শিরোনাম
যাদের নাম তালিকায় নেই, তারা অনুপ্রবেশকারী: বিজেপি সভাপতি
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০১৮, ১১:৩৫
যাদের নাম তালিকায় নেই, তারা অনুপ্রবেশকারী: বিজেপি সভাপতি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কোনো লুকোছাপা রাখলেন না ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। আসামের নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত খসড়া থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখ মানুষকে ‘বেআইনি অনুপ্রবেশকারী’ বলেছেন তিনি।


এছাড়া ২০১৯ সালের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের’ বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলার পথে হাঁটলেন শুরু থেকেই। মন্ত্রীদের মতো চূড়ান্ত তালিকায় নাম তোলার সুযোগ এখনো রয়েছে’ বলে আশ্বাস দেয়ার ধার না-ঘেঁষে মঙ্গলবার অমিতের স্পষ্ট ঘোষণা, যাদের নাম তালিকায় নেই, তারা অনুপ্রবেশকারী।


পাশাপাশি নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি ইস্যুতে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সাধারণ জ্ঞান নিয়েও কটাক্ষ করেন অমিত শাহ। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ক্ষমতায় এলে বাংলাতেও হবে এনআরসি৷


কংগ্রেসসহ সব বিরোধী দলের মতে, বিভাজনের রাজনীতি করতে এটা মেরুকরণের তাস। কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারির প্রশ্ন, কিসের ভিত্তিতে ৪০ লাখের সবাই অনুপ্রবেশকারী বলে চিহ্নিত করলেন বিজেপি সভাপতি? এর জবাব দেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি অমিত।


২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী তাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েই বিজেপি ক্ষমতায় এসেছিল। গত চার বছরে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের মুখে শব্দটা শোনা যায়নি। কিন্তু আসামে ক্ষমতায় আসতে ওই একই অস্ত্র প্রয়োগ করেছিল বিজেপি। এবার ২০১৯’র আগে আস্তিন থেকে পুরনো অস্ত্র বের করলেন বিজেপি সভাপতি।


অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আসামের মানুষের ক্ষোভ উস্কে দিতে অমিতের মন্তব্য, লোকে মানবাধিকারের কথা বলে। অসমীয়াদের মানবাধিকার নেই? তাদের রোজগারের সুযোগ যখন অনুপ্রবেশকারীরা কেড়ে নেয়, তখন মানবাধিকারের প্রশ্ন আসে না!


বিজেপি সভাপতির আরো প্রশ্ন, অনুপ্রবেশকারীদের মদত দিলে দেশের সীমান্ত ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কী ভাবে নিশ্চিত হবে?


বিরোধীরা বলেন, বিজেপি সভাপতির এই উস্কানি শুধু আসামে সীমাবদ্ধ থাকবে না। দেশের অন্য রাজ্যেও বাংলাভাষী মুসলিমদের বাংলাদেশী বলে সন্দেহ করা হবে। অন্য রাজ্যে কাজ করতে গেলে তারা স্থানীয় মানুষের চাকরিতে ভাগ বসাচ্ছেন বলে আঙুল তোলা হবে। আর বিজেপি এই মেরুকরণই চাইছে।


মোদি সরকার যে ‘বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের’ মধ্যে হিন্দুদের আশ্রয় দিতে চায়, মুসলিমদের নয়, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল আগেই। শুধু মুসলিমদের বাদ দিয়ে, হিন্দু-বৌদ্ধ-শিখদের ‘শরণার্থী’ তকমা দিয়ে নাগরিকত্ব দিতে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের বিলও এনেছে সরকার। বিজেপি মুসলিম বাদে বাকি বাংলাদেশীদের শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় দিতে চাইলেও নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়া ৪০ লাখ মানুষের কত জন হিন্দু বা মুসলিম, সেই তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি।


জল্পনা চলছে, তাদের অধিকাংশ হিন্দু। কিন্তু তা নিয়ে প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে অমিতের দাবি, এমনটা নয়। তালিকা প্রকাশ হলে দেখতে পারবেন, কতজন হিন্দু।


মুসলিমদের যে শরণার্থী হিসেবে জায়গা দেয়ার প্রশ্ন নেই, তা স্পষ্ট করে দিয়ে অমিত বলেন, যারা নিজের অস্তিত্ব বাঁচাতে, ধর্ম বাঁচাতে এক দেশ থেকে অন্য দেশে আসেন, তারা শরণার্থী। কিন্তু যে রোজগার বা অন্য কারণে বেআইনিভাবে ঢোকে, সে অনুপ্রবেশকারী। বিজেপির মনে এ নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই।


সিপিএম নেতা মোহাম্মদ সেলিমের প্রশ্ন, নাগরিকত্ব কি ধর্ম, ভাষার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে? এ তো কোনো রাজ্যের নাগরিকত্ব নয়। দেশের নাগরিকত্ব।


কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, অমিত শাহও ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ নীতিতে ভোট কুড়াতে চাইছেন। এই রাজনীতিকে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com