শিরোনাম
ওবামা কি মোদিকে ইংরেজিতে ‘তুই’ বলেন !
প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:৪৬
ওবামা কি মোদিকে ইংরেজিতে ‘তুই’ বলেন !
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের তিন দফায় ভোটগ্রহণ হয়েছে। তিনশোর বেশি আসনে ভোট নেয়া হয়ে গিয়েছে। পুরো দেশের কোথাও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষে আগের মতো হাওয়া নেই।


এখন তাই প্রধানমন্ত্রীকে নব নব রূপে মেলে ধরতেই ব্যস্ত গোটা বিজেপি শিবির। যেমনটি হল বুধবার। বলিউড তারকা অক্ষয় কুমারকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নেয়ানো হল। বলা হল, গোটা সাক্ষাৎকারই ‘অরাজনৈতিক’। যদিও তার পরতে পরতে রাজনীতিই গুঁজে দিলেন প্রধানমন্ত্রী।


যা দেখে খোদ বিরোধী দল কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী টুইট করলেন, বাস্তবের সামনে অভিনয় চলে না। জনতার সামনে চৌকিদারের ছলচাতুরি চলে না। চৌকিদার চোর হ্যায়।


জনসভায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরাও বললেন, বড় বড় অভিনেতাকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু নিজের কেন্দ্রের গরিব লোকেদের সঙ্গে দেখা করার সময় নেই তার।


আর দিল্লিতে কংগ্রেসের নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালার কটাক্ষ, একজন ব্যর্থ নেতা অক্ষয় কুমারের মতো অভিনেতাকেও টক্কর দিতে চাইছেন। পারবেন না। বোধ হয় ২৩ মে-র পর বলিউডে বিকল্প রোজগারের পথ খুঁজছেন প্রধানমন্ত্রী।


কিন্তু বিজেপি সূত্র অস্বীকার করছে না, অক্ষয়কে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর ‘অরাজনৈতিক’ সাক্ষাৎকার আসলে ভোটের মধ্যগগনে নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তিতে চমক আনার চেষ্টা। যেখানে প্রধানমন্ত্রী বলছেন, বাইরে তার ভাবমূর্তি যতই কঠোর হোক, আসলে তিনি কখনও রাগেন না। আবার আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপেও বিশ্বাস করেন না। মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা ঘুমিয়ে মেহনত করেন, বাকিদেরও পরিশ্রম করাতে চান।


যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দেখা হলেই তার কম ঘুম নিয়ে উদ্বেগ জানান। সেই প্রসঙ্গে মোদি এমনও বলেন যে, ওবামার সঙ্গে তার সম্পর্কটা ‘তুই-তোকারির’। দেখা হলেই বলে, তুই এমন কেন করিস। আসলে এটা তোর কাজের নেশা।.... এতে নিজেরই ক্ষতি করছিস।


সাজানো ‘অরাজনৈতিক’ সাক্ষাৎকারে অক্ষয়ের প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল না, মোদিকে তুই-তোকারি কি ওবামা ইংরেজিতে করেন? ভাষণের গোড়ায় বলা নমস্তে, ধন্যবাদ, জয় হিন্দের মতো রপ্ত করে আসা শব্দের বাইরে ওবামা কি আদৌ হিন্দিতে কিছু বলতে পারেন?


এরপরে মোদি জানালেন, অবসর নিলেও মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন। তবে অবসরের পরে তার প্রথম চেষ্টা হবে, ঘুম কী ভাবে বাড়ানো যায়।
অক্ষয় ধরতাই দিয়েছিলেন, তার ও মোদীর, দু’জনেরই কোনো গডফাদার বা বিশেষ কোনো পরিবারের উত্তরাধিকার ছিল না। কখনো ভেবেছেন প্রধানমন্ত্রী হবেন? পরিবারতন্ত্রের মতো প্রিয় বিষয়ে অনায়াস গতি মোদির। কথায় কথায় শোনালেন, ছোটবেলায় তার দারিদ্রের জীবন। সাধারণ কোনো চাকরি জুটলে মা হয়তো পাড়ায় গুড় নিয়ে মিষ্টিমুখ করাতেন। চা বেচতে বেচতেই ভাল হিন্দি বলতে শিখেছেন। কখনো ভাবেননি প্রধানমন্ত্রী হবেন ইত্যাদি।


মায়ের প্রশ্নটা বারবারই তোলে কংগ্রেস। অক্ষয়ও করেছিলেন। তাকে হতাশ করে মোদির জবাব, ছোটবেলায় ‘গৃহত্যাগ করেছেন বলেই’ মাকে নিজের সঙ্গে রাখেন না। তাকে আর্থিক সাহায্যও করেন না। উল্টে মায়ের সঙ্গে দেখা হলে মোদিকেই কিছু রুপি দেন তার মা।


সাক্ষাৎকারের ঝলক সামনে আসতেই বিরোধীরা এ নিয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন। তাদের মতে, যখন প্রয়োজন হয়, তখন মাকে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেন প্রধানমন্ত্রী। তা সে ভোট দেয়ার সময় হোক কিংবা নোট বাতিলের সময় বৃদ্ধা মাকে ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড় করানো। তবে মোদি বললেন, একবার প্রধানমন্ত্রী নিবাসে মাকে এনে রেখেছিলাম। কিন্তু নিজের ব্যস্ততার কারণে বেশি সময় দিতে পারিনি। মায়েরও এখানে মন বসেনি।


‘অরাজনৈতিক’ সাক্ষাৎকার বলে নিজের ‘নরম’ ব্যক্তিত্ব যেমন মেলে ধরলেন, তেমনই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মিষ্টি ও কুর্তা পাঠানোর কথা তুলে রাজনৈতিক বার্তাও দিয়েছেন মোদি। কী সেই বার্তা?


কংগ্রেসের এক নেতা বললেন, দেয়াল লিখন স্পষ্ট পড়তে পারছেন মোদি। বুঝতে পারছেন, বিজেপি তো নয়, এনডিএর শরিকদের দিয়েও সরকার হবে না। তাই এনডিএর বাইরের নেতাদেরও কাছে টানার বার্তা দিচ্ছেন। মঙ্গলবার মনোনয়ন পেশের সময়ও তাই নীতীশ কুমার, উদ্ধব ঠাকরেদের নিয়ে যাচ্ছেন। গত পাঁচ বছরে যে শরিকদের উপেক্ষাই করে এসেছেন মোদি ও অমিত শাহ। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com