শিরোনাম
শাড়ি বিতর্কে খোলা চিঠি লিখে দুঃখ প্রকাশ সব্যসাচীর
প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৩:৩৯
শাড়ি বিতর্কে খোলা চিঠি লিখে দুঃখ প্রকাশ সব্যসাচীর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

শাড়ি বিতর্ক নিয়ে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন ভারতের প্রখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার সাব্যসাচী মুখার্জি। ইনস্টাগ্রামে তিনটি খোলা চিঠির মাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করেন বি-টাউনের ফেভারিট সাব্যসাচী।


তার মন্তব্যের ভুল অর্থ করা হচ্ছে- মঙ্গলবার পর্যন্ত এই কথাটিই বারবার বলে এসেছেন তিনি। তবে বুধবার তিন পাতার ‘অ্যাপলোজাইস লেটার’-এ তার বক্তব্য, নিজের মন্তব্যে ভুল শব্দচয়ন করে ফেলেছেন তিনি। শব্দচয়ন করার ক্ষেত্রে তার আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিল বলে স্বীকার করেন তিনি।


দু’দিন আগে হার্ভার্ড-ইন্ডিয়া কনফারেন্সে শাড়ি পরা প্রসঙ্গে সাব্যসাচী বলেন, যদি কেউ আমাকে বলেন যে, আপনারা জানেন না কী ভাবে শাড়ি পরতে হয়, তা হলে বলব, আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। এটা সংস্কৃতির অংশ। প্রত্যেকেরই উচিত নিজেদের সংস্কৃতির পাশে দাঁড়ানো। পুরুষদের ধুতি প্রসঙ্গেও একই মতামত জ্ঞাপন করেন তিনি।


তবে তার মন্তব্যকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। তাকে ‘পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রতিনিধি’ বলে তীব্র সমালোচনা করা হয়। প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশও দেয়া হয়। বিতর্ক ক্রমাগত বাড়তে থাকে। তাই অবশেষে ক্ষমাই চান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি ফ্যাশন ডিজাইনার। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তিন পাতার একটি খোলা চিঠি পোস্ট করেন সব্যসাচী।


খোলা চিঠির প্রথম ভাগে তিনি লিখেছেন, শুরুতেই বলছি, আমাকে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ দেয়া হোক। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে নারীদের শাড়ি পরতে পারার বিষয়ে আমি ‘লজ্জা’ শব্দটি ব্যবহার করেছি। আমি অনুতপ্ত যে আমার কথা অনেকেরই নারীবিদ্বেষী, পুরুষতান্ত্রিক মনে করেছেন। আমার কথার উদ্দেশ্য অবশ্যই তা ছিল না।


খোলা চিঠির দ্বিতীয় ভাগে তিনি লিখেছেন, টানা ১৬ বছর ধরে আমি শাড়ি নিয়ে কাজ করছি। এই সময়ের মধ্যে বহু সর্বভারতীয় মঞ্চে, বিভিন্ন বয়সের, বিভিন্ন আয়ের মহিলাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শাড়ি পরার বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব দেখেছি। হার্ভার্ডে শাড়ির ঐতিহ্যের বিষয়ে কথা বলার সময় আমার মধ্যে জমে থাকা সেই হতাশাই প্রকাশ পেয়েছে। যা দুর্ভাগ্যবশত সব মহিলাদের প্রতি নির্দেশ করেছে। যারা শাড়ি পরতে চান এবং ভালবাসেন তাদের প্রতি ‘শেমিং’ বন্ধ হওয়ার উদ্দেশ্যে আমার বক্তব্য পেশ করা উচিত ছিল। ভারতীয় ঐতিহ্য এবং টেক্সটাইল আমাকে অসম্ভব টানে। আমি দুঃখিত যে, হতাশার বশে আমার এই টান আমি ভুল ভাবে ব্যক্ত করে ফেলেছি। আমি এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছি। যেই মহিলারা শাড়ি পরেন তাদের ব্যাপারে ‘আন্টি জি’ জাতীয় যে সব বডি শেমিং ব্যবহার করা হয় তা আমি অত্যন্ত নোংরা মনে করি। এইভাবে তারা শাড়িকে ছোট করে দেখে। এই সব মন্তব্যের মাধ্যমে শাড়ি ও ভারতীয় ঐতিহ্যকে বিদ্রুপ করা হয়।


খোলা চিঠির তৃতীয় ভাগে সব্যসাচী লিখেছেন, আমার লেবেলে প্যাটার্ন মেকার, ডিজাইনার, পাবলিসিস্টস, আইটি কনসালট্যান্ট, ডিপার্টমেন্ট হেড, স্টোর ম্যানেজার প্রতিটা বিভাগেই মহিলারা রয়েছেন যারা সর্বোচ্চ বেতন পান। মহিলা বলে নন, তারা এটা অর্জন করেছেন বলে। তারা প্রত্যেকেই এবং পুরুষরাও প্রত্যেক শুক্রবার সব্যসাচীর ভারতীয় পোশাক পরেন। ভারতীয় ঐতিহ্য এবং টেক্সটাইলকে উদযাপন করতে। আমার সে দিনের বক্তব্য ছিল সেই মহিলাদের উদ্দেশ্যে যারা শাড়ি পরতে পারেন না বলে গর্ব বোধ করেন এবং যারা শাড়ি পরেন সেই মহিলাদের বুড়ি, সেকেলে বলে কটাক্ষ করেন। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজার


বিবার্তা/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com