একজন নারীর শরীর সম্পূর্ণ তার, সেই শরীরের ওপর একচেটিয়া অধিকারও তার। তাই সেই নারীর সম্মতি ছাড়া তার শরীরে কেউই স্পর্শ করতে পারে না বলে অভিমত দিয়েছে ভারতের দিল্লির একটি আদালত।
৯ বছরের এক শিশুর যৌন নিগ্রহের মামলায় রায় দিতে গিয়ে শনিবার আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সীমা মাইনি বলেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে নারীরা ক্রমাগত দুশ্চরিত্র ও যৌন-বিকৃত পুরুষদের লালসার শিকার হয়ে আসছে। ওই মামলায় উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ছবি রামকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে এই অভিমত দিয়েছে আদালত।
২০১৪ সালে উত্তর দিল্লির মুখার্জি নগরে ভীড়ে ঠাসা বাজারে অশালীনভাবে ৯ বছরের ওই শিশুর গায়ে রাম হাত দিয়েছিল বলে অভিযোগ। ঘটনার পরই এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলে। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় রামকে।
যদিও রামের বক্তব্য ছিল, কোনো অসৎ উদ্দেশ ছিল না তার, অনিচ্ছাকৃতভাবেই ওই মেয়ের গায়ে হাত লেগে যায়। যদিও আদালতের বক্তব্য যৌন বাসনা মেটাতেই ভিড়ের সুযোগ নিয়ে সে ওই মেয়ের গায়ে হাত দিয়েছিল এবং ধরা পড়তেই অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করে।
ওই মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারক বলেন, একজন নারীর শরীর সম্পণূভাবে তার নিজের এবং সেই শরীরের ওপর তারই সম্পূর্ণ অধিকার। সেখানে ওই নারীর অনুমতি ছাড়া অন্য কারো স্পর্শ করার এক্তিয়ার নেই, সে যে উদ্যেশ্যেই হোক না কেন।
আদালত আরো জানায়, সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে পুরুষরা মেয়েদের গোপনীয়তার অধিকারকে স্বীকারই করে না এবং খারাপ উদ্দেশ্যে অসহায় তরুণীদের দিকে এগিয়ে যাওয়া বা যৌন নিগ্রহ করে নিজের বাসনা মেটানোর আগে পুরুষরা দুইবারও ভেবে দেখে না। ফলে এই ধরনের বিকৃত মানসিকতার পুরুষরা নারীদের গোপনীয়তার অধিকারের কথা ভুলে গিয়ে তাদের শ্লীলতাহানী করে।
রামকে যৌন বিকৃত বলে আখ্যায়িত করে এদিন আদালত জানায়, তার প্রতি নমনীয় হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। সেই সাথে রামকে ১০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়েছে, এর মধ্যে ৫ হাজার রুপি ওই মেয়েকে দেয়ার কথাও বলেছে আদালত। এছাড়াও ওই মেয়ের হাতে আরো ৫০ হাজার রুপি তুলে দেয়ার জন্য দিল্লির স্টেট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি কর্তৃপক্ষকেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিবার্তা/ডিডি/জাকিয়া
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]