
চীনের ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির জয়ের পর শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। সেই জের ধরে এবার তাইওয়ানের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপরাষ্ট্র নাউরু। পাশাপাশি, চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের আকাঙ্খাও ব্যক্ত করেছে দেশটি।
১৫ জানুয়ারি, সোমবার নিজেদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বক্তব্যে নাউরুর প্রেসিডেন্ট ডেভিড আদিয়াং জানান, দেশ ও জনগণের স্বার্থেই আমরা চীনের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার এবং তাইওয়ানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ফেসবুক পোস্টে নাউরুর প্রেসিডেন্ট ডেভিড আদেয়াংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, নাউরু প্রজাতন্ত্র আর চীন প্রজাতন্ত্রকে (তাইওয়ান) একটি পৃথক দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দেবে না বরং চীনের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দেবে। পাশাপাশি তাইওয়ানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে। এই পরিবর্তন কোনভাবেই অন্য দেশের সাথে আমাদের বিদ্যমান উষ্ণ সম্পর্ককে প্রভাবিত করার জন্য নয়। আমাদের সরকার নাউরুকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতি দৃঢ় প্রত্যয়ী। এই পরিবর্তনটি নাউরুর উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
নাউরু বলছে, তারা তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে এবং চীনকে স্বীকৃতি দেবে। তাইপেইয়ের কূটনৈতিক মিত্র হিসেবে এ কথা জানিয়েছে নাউরু সরকার।
নাউরু সরকার বলেছে দেশ এবং এর জনগণের স্বার্থে তারা চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চায়। এর মানে হল যে নাউরু তাইওয়ানকে পৃথক দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে না, বরং চীনের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে এবং তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে। এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না। নাউরু একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং আমরা চাই অন্যান্য দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে।
তাইওয়ানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিয়েন চুং কাং জানান, আমাদের আত্মমর্যাদা বজায় রাখার জন্য আমরাও নাউরুর সাথে সবধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করছি।
নাউরুর এ পদক্ষেপের ফলে তাইওয়ানকে গুয়াতেমালা, প্যারাগুয়ে, এসওয়াতিনি, পালাউ এবং মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ সহ ১২ কূটনৈতিক মিত্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।
নাউরুর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতি অনুযায়ী, ‘এক চীন’ নীতির প্রেক্ষিতে নাউরুর সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী চীন।
নাউরুর সিদ্ধান্তের ফলে তাইওয়ানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দানকারী দেশের সংখ্যা কমে ১২-তে নেমে এলো। কৃষি এবং শিক্ষা সহায়তার মাধ্যমে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্র যোগাড় করতে চীন ও তাইওয়ান রীতিমতো প্রতিযোগিতা চালিয়ে আসছে।
এর আগে ২০০২ সালে নাউরুর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল তাইওয়ান। কিন্তু ২০০৫ সালে তাদের মধ্যে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল।
মাত্র ১২ হাজার ৫০০ অধিবাসীর দেশ নাউরু পৃথিবীর সবচেয়ে ছোটো দেশগুলোর মধ্যে একটি। দেশটি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে ৪০০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত।
বিবার্তা/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]