রাম মন্দির বা বাবরি মসজিদ বিতর্ক নিয়ে সহমতের ভিত্তিতে সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি স্পর্শকাতর ও তাতে ভাবাবেগ রয়েছে তাই আদালতের বাইরে দুই পক্ষের পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে এর সমাধানের প্রস্তাব দেয়া হয় শীর্ষ আদালতের তরফে।
মঙ্গলবার দেশটির শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি জে.এস. খেহার, বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড় ও সঞ্জয় কৃষ্ণ কৌল’এল ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আদালতের বাইরে যাতে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছনো যায়, তার চেষ্টা করুক উভয়পক্ষ। দরকারে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করা হোক। সেক্ষেত্রে নিজেই মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে রাজি বলেও ঐতিহাসিক প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি জে.এস.খেহার।
এদিন সকালে শীর্ষ আদালতের এই মামলার আবেদনকারী বিজেপি নেতা সুব্রাহ্মনিয়াম স্বামী আদালতকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে মামলাটির শুনানি পড়ে রয়েছে। মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি করার আর্জিও জানান স্বামী। সেসময়ই প্রধান বিচারপতি দুই পক্ষের সহমতের ভিত্তিতেই সমস্যা মিটিয়ে ফেলার প্রস্তাব দেন স্বামীকে।
তিনি বলেন, বিবাদ মেটাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের উদ্যোগী হয়ে মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করা উচিত। প্রয়োজনে আদালতও মধ্যস্থতাকারী নির্বাচিত করতে পারে। যদি সব পক্ষ চায় তবে তিনিও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারেন বলে জানান প্রধান বিচারপতি।
আদালত আরো জানায়, এটি শুধুমাত্র অ্যাপেক্স কোর্টের একটি পরামর্শ মাত্র, এখানে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে এ সম্পর্কিত বিষয়ে দুই পক্ষের তরফে নেয়া সিদ্ধান্ত আদালতে জানানোর কথাও বলা হয়েছে। ওই দিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।
শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সুব্রাহ্মনিয়াম স্বামী। তিনি জানান, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার মধ্য দিয়েই মন্দির-মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) নেতা বিনয় কাটিয়ার। তিনি বলেন, কেন্দ্রে ও উত্তরপ্রদেশে যেহেতু বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে, তাই এবার এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।
যদিও আদালতের এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নন মুসলিমরা। তাদের মতে, আলোচনার টেবিলে বসার আগে একটা আইনি সিলমোহর পড়া উচিত। বাবরি মসজিদ প্যানেলের তরফে সৈয়দ কাসিম ইলিয়াস জানান, শীর্ষ আদালতের এই পরামর্শ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং বিচারব্যবস্থার মধ্য দিয়েই এর সমাধান হওয়া উচিত।
তিনি আরো জানান, আলোচনার মধ্যে এর সমাধান খোঁজার সময় চলে গেছে। দুই পক্ষের মধ্যেই একাধিকবার বৈঠক হয়েছে কিন্তু কোনো সমাধান বেরিয়ে আসেনি। তাই আমার মনে হয় নতুন করে বোঝাপড়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
বিবার্তা/ডিডি/নিশি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]