বিদেশিসহ ৯ হাজারের বেশি কারাবন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে মিয়ানমার
প্রকাশ : ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৩৪
বিদেশিসহ ৯ হাজারের বেশি কারাবন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে মিয়ানমার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ১১৪ জন বিদেশি নাগরিকসহ মোট ৯ হাজার ৬৫২ জনকে মুক্তির ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এই তথ্য।


১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি পায় মিয়ানমার। তারপর থেকে এই দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে দেশটি।


মিয়ানমারে স্বাধীনতা দিবসে এর আগে রাজধানী নেপিডোতে আয়োজিত কুচকাওয়াজে জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাই বক্তব্য দিয়েছিলেন। তবে এবারের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। দেশটির উত্তরে বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর আক্রমণে কোণঠাসা অবস্থায় আছে সরকার। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণের পর সরকার এবারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।


৪ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের বিবৃতিতে দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন কারাগারের ৯ হাজার ৬৫২ বন্দির জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। মুক্তি পাওয়া বন্দিদের মধ্যে রাজনৈতিক বন্দি ছিলেন কিনা, সে সম্পর্কে ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।


ক্ষমতাসীন জান্তার এক মুখপাত্র গ্লোবাল নিউ লাইটকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে মানবিক বিবেচনায় প্রতি বছরই কারাবন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়। এবারই প্রথম ১১৪ জন বিদেশিসহ ৯ হাজার ৬ শ’জনের বেশি বন্দিকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিগগিরই তারা কারামুক্ত হয়ে স্বজনদের কাছে ফিরে যেতে পারবেন।


জান্তার ওই মুখপাত্র বলেন, বিভিন্ন কারাগার থেকে মুক্তি পর এই বন্দিদের প্রথমে মায়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। বন্দিদের স্বজনদেরও সেই কারাগারে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।


২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সেই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।


ক্ষমতা দখলের পর বন্দি করা হয় এনএলডির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চিসহ দলটির অধিকাংশ উচ্চ ও ও মাঝারি পর্যায়ের নেতা ও আইনপ্রণেতাদের। এখনও তারা কারাগারে রয়েছেন।


মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি জনগণ অবশ্য সামরিক বাহিনীর এ পদক্ষেপ একেবারেই মেনে নেয়নি। বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই রাজধানী নেইপিদো, প্রধান শহর ও বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ দেশটির ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের শুরুর দিকে শান্তিপূর্ণভাবে তা দমনের চেষ্টা করলেও একসময় বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয় জান্তা।


নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের গুলিতে হাজারেরও অধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এক পর্যায়ে গণতন্ত্রপন্থিরা জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিতে থাকেন, গঠিত হয় ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট বা নাগ।


মায়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে নাগ যোদ্ধাদের সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছে সেনা ও পুলিশ বাহিনীর।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com