শিরোনাম
গান শুনতে শুনতে খাসোগিকে টুকরো টুকরো!
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৫৭
গান শুনতে শুনতে খাসোগিকে টুকরো টুকরো!
জামাল খাসোগি (ফাইল ছবি)
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সৌদি আবরেব সাংবাদিক জামাল খাসোগির আলোচিত হত্যাকাণ্ডের নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। এ হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজ সালমানের দায় নেয়ার পর এবার তাকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে এর রোমহর্ষক বর্ণনা এসেছে। তাকে হত্যার পর যিনি টুকরো টুকরো করেছেন তিনি ওই সময় গান শোনছিলেন। মরদেহ কাটার সময় তিনি প্রায়ই গান শোনেন। কখনো কখনো হাতে কফি কিংবা সিগারেটও থাকে।


জাতিসংঘের তদন্তকারীদের শোনা একটি গোপনীয় টেপ রেকর্ড থেমে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।


বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্তের জন্য জাতিসংঘের তদন্তকারী দলের কাছে ৪৫ মিনিটের একটি গোপন অডিও রেকর্ড সরবরাহ করেছে তুরস্ক। হেলেনা কেনেডি নামের এক ব্রিটিশ আইনজীবী জাতিসংঘের ওই তদন্তকারী দলকে সহায়তা করছেন। খাসোগির হত্যাকারী সম্পর্কে নতুন তথ্যগুলো এ হেলেন কেনেডিই দিয়েছেন। অডিও রেকর্ডে খাসোগিকে ‘বলি দেয়ার যোগ্য জানোয়ার’ বলতে শোনা গেছে, এমন কথাও বলেছেন কেনেডি।


সোমবার রাতে বিবিসি টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে খাসোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে নতুন তথ্যগুলো দিয়ে কেনেডি বলেন, ‘ব্যাগে মরদেহ ঠিকভাবে ঢোকানো যাবে কি না, অডিও রেকর্ডে এমন একটি আলোচনা শুনতে পাচ্ছিলাম। তারা খাসোগির আসার জন্য অপেক্ষা করছিল। একপর্যায়ে কেউ বলে ওঠে, বলি দেয়ার যোগ্য জানোয়ারটা কি এসেছে? কথাগুলো বলার সময় তাদের হাসি স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল।’


এরপরই হত্যাকারীর গান শোনার অভ্যাস সম্পর্কে মুখ খুলেছেন কেনেডি। কেনেডির দাবি, খাসোগিকে হত্যার জন্য একজন ফরেনসিক প্যাথলজিস্টকে সৌদি দূতাবাসে আনা হয়েছিল।


খাসোগির মরদেহ কাটার সময় ওই প্যাথলজিস্টকে বলতে শোনা গেছে, ‘লাশ কাটার সময় আমি প্রায়ই গান শুনি। কখনো কখনো হাতে কফি কিংবা সিগারেটও থাকে।’ প্যাথলজিস্ট আরো বলেন, ‘জীবনে প্রথমবার আমি মাটিতে শুইয়ে লাশ কাটছি। এমনকি কসাইরাও পশু কাটার সময় সেটিকে ঝুলিয়ে নেয়।’


কেনেডি বলেন, ‘দূতাবাসে ঢোকার পরপরই খাসোগি বুঝে গিয়েছিলেন, তার সাথে অপ্রীতিকর কিছু ঘটতে চলেছে।’


‘একপর্যায়ে শোনা গেছে, খাসোগি তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছ থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যেতে লাগলেন। তার কণ্ঠে ভয়ের ছাপ টের পাওয়া যাচ্ছিল। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, তার ভাগ্যে খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে।’


তদন্তে ৪৫ মিনিটের অডিও রেকর্ডটি শোনছেন জাতিসংঘের তদন্তকারী দলের সদস্য অ্যাগনেস ক্যালামার। তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুর আগে খাসোগি তার হত্যাকারীদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমরা কি আমাকে ইনজেকশন দিতে চলেছ? অপরপক্ষ থেকে উত্তর এসেছিল, হ্যাঁ। এরপরই একটি আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়, অনেকটা দম বন্ধ হয়ে আসার মতো শব্দ। সম্ভবত তার মাথা কোনো প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছিল। এরপরই হত্যাকারীরা বলে, মাথা মুড়ে ফেল। এরপর হয়তো খাসোগির শরীর থেকে মাথাটা বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়।’


গত বছরের ২ অক্টোবর খাসোগিকে শেষবার দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। ওই দিন তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। পরে জানা যায়, দূতাবাসের ভেতরেই তিনি খুন হন। এ ঘটনায় তুরস্ক বরাবরই সৌদি আরবকে দায়ী করছে। সম্প্রতি প্রিন্স সালমান এ হত্যাকাণ্ডে তার দায়ের কথা স্বীকার করেন।


বিবার্তা/এরশাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com