শিরোনাম
স্পিডব্রেকার দিদি বনাম এক্সপায়ারি মোদি!
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৫৩
স্পিডব্রেকার দিদি বনাম এক্সপায়ারি মোদি!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

একদিকে ‘স্পিডব্রেকার’, অন্যদিকে ‘এক্সপায়ারিবাবু’। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তরজায় উঠে এল এই দু’টি শব্দ।


নির্বাচনী প্রচারে প্রথম দফায় বুধবার শিলিগুড়ির সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে উন্নয়নের পথে ‘স্পিডব্রেকার’ বলে আক্রমণ করেন মোদি। দু’ঘণ্টার মধ্যেই দিনহাটায় তৃণমূলের মঞ্চ থেকে মোদিকে ‘এক্সপায়ারিবাবু’ বলে পাল্টা কটাক্ষ করেন মমতা। আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মোদির বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর চড়িয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র তাকেই আরো বড় ‘স্পিডব্রেকার’ আখ্যা দিয়েছেন।


বিজেপির বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটে নানা বিরোধী দলের আলাদা লড়াইয়ের মধ্যেও সিপিএমের এই অবস্থান রাজনৈতিক শিবিরের নজর এড়ায়নি।


শিলিগুড়ির কাওয়াখালিতে বিজেপির সভা থেকে মোদির অভিযোগ, পাঁচ বছরে দেশে বিকাশের নতুন গতি এসেছে। তবে বাংলায় সেই গতি নেই। কাজ হচ্ছে না। তার কারণ এখানে একটা স্পিডব্রেকার আছে। তার নাম দিদি।


আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান যোজনা, রিয়েল এস্টেট রেগুলেশন অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট আইন এবং চা-বাগানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের বাধায় বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। তাকে (দিদি) না সরালে কিছু হবে না।


দিনহাটায় আবার মমতা পাল্টা বলেছেন, পাঁচ বছরে কী উন্নয়ন করেছি, জানতে চাইছেন? মিথ্যে কথা না বলে আপনি পাঁচ বছরে কী করেছেন, তার কৈফিয়ত দিন। ক্ষমতা থাকলে সরাসরি আমার সঙ্গে বিতর্কে বসুন। আপনি প্রশ্ন করবেন, আমি তথ্য, রেকর্ড নিয়ে তার জবাব দেব।


সভার ভিড়কে ইঙ্গিত করে এ দিন মোদি বলেন, এই জনসমুদ্র দেখেই বুঝতে পারছি দিদির নৌকা ডুবছে। যার জবাবে দিনহাটায় মমতার চ্যালেঞ্জ, আগে দিল্লি সামলাও। পরে বাংলা দেখবে। বাংলার দিকে তাকিয়ে লাভ নেই।


কলকাতায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্তও মোদিকে আক্রমণ করে বলেছেন, স্বাধীনতার পরে দেশের এগোনোর পথে যদি কোনো প্রধানমন্ত্রী স্পিডব্রেকার হয়ে থাকেন, তা হলে সেটা তিনিই। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মোদি যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, তার সবটা অসত্য নয় ঠিকই। কিন্তু এ প্রত্যেকটাই তার বিরুদ্ধে অনেক বেশি করে প্রযোজ্য। এটা তো একটা রাজ্য। উনি দেশ চালিয়েছেন। অনেক বেশি দায়িত্ব তার। জবাবদিহির দায়ও তার। পরে কী হবে, সে পরের কথা। তার তরী তো আগে ডুববে।


রাজ্যে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরোধিতা করেই ভোটে লড়ছে সিপিএম। তাই একই সঙ্গে সূর্যকান্ত বলেছেন, রাজ্যে তৃণমূলের তরী যখন ডোবার উপক্রম হয়েছিল, তখন ফুটো মেরামত করার দায়িত্ব মোদি নিয়েছিলেন। এখন ভোটের সময়ে এসে অন্য কথা বলছেন।


প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, মমতা গরিবকে গরিব রাখতে চান। না হলে রাজনীতি করতে পারবেন না তিনি। চিটফান্ড কেলেঙ্কারি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। গরিবের টাকা গেছে চিটফান্ডে। আর সেই টাকা নিয়ে দিদির মন্ত্রী, বিধায়ক, সঙ্গীরা কেটে পড়েছেন। তারা গরিবদের লুট করেছেন।


মোদিকে জবাব দিয়ে মমতা বলেন, এখনো পর্যন্ত সাড়ে সাত বছরে ২ কোটি ১০ লাখ ছেলেমেয়েকে বৃত্তি দেয়া হয়েছে। স্বরোজগার যোজনায় ৪ লাখ মানুষ সাহায্য পেয়েছেন।


আয়ুষ্মান ভারতের পাল্টা হিসেবে তিনি জানান, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে রাজ্যের বেশির ভাগ মানুষকে। হাসপাতালে এখন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হয়। রাস্তা তৈরি, গ্রামীণ আবাসন এবং একশো দিনের কাজে পশ্চিমবঙ্গ দেশের মধ্যে এক নম্বরে।


তরজায় এসেছে টাকা লুটের প্রসঙ্গও। মমতা বলেন, তৃণমূলকে বলছে লুটেরা! তোমার টাকা খেয়ে লুটেরা, নাকি তোমার বিজেপির টাকা খেয়ে লুটেরা? আপনারা লুটেরাকে টিকিট দেন। আর্মস ডিলারকে টিকিট দেন।


চিটফান্ড প্রসঙ্গে আরো আক্রমণাত্মক মমতা বলেন, ওই কেলেঙ্কারি সিপিএমের আমলে হয়েছে। কিন্তু আপনারা সিপিএম, কংগ্রেসের কোনো নেতার গায়ে হাত দিয়েছেন? বিজেপির উপমুখ্যমন্ত্রীও এমন চিটফান্ডের সঙ্গে যুক্ত। তার গায়ে হাত দিয়েছেন? গায়ের জোরে মিথ্যা বলেছেন এক্সপায়ারিবাবু প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার মেয়াদ এক্সপায়ার করে গিয়েছে।


সিপিএমের সূর্যকান্ত এ প্রসঙ্গে বলেছেন, লুটের কথা মোদি কী বলছেন? তার মেহুলভাই, নীরবভাইয়েরা হাজারা হাজার কোটি রুপি লুটে পালিয়ে গেছেন। অন্যদের দাগী বলছেন মোদি! সব চেয়ে বড় দাগী তো উনি নিজে! রাফাল কেলেঙ্কারি নিয়ে কোনো জবাব আছে?


তৃণমূলের বিরুদ্ধে সারদা বা নারদ-কাণ্ডের তদন্তে পাঁচ বছরে কেন্দ্রীয় সরকার যে প্রায় কিছুই করেনি, সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন সূর্যকান্ত। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com