ভারতের কেরালায় ভয়াবহ বন্যার মধ্যে জায়গা না পেয়ে মন্দিরে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। ঈদ তাদের জীবনে কোনো আনন্দ বয়ে না আনলেও নামাজ আদায় করে খুশি তারা।
বন্যাকবলিত এই মানুষদের জীবন যে ইতিমধ্যেই হয়ে উঠেছে অভিশপ্ত। শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ংকর বন্যায় আক্রান্ত এই মানুষদের সামনে যে কোনো পথই খোলা ছিল না ঈদ উদযাপনের। কিন্তু তারপরও, ধর্মীয় রেওয়াজ মেনে যেটুকু পারা যায় তা তো করতেই হবে। আর কিছু না হোক, ঈদের নামাজটা তো পড়তে হবে।
অথচ সেই নামাজটাও বা কীভাবে পড়বেন তারা? গোটা অঞ্চলই যেখানে পানির নিচে, রেহাই পায়নি যে অধিকাংশ মসজিদও! ফলে অনেক মুসলিমের ভাগ্যে এদিন জোটেনি ঈদের ওয়াজিব নামাজ পড়ার সৌভাগ্যটুকুও।
তবে এ দিনই সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন থৃসুর জেলার সনাতন ধর্মালম্বীরা। মালায় অবস্থিত পুরাপ্পিল্লিকাভু রক্তেশ্বরী মন্দিরের দরজার তারা খুলে দিয়েছেন মুসলিমদের জন্য, যাতে করে তারা ওই মন্দির প্রাঙ্গনেই আদায় করতে পারে ঈদের নামাজ!
স্থানীয়রা জানান, ঈদের দিন সকালেও বন্যাকবলিত ওই অঞ্চলের অধিকাংশ মসজিদই জলাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। কিন্তু মন্দির কর্তৃপক্ষের বদান্যতায় নামাজ পড়ার সুযোগ হয়েছে তাদের। মন্দিরের ভেতর মুসলিমদের নামাজ পড়তে দেয়া সত্যিই এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। কিন্তু সেটিকেই বাস্তবে রূপ দিয়েছেন মন্দিরটির কর্তাব্যক্তিরা।
স্থানীয় একজন বলেন, “সবার আগে আমরা মানুষ। শুধু এরকম দুর্যোগে পড়ে নয়, সবসময়ই আমাদের স্মরণেন রাখা উচিৎ যে আমরা একই ঈশ্বরের সন্তান। আশা করি এই সম্প্রীতির বন্ধন অব্যহত থাকবে আগামী দিনগুলোতেও, যাতে করে এখনও যেসব মানুষের সাহায্য প্রয়োজন তাদের জন্য আমরা সকলে সংঘবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে পারি।”
এভাবে কেরালার কিছু সংখ্যক মুসলিমের ভাগ্যে ঈদের নামাজ পড়ার সুযোগ জুটেছে বটে, কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষই এদিন বিরত ছিলেন ঈদের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালন থেকে। এর পরিবর্তে বন্যায় আক্রান্ত অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোকেই তারা অধিক প্রাধান্য দিয়েছেন।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কেরালার প্রতিটি মানুষই কাজ করে চলেছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার। আর তাদের সাথে সামিল হয়েছেন দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষও।
সূত্র: ইন্ডিয়ান টাইমস
বিবার্তা/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]