শিরোনাম
‘রুটিন’ অভিযান ঘিরে আতঙ্ক বাড়ছে কাশ্মীরে
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:৩৬
‘রুটিন’ অভিযান ঘিরে আতঙ্ক বাড়ছে কাশ্মীরে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

ভারত সরকারের দাবি, নেহাতই ‘রুটিন’ বিষয়। কিন্তু পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে তা থেকেই বারবার আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কাশ্মীরে। দীর্ঘস্থায়ী অশান্তি থেকে পাকিস্তানের সাথে সংঘর্ষ, অনেক সম্ভাবনাই ঘুরছে উপত্যকার বাসিন্দাদের মাথায়।


শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাসহ অন্তত ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে বাহিনী। তাদের মধ্যে রয়েছেন জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্ট নেতা ইয়াসিন মালিক ও জামায়াত-ই-ইসলামি নেতা আব্দুল হামিদ ফয়েজ।


পাশাপাশি কাশ্মীরে আরো ১০০ কোম্পানি আধাসেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার। আধাসামরিক বাহিনীর এক একটি কোম্পানিতে সাধারণত ৮০-১৫০ জন সেনাকর্মী থাকেন। ওই বাহিনীকে আকাশপথে শ্রীনগরে নিয়ে যাওয়া হবে। এর মধ্যে থাকছে ৩৫ কোম্পানি বিএসএফ। আসছে আইটিবিপি-ও।


২০০৬ সালে কাশ্মীরে বিএসএফ পাঠানো হলেও এক সপ্তাহ পরই তাদের ফিরিয়ে নেয়া হয়। ১৪ বছর পরে কাশ্মীরে মোতায়েন হতে চলেছে বিএসএফ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, ভোটের আগে এটাও ‘রুটিন’ বিষয়।


জামায়াতের দাবি, জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই শুনানি রয়েছে। তার আগেই যেভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে তাতে বোঝা যায়, সরকারের কোনো ‘গোপন অভিসন্ধি’ আছে।


দিল্লির বিজেপি সূত্রেও খবর, সম্প্রতি ৩৫এ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিজেপি-আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্বের বৈঠক হয়েছে। তাতে স্থির হয়েছে, ৩৫এ অনুচ্ছেদ নিয়ে কিছুটা কড়া অবস্থান নেয়া হবে। কারণ তা না হলে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার বিরুদ্ধে বিজেপির লড়াই কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে। এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে শনিবার কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন খোদ প্রধানমন্ত্রী।


পুলিশের দাবি, গ্রেফতার নেহাতই ‘রুটিন’ পদক্ষেপ। আগেও বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ও পাথর ছোড়ায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, জামায়াত-ই-ইসলামির বিরুদ্ধে এই প্রথম বড় অভিযান চালানো হয়েছে। ওই সংগঠন থেকেই হিজবুল মুজাহিদিনের জন্ম বলে দাবি সরকারের।


তবে তাদের দাবি, অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনও ভোটের আগে ‘রুটিন মহড়া’।


রাতের গ্রেফতারের খবর পাওয়া মাত্রই শনিবার পেট্রোল পাম্প, ওষুধের দোকান ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকানে ভিড় জমান কাশ্মীরীরা। শ্রীনগরের সনানতনগরের বাসিন্দা মুদাসির মোহাম্মদ বলেন, মনে হচ্ছে লড়াই শুরু হতে পারে। তাই জ্বালানি, ওষুধ, খাবার মজুত রাখা ভাল।


লাল চকের এক পেট্রোল পাম্প মালিক জানান, সকাল থেকে কয়েকশো গাড়িতে পেট্রোল ভরেছেন। কী হবে সেটাই কেউ বুঝতে পারছে না।


শ্রীনগরের মেডিক্যাল কলেজে বাতিল হয়েছে সব কর্মীর শীতকালীন ছুটি। রবিবারের মধ্যে হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সামগ্রী সংগ্রহ করতে সব জেলাকে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।


শুক্রবার রাত দেড়টা পর্যন্ত বিমানবাহিনীর বিমানের ওড়ার শব্দে আতঙ্ক আরো বাড়ে। তবে বিমানবাহিনী জানিয়েছে, ‘রুটিন’ মহড়া হয়েছে।


আবার রাজৌরি, কেরন ও কারনার মতো এলাকায় নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলেছে সেনা।রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের মতে, পুলওয়ামা হামলার পর থেকে পাকিস্তানি গোলাবর্ষণ বেড়ে গেছে। তাই বাসিন্দাদের অল্প সতর্ক হয়েছে। আগেও এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে।


সবই ‘রুটিন’ বিষয়। কিন্তু আতঙ্কটা থেকেই যাচ্ছে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com