ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল জানতে এবার অনেক দেরি হতে পারে বলে মনে করছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
কর্মকর্তারা মনে করছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গণনা শুরু হলেও ২৩ তারিখ অনেক রাতে হয়তো ফলাফল জানা যাবে। তবে প্রতি রাউন্ডের শেষে অন্যান্য বারের মতোই ফলাফল জানানো হবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র উপনির্বাচন কমিশনার উমেশ মিশ্র জানিয়েছেন, ইভিএমের ভোট গণনার পরে ভিভিপ্যাট যন্ত্রের কাগজের স্লিপ গোণা শুরু হবে। তারপরে দুটি যন্ত্রের ভোটের সংখ্যা মিলিয়ে দেখা হবে।
কেন্দ্র পিছু পাঁচটি করে বুথের ইভিএম আর ভিভিপ্যাটের ফল মেলানো হবে। এই পাঁচটি বুথ বাছাই করা হবে লটারির মাধ্যমে।
ভারতের ভোট নেয়ার জন্য বৈদ্যুতিক ভোট যন্ত্র বা ইভিএম ব্যবহার শুরু হওয়ার পর থেকে গণনার দিন দুপুরের মধ্যেই মোটামুটিভাবে স্পষ্ট হয়ে যায় ফলাফল।
কিন্তু এবারের ভোটে সব কেন্দ্রেই ইভিএমের সঙ্গে যুক্ত যে ভিভিপ্যাট যন্ত্র বা ব্যবহার করা হচ্ছে, তা একটি একটি করে গুণতে হবে। ইভিএমের ভোটের সঙ্গে ভিভিপ্যাট যন্ত্রের ফলাফল না মিললে আবারো গুণতে হবে ভোট। তারপরেই ফলাফল প্রকাশ করা যাবে।
একেকটি ভিভিপ্যাট যন্ত্রের ভোট গুণতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগবে। যদি একবারেই মিলে যায় ফল, তাহলেও একেকটি কেন্দ্রে ফল ঘোষণা হতে অন্তত পাঁচ ঘণ্টা বেশি সময় লাগবে।
রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী কয়েক দশক ধরে নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করেন।
তিনি বলেন, প্রতিটা ভিভিপ্যাট যন্ত্রের স্লিপ একটা একটা করে গুণতে হবে। যদি ইভিএমের সংখ্যার সঙ্গে সেটা না মেলে তাহলে আবারো গুণতে হবে। তাই ব্যালটের যুগে যেমন গণনা শেষ হতে প্রায় ৭২ ঘণ্টা সময় লাগত, আমার ধারণা এবার প্রক্রিয়াটা শেষ হতে অন্তত ৩০ ঘণ্টা সময় লাগবে।
তিনি ব্যাখ্যা করছিলেন, যদি একটি ইভিএমে কোনো প্রার্থী ৭২৩টি ভোট পায় আর ভিভিপ্যাটের স্লিপ গুণে দেখা গেল ৭২২ হচ্ছে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আবারো গুণতে হবে।
ভিভিপ্যাট যন্ত্রটি আদতে একটি প্রিন্টার। ইভিএমে ভোট দেয়ার পরে ভোটার নিজেই ওই প্রিন্টার থেকে ছাপা হয়ে বের হওয়া কাগজের স্লিপে দেখে নিতে পারবেন যে তিনি যেখানে ভোট দিয়েছেন, সেখানেই ভোট পড়েছে কী না।
তবে ওই প্রিন্টার থেকে কাগজের স্লিপটি ছিঁড়ে নেয়া যাবে না, শুধু চোখে দেখা যাবে।
দুই দশক আগে পর্যন্তও যখন সব বুথে ইভিএম ব্যবহার করা হত না, ব্যালটে ভোট নেয়া হত। তখন গণনা শেষ হতে দুই থেকে তিনদিন পর্যন্ত সময় লাগত।
একেকটি ব্যালট বাক্স প্রার্থীর এজেন্টদের সামনে নিয়ে এসে সিল ভাঙ্গা হত। একই কেন্দ্রের নানা বুথের ব্যালট বড় বাক্সে মিশিয়ে দেয়া হতো, তারপরে একেকটি গোছা ব্যালট পেপার নিয়ে গণনা কর্মীরা প্রার্থীদের নাম লেখা খোপ কাটা বাক্সে ভরতেন প্রার্থীদের প্রতিনিধিদের দেখিয়ে নিয়ে।
তারপরে ব্যালট একটি একটি করে গোণা হত। দিনরাত ধরে চলত ভোট গোনা, যতক্ষণ না চূড়ান্ত ফল বের হচ্ছে।
কিন্তু ইভিএম আসার পর থেকে একটি বোতাম টিপলেই ওই যন্ত্রে কোন প্রার্থী কত ভোট পেয়েছেন, সেই সংখ্যাটি ডিসপ্লে স্ক্রিনে চলে আসে। সূত্র: বিবিসি
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]