
ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়ে দুই শতাধিক মানুষকে হত্যার ঘটনার মূলহোতা এক জঙ্গিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। বুধবার জাকার্তার আদালত বালি বোমা বিস্ফোরণ এবং অন্যান্য হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার অনুসারী ওই হামলাকারীকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। বিবিসি, এএফপি।
জাকার্তার আদালত সন্ত্রাসবাদের দায়ে জুলকারনাইন নামের ওই জঙ্গিকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এক যুগের বেশি সময় আগে বালিতে প্রাণঘাতী বোমা হামলা চালানোর পর থেকে পলাতক ছিলেন তিনি। ইন্দোনেশিয়ার সরকার তাকে ‘মোস্ট ওয়ান্ডেট’ ঘোষণা করেছিল। গত বছরের ডিসেম্বরের আগে পর্যন্ত পলাতক ছিলেন জুলকারনাইন।
পর্যটকদের কাছে ছুটি কাটানোর অন্যতম জনপ্রিয় বালি দ্বীপের দু’টি পানশালায় চালানো ওই ভয়াবহ হামলায় ২১ দেশের অন্তত ২০২ নাগরিকের প্রাণহানি ঘটে। বালি দ্বীপের একটি আইরিশ পানশালা ও পার্শ্ববর্তী সারি ক্লাবে বোমা হামলায় নিহতদের মধ্যে ৮৮ অস্ট্রেলীয়, ৩৮ ইন্দোনেশীয় এবং ২৮ ব্রিটিশ ছিলেন।
বোমা হামলায় জড়িত থাকার দায়ে ২০০৮ সালে ইন্দোনেশিয়ায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এছাড়া আরো কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এর পাশাপাশি দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন হামলাকারীদের কয়েকজন মারা গেছেন।
বালি হামলার সঙ্গে জড়িত দেশটির কট্টরপন্থী মুসলিম পণ্ডিত আবু বকর বায়াসির গত বছর কারাগার থেকে মুক্তি পান। তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন দেশটির আদালত। জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় অনুসারী গোষ্ঠী জিমাহ ইসলামিয়া বালি হামলার সঙ্গে জড়িত। এই গোষ্ঠীর সাবেক প্রধান ছিলেন আবু বকর।
১৫ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া জুলকারনাইন দেশটিতে আরিস সুমারসোনো নামে পরিচিত। তিনিও জিমাহ ইসলামিয়ার সদস্য বলে প্রসিকিউটররা আদালতকে জানিয়েছেন।
প্রসিকিউটররা বলেছেন, জুলকারনাইনের নির্দেশে জিমাহ ইসলামিয়ার একটি বিশেষ শাখার সদস্যরা ইন্দোনেশিয়ায় বড়দিন এবং নববর্ষ উদযাপনের দিনে ২০০০ ও ২০০১ সালে বোমা হামলা চালিয়েছিল। এছাড়া ২০০০ সালে রাজধানী জাকার্তায় ফিলিপাইনের দূতাবাসে বিস্ফোরণ, ২০০৩ সালে জাকার্তার ম্যারিয়ট হোটেলে বোমা হামলা এবং ২০০৪ সালে জাকার্তায় অস্ট্রেলীয় দূতাবাসে বোমা হামলাও জিমাহর বিশেষ শাখার সদস্যরা চালায়।
দুর্ধর্ষ জঙ্গি জুলকারনাইনকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার দেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে তিনি আদালতকে বলেছেন, আগাম হামলা চালানোর ব্যাপারে জিমাহ ইসলামিয়ার সদস্যরা তার সঙ্গে পরামর্শ করেনি। এই স্বীকারোক্তির মাধ্যমে তিনি দায়মুক্তি পেতে পারেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন আদালত।
বিবার্তা/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]