বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে, এমন তিন রাজ্যে ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ-এর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, পঞ্জাব, আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিএসএফ গ্রেফতার, তল্লাশি এবং বাজেয়াপ্ত করার কাজ করতে পারবে।

সাম্প্রতি পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার ঘটনার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসএফ-এর ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই প্রবণতায় রাশ টানা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন নর্থ ব্লকের কর্তারা।

যদিও অমিত শাহের মন্ত্রনালয়ের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী নয়া নির্দেশিকায় আপত্তি জানিয়ে টুইট করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দ্রুত এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দাবি, জাতীয় সুরক্ষার দিকে লক্ষ্য রেখে সীমান্ত সংলগ্ন স্পর্শকাতর রাজ্যগুলোতে বেআইনি কার্যকলাপ রোধে এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু তা মানতে নারাজ অপর একটি মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, এটি রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত। বিএসএফ-এর আসল কাজ হল সীমান্ত পাহারা দেওয়া এবং অনুপ্রবেশ রোখা। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় দেখা গিয়েছে, ওই কাজ তারা সাফল্যের সঙ্গে করে উঠতে পারছে না। তিনি আরো বলেন, এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বিএসএফ-এর নিত্য সমস্যা লেগে থাকার সূচনা হবে। কারণ এত দিন তাঁদের কাজের ক্ষেত্র ছিল সীমান্তের আউটপোস্ট পর্যন্ত। কিন্তু এ বার তাঁরা সেই সীমানা পেরিয়ে অন্য এলাকাতেও তল্লাশিতে যাবেন এবং প্রয়োজন মনে করলে গ্রেফতার করবেন, তা নতুন সমস্যার জন্ম দিতে পারে।

অন্য দিকে, বিএসএফ-এর এক আধিকারিকের পাল্টা দাবি, তাঁদের কাছে যদি নির্দিষ্ট সূত্র থেকে খবর থাকে, তা হলে তাঁরা কেন স্থানীয় পুলিশের জন্য অপেক্ষা করবেন? নতুন নিয়মে নিজেরাই অভিযান চালিয়ে দুষ্কর্ম রুখে দিতে পারবেন।

বিবার্তা/শাহিন