গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমে গত প্রায় দেড় মাস আগে জলসীমা পেরিয়ে ভারতীয় সীমানায় ঢুকে পড়েছিল ট্রলার। আর তাতেই সমস্যা তৈরি হলো ১৪ জন বাংলাদেশি মৎসজীবীর।
সেই থেকে আইনি জটিলতায় পড়ে না পারছেন নিজের দেশে ফিরতে, না পারছেন ভারতে দু'মুঠো খাবারের জোগার করতে। প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের জেলা প্রশাসনের তরফে খাবারের ব্যবস্থা করা হলেও বর্তমানে তারাও হাত গুটিয়ে নিয়েছে। ফলে না খেতে পেয়ে মরার অবস্থা হয়েছে তাদের।
জানা গেছে, গত বছরের ৭ নভেম্বর ইঞ্জিন বিকল হয়ে গভীর সমুদ্রে 'চম্পা আখতার' নামে একটি বাংলাদেশি ট্রলার ভাসতে ভাসতে ভারতের জলসীমায় ঢুকে পড়ে। এরপর প্রাকৃতিক দুর্যোগে কবলিত হয়ে ট্রলারটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দীঘা থেকে ১৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে বিপজ্জনকভাবে ভাসছিলো। প্রায় ১৪ দিন ভেসে থাকার পর ওই ট্রলারের দেখা মেলে দীঘা শংকরপুরের রাজু ট্রলার নামে স্থানীয় একটি ট্রলারের।
এরপর গামছা নাড়িয়ে বিপদ সঙ্কেত পাঠানো হয় 'রাজু ট্রলারে'র কাছে। শেষে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের বিপদের কথা বুঝতে পেরে ভারতীয় ট্রলারের মৎসজীবীরা গত ২২ নভেম্বর বাংলাদেশি ট্রলারটিকে টেনে দীঘা মোহনায় নিয়ে আসে। ইতোমধ্যে তাদের কাছে থাকা সংস্থার পক্ষ থেকে পাঠানো খাবারও শেষ হয়ে যায়।
যদিও দীঘা মোহনা থানার পুলিশ তাদের অসহায়ত্বের কথা ভেবে প্রথমে খাবারের ব্যবস্থা করে। কিন্তু গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে থেকে প্রশাসন থেকে সেরকম কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এখন প্রচন্ড খাদ্য সংকটে পড়েছেন তারা। সেই সঙ্গে জানুয়ারীর হাড় কাঁপানো শীতে তাদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এদিকে অবৈধভাবে বিদেশি সীমানায় ঢুকে পড়ায় তাদের দেশে ফেরা নিয়েও তৈরি হয়েছে আইনি জটিলতা। যদিও এই জটিলতা কাটাতে ইতোমধ্যেই পুলিশ প্রশাসনের তরফে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের তরফে সদর্থক বার্তা না আসায় নিদারুণ অসহায় অবস্থার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে ওই ১৪ বাংলাদেশি মৎসজীবীর।
এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মৎস দপ্তরের কর্মকর্তারাও জানান, বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়েছে, তাদের নামের তালিকা ও অন্যান্য নথি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি।
জাকির মাঝি নামে এক বাংলাদেশি মৎসজীবী জানান, কার্তিক মাসে যখন আমরা ট্রলার নিয়ে বাহির হই তখন শীত ছিলো না, তাই শীতের পোশাকও নেই। দুই দিন আগে থানায় গিয়েছিলাম সেখান থেকে বলা হলো দুই দিন পরে আমাদের ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু মাঝে কয়েকটা দিন খাবারের জন্য খুব কষ্ট করতে হয়েছে!
আটকে পড়া মৎসজীবীরা বাংলাদেশের ঢাকার পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া থানা এলাকার বাসিন্দা।
বিবার্তা/সৌরভ/শাহনেওয়াজ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]