শিরোনাম
ব্যাপক অর্থসংকটে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস
প্রকাশ : ২৪ মে ২০১৮, ১২:৩৯
ব্যাপক অর্থসংকটে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

কমবেশি প্রায় ৬৫ বছর ভারতকে শাসন করেছে কংগ্রেস। বছর চারেক আগেও বেশিরভাগ ভূখণ্ড ছিল দেশটির সবচেয়ে পুরনো দলের শাসনাধীনে। অথচ ক্ষমতা হারানোর চার বছরের মধ্যেই প্রবল অর্থসংকটে ভুগছে সভাপতি রাহুল গান্ধীর দলটি।


একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গত পাঁচ মাস ধরে দলের রাজ্য শাখাগুলোতে টাকা পাঠাতে পারছে না এআইসিসি। ফলে রাজ্য দফতরগুলোতে রীতিমতো অর্থসংকট। এমনকি অফিসের কর্মীদের বেতনও সময় মতো দিতে পারছে না প্রদেশ কমিটিগুলো।


অর্থের অভাবে ভোটের প্রচারেও পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির থেকে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি রাজ্যের নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রচার চলাকালীন অর্থসংকট চূড়ান্ত রূপ নিয়েছিল। এক সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতার দাবি, উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে প্রচারে যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিটের টাকাও যথাসময়ে দিতে পারেনি এআইসিসি।


দেশের প্রথম সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের এহেন অর্থনৈতিক সংকটের কারণ কী? রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের শোচনীয় ফলাফলই এর জন্য দায়ী। নির্বাচনের পর কংগ্রেসকে ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বড় বড় করপোরেট সংস্থা থেকে যে বিপুল পরিমাণ চাঁদা আসত তা প্রায় বন্ধ।


তাছাড়া ১৪’র নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যগুলোতেও ক্ষমতা হারাতে শুরু করেছে কংগ্রেস। বিজেপি যখন ২১টি রাজ্যে শাসন করছে তখন কংগ্রেস গুটিয়ে গেছে মাত্র তিনটি ছোট রাজ্যের মধ্যে। স্বাভাবিকভাবেই কমছে আয়।


এদিকে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নগদে চাঁদা নেয়া বন্ধ। চাঁদা দিতে গেলে দিতে হচ্ছে ইলেকটোরাল বন্ডের মাধ্যমে। বিজেপির তুলনায় ইলেকটোরাল বন্ডের মাধ্যমে কংগ্রেসের প্রাপ্ত চাঁদার পরিমাণ নিতান্তই নগণ্য।


এক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৭ সালে বিজেপির রোজগার ছিল ১০৩৪ কোটি। সেখানে কংগ্রেসের আয় ছিল মাত্র ২২৫ কোটি রুপি। যা ২০১৬ সালের তুলনায় ১৪ শতাংশ কম। সর্বভারতীয় স্তরে দল চালানোর জন্য এই পরিমাণ অর্থ যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছে কংগ্রেস নেতারা।


সমস্যা মেটাতে দলের শীর্ষনেতাদের কাছে হাত পাততে বাধ্য হয়েছে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটি। দলের তরফে নেতাদের আরো বেশি চাঁদা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায় রোজগার বাড়ানোর। সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন জানানো হচ্ছে যাতে চাঁদা দেয়ার পরিমাণ বাড়ানো যায়। খরচ কমানোর জন্য যাতায়াতের খরচ কমাতে বলা হয়েছে সর্বভারতীয় নেতাদের।


এমনকি দলীয় কার্যালয়ে অতিথিদের চা-জলখাবারের খরচও কমাতে বলা হয়েছে। বিজেপি যেখানে কয়েকশো কোটি টাকা খরচ করে ঝাঁ চকচকে দলীয় কার্যালয় তৈরি করে ফেলেছে, সেখানে অর্থাভাবে পার্টি অফিসের কাজে হাত লাগাতে পারেননি রাহুলরা।


সামনেই ২০১৯ নির্বাচন। বিরোধী দলগুলোকে একত্রিত করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারকে উৎখাত করার ডাকও দিয়েছেন রাহুল। কিন্তু ভোটের আগে এহেন অর্থসংকট সামলে প্রচারে মোদীকে কতটা টক্কর দিতে পারবে কংগ্রেস, সন্দিহান রাজনৈতিক মহল।


তাছাড়া বিজেপি যেভাবে প্রচারের বেশিরভাগ আলো দখল করে বসে আছে তাতে এমনিতেই বেশ চাপে কংগ্রেস। এর মধ্যে আবার নতুন করে অর্থসংকট তৈরি হলে ভোটের লড়াইটা অসম হয়ে যাবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।


কংগ্রেস নেতারা অবশ্য দাবি করছেন, প্রচারের অর্থ না থাকলেও মানুষ তাদের সঙ্গেই আছেন। আর লোকবলে ভর করেই ২০১৯-এ দেশের প্রতিটি কোণে পৌঁছে যাবেন তারা। তাছাড়া দেশজুড়ে যে মোদীবিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছে তা যদি আগামীদিনে আরো প্রবল হয় তাহলে ফের বিজেপির বদলে কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকতে পারে করপোরেটরাও। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com