শিরোনাম
পূজায় কলকাতায় কঠোর নিরাপত্তা
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০১৬, ২২:১২
পূজায় কলকাতায় কঠোর নিরাপত্তা
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

আর মাত্র কয়েকটি দিন। তারপরই বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো। শহর থেকে গ্রাম সবজায়গায় পুজোর গন্ধে ম ম করছে। দোকানে দোকানে কেনাকাটার তোড়জোড়। হাতিবাগান থেকে গড়িয়াহাট, নিউমার্কেট-সর্বত্রই এখন জমজমাট পুজোর বাজার। কিন্তু পুজোর মধ্যেও সম্ভাব্য জঙ্গি হামলার আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের।


তারা বলছেন- সারা বছরে একবারই এই উৎসবের দিনগুলি আসে, স্বাভাবিক ভাবেই খুব টেনশন রয়েছি যে, কখন কি হয়।


গোয়েন্দারা বলছেন- জমসমাগমের কারণেই জঙ্গিদের কাছে উৎসবের মৌসুম সবচেয়ে লোভনীয় ও সফট টার্গেট। ঠিক যেমন নিউমার্কেট, লিন্ডসে স্ট্রিট, হাতিবাগান, গড়িয়াহাট। চারদিকে বড় বড় শপিং মল, সিনেমা হল, ক্যাফেটেরিয়া, মার্কেট। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে কেনাবেচা, খাওয়া-দাওয়া, হইহুল্লোড়। সেই কারণেই এবার পুজোর সময় প্রতিটি জনবহুল মার্কেটগুলোতে বাড়তি ভিড়ে নজরদারির ব্যবস্থার করেছে কলকাতা পুলিশ।


একদিকে যেমন ভিড়ের মধ্যে মিশে টহল দিচ্ছে সাদা পোশাকের পুলিশ অন্যদিকে সিসিটিভিতে লাগাতার চলছে নজরদারি।


কলকাতা পুলিশের হেডকোয়ার্টার লালবাজার সূত্রে জানা গেছে, শহরজুড়ে একদিকে যেমন গোয়েন্দা পুলিশ এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের সাদা পোশাকের পুলিশের নজরদারি চলছে তেমনই তৎপর স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। মুম্বাই, বেঙ্গালুরু ও হায়দ্রাবাদসহ অন্য রাজ্যের গোয়েন্দাদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে সন্দেহভাজন ও জঙ্গিদের লিঙ্কম্যানের গতিবিধির ওপর নজর রেখে চলেছে এসটিএফ।


জঙ্গিরা যদি ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালায় তার মোকাবিলা করতে জায়গায় জায়গায় তৈরি হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার, যেখানে মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীকে। পাশাপাশি বালির বস্তা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাঙ্কার, যেখানো মোতায়েন করা হয়েছে স্পেশাল অ্যাশন ফোর্সের কমান্ডোদের।


পঞ্চমী থেকে পুলিশ পিকেট থাকছে শহর জুড়ে। গোটা শহরজুড়েই থাকবে জঙ্গি মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কমান্ডো বাহিনী এবং বম্ব ডিস্পোজাল স্কোয়াড। বিভিন্ন রাস্তায় টহল দেবে কলকাতা পুলিশের রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, হাই রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড এবং কুইক রেসপন্স টিম।


কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত নগরপাল সুপ্রতিম সরকার জানান, পঞ্চমী থেকে নবমী-পুজোর দিনগুলিতে পূর্ণাঙ্গ পুলিশি বন্দোবস্ত থাকবে। বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাসহ প্রায় ১২ হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন রাখা হবে। শহরে যে টহলদারি ব্যবস্থা রয়েছে সেটাকেও অনেক বেশি জোরদার করা হয়েছে। প্রায় ২১টি কুইক রেসপন্স টিম রাখা হবে যাতে কোনো রকম নাশকতা হলে সেখানে দ্রুত পৌঁছতে পারে। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ৭৬ টি অতিরিক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে।


পুজোর সময় জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না ভারতের সাবেক সেনা কর্মকর্তারাও। তাদের মতে জঙ্গিদের স্লিপার সেল পুরো দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ হল দ্বিতীয় রাজ্য যেটা খুবই অরক্ষিত, বিশেষ করে কলকাতা। যেকোন সময় জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে।


পুলিশ সূত্রের দাবি, পুজো মণ্ডপগুলোর সিসিটিভির ওপর যাতে সবসময় নজরদারি চালানো হয় সে বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হবে। প্রয়োজনে পুলিশের পক্ষ থেকে পুজো কমিটিগুলিকে সহায়তাও করা হবে। পুজোর সময় মেট্রোতেও উপচে পড়া ভিড় থাকে। এ বিয়য়গুলিকেও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।


কলকাতাতেই রয়েছে পূর্বাঞ্চলীয় সেনা সদর দফতর। ফোর্ট উইলিয়ামের মধ্যে আবাসনে পরিবার নিয়ে থাকেন বহু জওয়ান। তাই গোয়ন্দাদের আশঙ্কা কলকাতাতে হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। কলকাতাকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদড়ে ঢেকে ফেলতে শহরের প্রবেশ ও বেরোনোর ২০টি পয়েন্টে চেকিং চালাচ্ছে পুলিশ। গোয়েন্দাদের স্ক্যানারে রয়েছে ধর্মতলার মতো বড় বাস স্ট্যান্ডও। কারণ এখানে প্রতিদিনই অন্য রাজ্য থেকে কয়েক হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করেন। তাই বাড়তি নজর দেয়া হয়েছে সেখানেও।


বিবার্তা/ডিডি/রয়েল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com