শিরোনাম
ত্রিপুরায় বিধানসভার ভোট গ্রহণ শুরু
প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১০:২৮
ত্রিপুরায় বিধানসভার ভোট গ্রহণ শুরু
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ভারতের বামশাসিত রাজ্য ত্রিপুরায় বিধানসভার নির্বাচন শুরু হয়েছে। রবিবার সকাল ৭টা শুরু হয় ভোট গ্রহণ, চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের লাইন চোখে পড়েছে। সকালেই ভোট দিয়েছেন রাজ্যটির বিজেপি সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব।


একটি মাত্র পর্বে ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভার ৫৯টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। চড়িলাম (তফসিল উপজাতি সংরক্ষিত) কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী রমেন্দ্র নারায়ন দেববর্মার মৃত্যুর কারণে ওই আসনটিতে ভোট নেয়া হবে আগামী ১২ মার্চ। মোট ভোটারের সংখ্যা ২৫,৭৩,৪১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩,০৫,৩৭৫ এবং নারী ভোটার ১২,৬৮,০২৭ জন, তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ১১ জন। মোট ৩১৭৪টি বুথে ভোট গ্রহণ চলছে।


৬০ আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট সবকয়টি আসনেই তাদের প্রার্থী দিয়েছে (সিপিআইএম-৫৭, আরএসপি-১, ফরওয়ার্ড ব্লক-১, সিপিআই-১টি আসন)। বিজেপি ৫১টি আসনে ও তাদের জোট সঙ্গী ইন্ডিজিনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (আইপিএফটি) ৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। অন্যদিকে কংগ্রেস ৫৯টি আসনে, তৃণমূল কংগ্রেস ২৪ আসনে প্রার্থী দিয়েছে।


এবারের নির্বাচনে মোট ৩০৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে ত্রিপুরার চতুর্থবারের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, স্বাস্থ্য ও পূর্ত দফতর মন্ত্রী বাদল চৌধুরী, উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী অঘোর দেববর্মা, সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর, দলের মুখ্য প্রবক্তা গৌতম দাস, শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী, বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ভানুলাল সাহা।


বিজেপির প্রতিমা ভৌমিক, রতন লাল নাথ, সুদীপ রায় বর্মণ, সুরজিত দত্ত, আশিস কুমার সাহা, দিলীপ সরকার, সুবল ভৌমিক, প্রাণজিত সিং রায়। জাতীয় কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ব্রিজিত সিনহা, কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল রায়, সাবেক মন্ত্রী লক্ষী নাগ, ফণি লাল দেববর্মা।
আইপিএফটি বৃষকেতু দেববর্মা, ধীরেন্দ্র দেববর্মা। ত্রিপুরা পিপলস পার্টির (টিপিপি) অনন্ত উরং, প্রবীন সিংহ। তৃণমূল কংগ্রেসের সৌমেন মজুমদার, কৃষ্ণ কান্ত দেবনাথ প্রমুখ।


শুক্রবার বিকালে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার। শাসকদল সিপিআইএম থেকে শুরু করে বিরোধী কংগ্রেস, বিজেপি প্রতিটি দলই তাদের সাধ্যমতো প্রচার করেছে। গত প্রায় কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিজেপি নেতা শাহনাওয়াজ হোসেন, আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল, অভিনেত্রী-মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, বলিউড অভিনেত্রী হেমা মালিনী, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস নেতা সিপি যোশী, সিপিআইএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, দলের নেত্রী বৃন্দা কারাটরা ত্রিপুরায় উড়ে এসে নিজেদের দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে ঝড় তুলেছেন।


মাটি কামড়ে প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারসহ অন্য বাম নেতারাও। ভোট প্রচারে নজরকাড়া কভারেজে হাজির ছিলেন দেশটির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। তবে সিপিআইএমের এবারের লড়াইটা বিজেপির বিরুদ্ধে।


২০১৮ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন সবদিক থেকেই ঐতিহাসিক হয়ে পড়েছে। কারণ এবারের ভোটে যেভাবে গোটা রাজ্যে নজিরবিহীন নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে সেটা অতীতের কোন বির্বাচনেই নেয়া হয়নি। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে গোটা ত্রিপুরাকেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। প্রায় ৩০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।


এছাড়াও রাজ্য পুলিশ ও ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের (টিএসআর) সদস্যরাও মোতায়েন থাকছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় নজরদারির পাশাপাশি আকাশপথেও নজরদারি করা হবে। যে কোনো নাশকতা রুখতে বিভিন্ন হোটেল, লজ, রিসোর্টগুলোতে অভিযান চালানো হচ্ছে।


আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে যাতে অনুপ্রবেশসহ অন্য অপরাধ সংঘটিত না হয়, তা নিশ্চিত করতে সিল করে দেয়া হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত। সীমান্ত এলাকায় সজাগ দৃষ্টি রেখে চলেছে বিএসএফ জওয়ানরা।


পরিবর্তনের ডাকে ভর করে ত্রিপুরায় টানা ২৫ বছরের বাম জমানার অবসান হবে না কি ফের লালের ওপরেই ভরসা রাখবেন-তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৩ মার্চ ভোটের ফলাফলের দিকে। যদিও এবারো তারাই ক্ষমতা দখল করবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সিপিআইএম।


বিবার্তা/ডিডি/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com