচুম্বী।
ভারতের নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, উত্তর প্রদেশের বারানসি থেকে লড়াই করা মোদি ৫ লাখ ৬০ হাজার ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থী ও উত্তর প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অজয় রাইয়ের চেয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৫১৩ ভোট বেশি পেয়েছেন তিনি। এটি এই আসনে মোদির টানা তৃতীয় জয় হলেও, গত নির্বাচনের চেয়ে এবার তার ভোট কমেছে।
বারানসিতে এবার মোদির ভোট কমেছে ৯ শতাংশের বেশি। তিনি পেয়েছেন ৬ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ ভোট, যা মোট প্রাপ্ত ভোটের ৫৪.২৪ শতাংশ। অন্যদিকে অজয় পেয়েছেন ৪ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৭ ভোট বা ৪০.৭৪ শতাংশ। ২০১৯ সালে মোদি পেয়েছিলেন ৬৩.৬২ শতাংশ ভোট।
অন্যদিকে, একই প্রদেশের রায়বেরেলিতে দাঁড়ানো রাহুল গান্ধী বড় জয় পেয়েছেন। আসনটিতে প্রায় ৪ লাখেরও বেশি ভোটের বিশাল ব্যবধানে তিনি হারিয়েছেন ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রার্থী দীনেশ প্রতাপ সিংকে। এই আসনে রাহুল পেয়েছেন ৬ লাখ ৮৪ হাজার ২৬১ ভোট। অন্যদিকে মোদির সমর্থিত দীনেশ প্রতাপ সিং পেয়েছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৬৪৬ ভোট।
কেরালার ওয়ানাদেও বড় জয় তুলে নিয়েছেন রাহুল। নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুসারে, গান্ধী পরিবারের এ সদস্য আসনটিতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে সাড়ে ৩ লাখেরও বেশি ভোটের বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। সেখানে রাহুল পেয়েছেন ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪৫ ভোট। অন্যদিকে, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী অ্যানি রাজা পেয়েছেন ২ লাখ ৮৩ হাজার ২৩ ভোট।
বিবার্তা/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]