মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় দিয়ে রাজ্যটির তৃণমূল কংগ্রেস সরকার দেশবিরোধী কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজেপি'র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার অভিযোগ, এই কাজে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সরকারের প্রতিনিধিরাও যুক্ত রয়েছেন। একে পুরোপুরি দেশদ্রোহিতা বলেও আখ্যায়িত করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে মঙ্গলবার রাতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বারুইপুরের হড়দহ গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা মুসলিম। এর আগেও বিভিন্ন দফায় প্রায় শতাধিক রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন।
কলকাতা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে খড়দহে অস্থায়ী শিবির খুলে তাদের আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করেছে ‘বাঁচাও সামাজিক কমিটি’ নামে একটি স্থানীয় এক এনজিও।
এবিষয়ে ওই এনজিও'র সম্পাদক হোসেন গাজি জানান, টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবিরে তাদের কার্যালয় রয়েছে। সেখান থেকেই মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের এখানে আনা হচ্ছে।
বুধবার বারুইপুর সফরে গিয়ে গণমাধ্যমের কাছে বিজেপি'র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে এই জেলায় বসানো হচ্ছে। দেশ বাঁচাও নামে একটি এনজিও আছে তারাই দেশবিরোধী কাজ করছে। সেই এনজিও'র সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ, বিডিও, এসডিও'রা যুক্ত রয়েছেন।
তার অভিযোগ, বিদেশি নাগরিকদের নিয়ে এসে এখানে বসানো হচ্ছে, চাঁদা তোলা হচ্ছে এবং তাদেরকে আশ্রয় দেয়া হচ্ছে। এসব পুরোপুরি বেআইনি। এর সঙ্গে এনজিও'র লোকেরা যেমন যুক্ত রয়েছেন তেমনি সরকারের প্রতিনিধিরাও যুক্ত রয়েছেন। এতে সরকারের সরাসরি মদদ আছে। এটা দেশদ্রোহিতা।
দিলীপ ঘোষের অভিমত, কেন্দ্রীয় সরকারকে না জানিয়ে কোনো বিদেশি নাগরিককে এখানে কেউ রাখতে পারে না। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সবসময় কেন্দ্রের নীতির বিরুদ্ধে। আজ দেশের বিরুদ্ধে তারা কাজ করছেন। দেশবিরোধী কার্যকলাপকে তারা প্রশ্রয় দিচ্ছেন, শেল্টার দিচ্ছেন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা।
রোহিঙ্গারা দেশের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি বলে মন্তব্য করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, তারা এদেশে শরণার্থী হিসাবে থাকতে পারবে না। হলফনামা দিয়ে আগেই দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে তা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজুজও জানিয়েছেন যে, রোহিঙ্গারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। তাই ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের চিহ্নিতকরণ করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।
কেন্দ্রের ওই নীতির সমালোচনা করে রোহিঙ্গাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে এই বিষয়টি দেখা উচিত বলে সেসময় বিভিন্ন জনসভায মমতা তার মতামত জানিয়েছিলেন। মমতার অভিমত ছিল সকল উদ্বাস্তুরাই সন্ত্রাসী নয়।
বিবার্তা/ডিডি/কামরুল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]