শিরোনাম
অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে মোদির বিশাল জয়
প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০১৮, ০৯:২৬
অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে মোদির বিশাল জয়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

প্রত্যাশা মতোই বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে পর্যুদস্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু বিপক্ষকে ধূলিসাৎ করে যে নিরঙ্কুশ জয় পেতে তিনি সাধারণভাবে অভ্যস্ত, ঠিক তেমনটা ঘটেনি শুক্রবার।


ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ লোকসভায় প্রায় ১২ ঘণ্টার বিতর্ক শেষে ভোটাভুটিতে এই অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে পড়ে ৩২৫ ভোট। আর প্রস্তাবের পক্ষে পড়ে ১২৬ ভোট। মোট ৪৫১ জন এমপি ভোট দেন।


লোকসভার এইমুহূর্তে সদস্য সংখ্যা ৫৩৩। তারমধ্যে শিবসেনার ২৯ জন অনাস্থা ভোট ও আলোচনা দুটোই বয়কট করে। বিজেডির ১৯ জন বিধায়কও আলোচনা শুরু হতেই কক্ষত্যাগ করেন। আলোচনায় আগাগোড়া উপস্থিত থেকেও ভোট দেননি লোকতান্ত্রিক জন অধিকার পার্টির এমপি পাপ্পু যাদব।


এ দিন সকালে আচমকা আলিঙ্গনে যে লড়াইটা বিজেপি শিবিরে পৌঁছে দিয়েছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, নিজের বক্তৃতায় মোদি তার জবাব দেবেন এমনটাই আশা ছিল শাসক পক্ষের। কিন্তু রাত ৯টার পরে প্রধানমন্ত্রী যখন বলতে উঠলেন, তখন দেখা গেল, মোদি ঠিক মোদিতে নেই। রাজনীতির ময়দানে সাধারণভাবে নিজের নিয়মে খেলতে পছন্দ করেন মোদি। কিন্তু আজ তাকে খেলতে হল রাহুলের ঠিক করে দেয়া পথে এবং প্রতি পদে বোঝা গেল, তিনি ঠিক স্বচ্ছন্দ নন।


কটাক্ষের সুরে রাহুলের আলিঙ্গনের জবাব দিলেন, কিন্তু সেটা ঠিক প্রধানমন্ত্রীসুলভ হল না। তার পরেও প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে যা বললেন, সেটা তার সরকারের বহুশ্রুত সাফল্যগাথা, যা বিরোধী দল ও নেটদুনিয়ার একটা বড় অংশের মতে ‘ঘুমপাড়ানি’। ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন বিজেপির এমপিরাও।


বক্তব্যের শুরু থেকেই রাহুলের একের পর এক মন্তব্যকে হাতিয়ার করে তাকে কটাক্ষ করেন মোদি। এমনকী তার জড়িয়ে ধরার পিছনেও ‘ক্ষমতা দখলের প্রবল ইচ্ছা’- দায়ী বলে অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদি বললেন, যিনি আমার আসনে বসার স্বপ্ন দেখেন তিনি এখানে এসে আমাকে বললেন উঠুন, উঠুন। ক্ষমতা দখলের ইচ্ছা এতই প্রবল যে মানুষের উপর ভরসা না করে নিজেই আমাকে আসন থেকে সরাতে চলে এলেন। রাহুলের জড়িয়ে ধরার এই ব্যাখ্যা শুনে অবশ্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ ভ্রু কুঁচকেছেন।


বিরোধীদের বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ করলেও এদিন রাহুলের অধিকাংশ প্রশ্নেরই উত্তর দেননি প্রধানমন্ত্রী। গান্ধী পরিবারকে আক্রমণ করতে গিয়ে সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে প্রণব মুখার্জী, শরদ পাওয়ারের নামকেও টেনে আনেন প্রধানমন্ত্রী। তুলে আনেন রাহুলে চোখ মারার প্রসঙ্গও। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোটা দেশ দেখছে কীভাবে চোখের খেলা দেখাচ্ছে বিরোধীরা।


মোদির বক্তব্য, কংগ্রেস নিজেদের উপরই আস্থা হারিয়ে ফেলছে, আর সেকারণেই সরকারকে বিশ্বাস করতে পারছে না। কংগ্রেস নিজেকে বিশ্বাস করে না বলেই সরকারের নির্বাচন কমিশন, ইভিএম, সুপ্রিম কোর্ট, কেন্দ্রীয় এজেন্সি গুলোকে বিশ্বাস করতে পারছে না। নেতিবাচক রাজনীতি করছে বিরোধীরা, নেতিবাচক রাজনীতি যারা করেন তাদের মুখোশ খুলে গিয়েছে।


তবে শেষ পর্যন্ত অনাস্থা বিতর্কের আলোর বেশির ভাগটাই শুষে নিলেন রাহুল। যদিও শাসক শিবিরের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীকে আলিঙ্গন করে আর ‘চোখ মেরে’ নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছেন রাহুল। একটা ভারতীয় সংস্কৃতির পরিচয় নয়। প্রধানমন্ত্রীর পদের মর্যাদা না রেখে রাহুল আসলে নিজের পায়েই কুড়াল মেরেছেন। তার আচরণ শিশুসুলভ।


অন্য দিকে, ম্রিয়মান মোদিকে দেখে উচ্ছ্বসিত বিরোধীরা। মোদির বক্তৃতা কেমন লাগল, এই প্রশ্নের জবাবে লোকসভা ছাড়ার সময় তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে রাহুল বলে গেলেন ‘দুর্বল’। সোনিয়াও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় নতুন কিছু নেই। সব পুরনো। আর সদ্য এনডিএ ছেড়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনা টিডিপির শীর্ষ নেতা, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর মন্তব্য, দুর্ভাগ্য, প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা ও সংবাদ প্রতিদিন


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com