ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে বিধানসভা ভোট এই বছরের শেষাশেষি। তার আগেই 'গোমাতা' নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে শাসক দল বিজেপি বনাম বিরোধী দল কংগ্রেসের মধ্যে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান ঘোষণা করেছেন, গো-পালন যাতে আরো ভালোভাবে করা যায়, তার জন্য পৃথক স্বশাসিত মন্ত্রণালয় গঠন করা হবে। এতে গো-সম্পদের যত্ন, পরিচর্যা আরো সুষ্ঠুভাবে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে রাজ্য গো-পালন ও পশুধন পর্ষদ আছে, কিন্তু তাতে দেখা দিয়েছে আর্থিক টানাটানি। পৃথক মন্ত্রণালয় গঠিত হলে তা দূর করা সম্ভব হবে। তাঁর মতে, গোয়ালঘর মন্দ নয়, যদি গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি পরিবারে অন্তত তিন-চারটি গরু রাখার মতো গোশালা থাকে।
ঘোষণাটি বাস্তবায়িত হলে গো-কল্যাণে মধ্যপ্রদেশ হবে ভারতের দ্বিতীয় রাজ্য, যেখানে থাকবে আলাদা গো-মন্ত্রণালয়। মধ্যপ্রদেশ গো-পর্ষদের বর্তমান চেয়ারম্যান অখিলেশ্বরানন্দ গিরি হবেন মন্ত্রকের ক্যাবিনেট মন্ত্রী।
জৈন দিগম্বর সাধু বিদ্যাসাগর মহারাজ, গো-রক্ষক হিসেবে যাঁর পরিচিতি আছে, এই কাজে তাঁর আশীর্বাদ চান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান।
গো-কল্যাণ নিয়ে পাল্টা তোপ দেগেছে কংগ্রেসও। মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমলনাথ বিদিশা এক জনসভায় অভিযোগ করেন, বিজেপি মুখে যতই বলুক, গো-কল্যাণের কাজ কিছুই করেনি, গোমাতা নিয়ে স্রেফ রাজনীতি করছে। হাজার হাজার গরু অবহেলায় মারা গেছে এবং যাচ্ছে।
কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় এলে রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গোশালা তৈরি করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। বলেন, রাস্তাঘাটে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে গবাদি পশু। গাড়ির ধাক্কায় প্রায়ই মৃত্যু ঘটছে, জখম হচ্ছে। এদের থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। গত ১১ বছর বিজেপি চুপচাপ ছিল, কমলনাথের উদ্যোগের পরই বিজেপির ঘুম ভেঙেছে। তারা এখন নতুন গো-মন্ত্রণালয় গঠনের কথা বলছে।
জবাবে বিজেপি বলেছে, কংগ্রেস জমানায় গবাদি পশুর চারণভূমিতে আস্তানা গেড়েছে জবরদখলকারিরা। ফলে টান পড়েছে গবাদি পশুর খাদ্যে। ২০১৪ সালে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর গো-কল্যাণে গোটা দেশে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে গোশালা।
এদিকে গোরক্ষা নিয়ে দিল্লিতে বিজেপি এবং শাসক দল আম আদমি পার্টির মধ্যেও বেঁধেছে বিরোধ। দিল্লি বিধানসভায় সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে গোশালা তৈরি নিয়ে হাতাহাতি হবার জোগাড়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের অভিযোগ, দিল্লির পৌরসভা ও পুলিশ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তাঁদের কাজে লাগানো হচ্ছে গো-সুরক্ষায়।
বিবার্তা/হুমায়ুন/মৌসুমী
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]