জম্মু-কাশ্মীরে কেউ অস্ত্র হাতে তুলে নিলেই তাকে গুলি করে হত্যা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতের সেনাবাহিনীর লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল কে এস ধিলোঁ।
সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফ ও পুলিশের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এস ধিলোঁ ওই হুঁশিয়ারি দেন। কোনো অনুপ্রবেশকারী সেদেশে ঢুকলে সে বেঁচে ফিরতে পারবে না বলেও তিনি সতর্ক করেন।
তিনি বলেন, কাশ্মীর উপত্যকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার একশ’ ঘণ্টার মধ্যেই উপত্যকা থেকে জৈশ সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হয়েছে। হামলার নেপথ্যে থাকা জৈশ সন্ত্রাসীদের পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও আইএসআই নিয়ন্ত্রণ করে।
কাশ্মীরের সাধারণ মানুষদের তারা নিরাপত্তা দিতে বদ্ধপরিকর। সেজন্য কোথাও এনকাউন্টার হলে তার কাছাকাছি যেন কেউ না যান সেই পরামর্শ দিয়েছেন সেনা কর্মকর্তা লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল কে এস ধিলোঁ।
বৃহস্পতিবার কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ৪৪ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হন। জৈশ-ই-মুহাম্মদ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
কাশ্মীরে বন্দুক হাতে নিলেই শেষ করে দেয়া হবে বলে ফের উপত্যকার যুব সমাজকে যে বার্তা দিল ভারতীয় সেনা, তা জঙ্গি সমস্যা কমাবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশটির বিরোধীরা।
বিরোধীদের প্রশ্ন হল, ওই দমননীতিতে কি আদৌ কোনো লাভ হবে? কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় এসেই কাশ্মীরের শান্তি ফেরানোর দায়িত্ব কার্যত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের হাতে তুলে দিয়েছিল। শুরু থেকেই কড়া দমননীতির রাস্তা বেছে নেয়া হয়। পাঁচ বছরে উপত্যকায় প্রায় সাড়ে আটশো জঙ্গি নিহত হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে নিহত জঙ্গিদের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে স্থানীয় যুবকদের সংখ্যা। কমছে বিদেশি জঙ্গি। ওই ঘটনা উদ্বিগ্ন করেছে সরকারকে।
কারণ এ যাবৎ কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপের পিছনে পাকিস্তান থেকে পাঠানো বিদেশি জঙ্গিরাই দায়ী বলে সরব হত ভারত। আর পাকিস্তানের যুক্তি ছিল, কাশ্মীরের মানুষ ভারতীয় সেনার ‘আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে স্থানীয় যুবকদের জঙ্গি দলে নাম লেখানোর প্রবণতা ভারতের জন্য যে যথেষ্ট চিন্তার বিষয় বলেই মানছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র কর্মকর্তাদের একাংশের মতে, অতিরিক্ত দমননীতিতে সম্ভবত হিতে বিপরীত হচ্ছে।
তাই লোকসভা ভোটের আগে এভাবে নতুন কড়া বার্তা কাশ্মীরের যুবকদের নতুন করে বিচ্ছিন্ন করে দিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে একাধিক শিবির।
কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি মনে করেন, দমননীতির পথ নিলে বিচ্ছিন্নতাবাদ আরো বাড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। কাশ্মীরি যুব সমাজের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন ছিল । সূত্র: পার্সটুডে ও আনন্দাবাজার পত্রিকা
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]