ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের মুক্ত বাণিজ্য চালুর পক্ষে মত দিলেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তার দাবি, এর মাধ্যমে একাধিক পণ্যের কালোবাজারি এবং বেআইনিভাবে পাচার রোধ করা যাবে।
রবিবার বিকালে নিজের সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেন, ‘ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের মধ্যে বহু বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের আমদানি-রপ্তানির ওপর বিধি-নিষেধ চলে আসছে। এর ফলে কেবল বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতাই বাড়িয়ে তুলছে না; বরং অবৈধ বাণিজ্যকেও উৎসাহিত করছে। অথচ এই পণ্যগুলো পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ চলে যাচ্ছে। সেখানে কোনো বিধিনিষেধ নেই।’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘১৭ টি পণ্য যাতে ত্রিপুরা থেকে সরাসরি বাংলাদেশে রপ্তানি করা যায়, সে ব্যাপারে সোমবার মেঘালয়ের শিলংয়ে অনুষ্ঠিত নর্থ ইষ্টার্ন কাউন্সিলের (এনইসি) বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। এই ১৭টি পণ্যের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করে রাখা হয়েছে। যে কারণে পণ্যগুলো কালোবাজারি এবং বেআইনিভাবে পাচার হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এতে রাজ্যে সরকারের বিরাট আর্থিক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।'
তিনি আরও জানান, ‘ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাথে গত মে মাসে সর্বশেষ বৈঠকে আমি তাকে আমদানি ও রপ্তানি বিধি-নিষেধ তুলে দেয়ার আরজি জানিয়েছিলাম। প্রাথমিকভাবে আনারস, কাঁঠাল, গোল মরিচ, কাজু বাদাম, কমলালেবু, বাঁশ, রাবারসহ ১৭টি পণ্যের একটি তালিকা আমি তাকে তুলে দিই। এই পণ্যগুলো ত্রিপুরা থেকে সরাসরি বাংলাদেশ রপ্তানি করা যায় না।’
বিপ্লব দেবের লক্ষ্যই হলো সীমান্তে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যকে পুনরুজ্জীবিত করা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই মুক্ত বাণিজ্য নীতি। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ মাছ, সবজিসহ বহু পণ্য পেয়ে থাকি আর সেই কারণেই আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর সীমান্ত হাট স্থাপন করা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আরও চারটি অতিরিক্ত সীমান্ত হাট স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছি, যাতে বৈধ বাণিজ্যের মধ্যে দিয়ে ত্রিপুরা আর্থিক উন্নয়ন হতে পারে।’
খাদ্যের সন্ধানে ত্রিপুরার পার্বত্য এলাকার উপজাতি অংশের মানুষ বাংলাদেশে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে রাজ্যটির সিপিআইএম সাংসদ ও দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জীতেন্দ্র চৌধুরী যে অভিযোগ করেছিলেন সে প্রসঙ্গে বিপ্লব দেব বলেন, ‘বিরোধীরা বলছেন যে- এ রাজ্যের মানুষ না খেয়ে মরে যাচ্ছে, তারা বাংলাদেশে চলে যাচ্ছে। আমিও বাংলাদেশে যাই, সেখানে আমারও আত্মীয় স্বজন আছে। এখানেও অনেক বন্ধুরা আছেন যারা বাংলাদেশ যান। কিন্তু এখানে তাদের বাড়িতে খাদ্য নেই বলে তারা বাংলাদেশে যান এমনটা তো নয়। বিরোধী দলের নেতারা নতুন জিনিস আবিস্কার করছেন যে বাংলাদেশে যারা যায় তাদের বাড়িতে খাদ্য নেই। এতে শুধু ত্রিপুরাবাসীকে বদনাম করা নয়, সরকারকেও বদনাম করা হচ্ছে, ত্রিপুরার ছবিটাকেও খারাপ করা হচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্যেশ্যে এই জিনিস করা উচিত নয়।’
বিবার্তা/ডিডি/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]