প্রশাসনের আশ্বাস ও নিরাপত্তার সবরকমের ব্যবস্থা থাকলেও বুধবার শবরীমালা মন্দিরের ধারেকাছেও ঘেষতে পারেননি নারীরা। মন্দিরের ঐতিহ্য রক্ষায় মরিয়া একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের কর্মীরা সুপ্রিম কোর্টের রায় অমান্য করে মন্দির ও মন্দির সংলগ্ন এলাকায় কার্যত তাণ্ডব চালায়।
চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল ও হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে। তাই বুধবারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে বৃহস্পতিবার ভারতের কেরালার রাজ্যের একাংশে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা৷
এদিকে শবরীমালা মন্দিরে দ্বিতীয় দিন সববয়সী নারীদের প্রবেশ রুখতে বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দেয় একাধিক সংগঠন। বনধকে সমর্থন জানিয়েছে বিজেপিও৷ সেই মতো সকাল থেকেই বন্ধ দোকানপাঠ। রাস্তায় হাতে গোনা কিছু গাড়ি চলছে।
শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছরের কোনো নারীর প্রবেশাধিকার এতো দিন ছিল না এই মন্দিরে। এ নিয়ে বহু আন্দোলনের পরে সুপ্রিম কোর্ট রায়ে জানায়, মন্দিরের এই প্রবেশ বিধি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। উপাসনালয়ে সব মানুষের ঢোকার অধিকার থাকা উচিত।
এ রায় মেনে, বিক্ষোভকারীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার মন্দিরের উদ্দেশে রওনা যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিক সুহাসিনী রাজ। এক সহকর্মীকে নিয়ে পুলিশের ঘেরাটপে তারা মন্দিরের কাছাকাছি যেতে পারলেও পরে বিক্ষোভকারীদের চাপে মাঝরাস্তা থেকে ফিরে আসতে হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, পেশাগত কারণে সেখানে গিয়েছিলেন সুহাসিনী। মারাকুট্টামের কাছে যেতেই বিশাল সংখ্যক ভক্তদের দেখে মাঝপথ থেকেই ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সাংবাদিককে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। তাই বাধ্য হয়ে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
বুধবারও মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেয়া প্রথম দুই নারীর পথ আটকায় বিক্ষোভকারীরা৷ ওই নারীদের মধ্যে একজন হলেন লিবি সি এস নামে এক সাংবাদিক। কেরালার বাসিন্দা লিবি শবরীমালা যাওয়ার আগে মঙ্গলবার ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। বুধবার শবরীমালা মন্দির থেকে ৪.৬ কিমি দুরে তার পথ আটকানো হয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যায়।
লিবির মতোই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে শবরীমালা যান মাধবী। পরিবারের সঙ্গে আয়াপ্পা দর্শনে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু মাঝপথ থেকেই তাকে ও তার পরিবারকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। পরে মাধবী জানান, প্রথমে বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা তাদের নিরাপত্তা দিয়ে মন্দিরের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু শবরীমালার কাছে আসতেই তারা সরে পড়েন। এরপর জবরদস্তি মাধবী ও তার পরিবারকে সেখান থেকে চলে যেতে বলা হয়।
বিক্ষোভকারীদের হটাতে পুলিশ এ দিন দফায় দফায় লাঠি চালায়। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে। বিক্ষোভকারীরাও পাল্টা ইট ছোড়ে পুলিশের গাড়িতে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকরাও হামলার মুখে পড়েন। সূত্র: কলকাতা২৪/৭
বিবার্তা/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]