শিরোনাম
বিজয় দিবসে ত্রিপুরায় ভারত-বাংলা মৈত্রী উদ্যানের উদ্বোধন
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৭, ১২:৩৩
বিজয় দিবসে ত্রিপুরায় ভারত-বাংলা মৈত্রী উদ্যানের উদ্বোধন
কলকাতা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

অবশেষে দীর্ঘ আট বছরের প্রচেষ্টায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ স্মরণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকার তৈরী করেছে একটি বিশালাকার মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পার্ক। ভারতের ত্রিপুরার চোত্তাখোলায় ২০ হেক্টর জমির ওপর গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানের এই পার্ক।


১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিবিজড়িত ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যানের উদ্বোধন করবেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।


এব্যাপারে ত্রিপুরা রাজ্যের স্বাস্থ্য ও রাজস্ব আদায় মন্ত্রী বাদল চৌধুরী জানান, ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ ত্রিপুরার চোত্তাখোলায় ৭ কোটি ভারতীয় রুপি খরচে এই উদ্যানটি নির্মাণ করা হয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন ভারত ও বাংলাদেশের শিল্পীদের উপস্থিতিতে এই উদ্যানটির উদ্বোধন করবেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। এরপর সেটি সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে।



প্রবীণ কমিউনিস্ট নেতা ও এমএলএ সুধন দাস জানান, ২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর যখন বিজয় দিবস উদযাপন করি তখনই মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণের ব্যপারে আমরা প্রথম এব্যাপারে চিন্তাভাবনা করি ও কাজ শুরু করি। পরবর্তীতে ২০১০ সালে মার্চে বাংলাদেশ সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে উদ্যান নির্মাণের বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার আলোচনা করেছিলেন। এরপরই সরকারি ভাবে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।


কি কি আছে এই মৈত্রী পার্কে? জানালেন সুধন দাস। তিনি আরও জানান, এটি শুধুমাত্র একটি পার্কই নয়, আরও অনেক কিছু রয়েছে। একটি যুদ্ধ জাদুঘর, উঁচু টিলা, সবুজ উপত্যকা, হ্রদ, গাছপালা, ভাস্কর্য, বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধাদের কবরস্থান ছাড়াও আরও অনেক উপাদান থাকবে।


পার্কের ভিতরেই থাকছে একটি বিশাল ওয়াচটাওয়ার, যেখান থেকে সরাসরি চাক্ষুষ করা যাবে পূর্ব বাংলাদেশের কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালীর একাধিক অংশ। এই উদ্যানের ভেতর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বিশাল ভাস্কর্য থাকছে বলেও জানান তিনি।


রাজ্যে এই ধরনের একটি স্মৃতি উদ্যান নির্মাণের যথার্ততা নিয়ে মন্ত্রী জানান, ত্রিপুরা কেবলমাত্র উদ্বাস্তুদের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়নি, সেসময় মুক্তিযোদ্ধাদের সব ধরনের সমর্থন ও সহায়তা প্রদান করেছিল। সেসময় পাক হানাদার বাহিনীর দ্বারা সীমান্ত শহর বেলোনিয়ার ওপর হামলা চালানো হয়েছিল।


সম্প্রতি ত্রিপুরা রাজ্য সফর করে যাওয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজ্জামেল হকও জানান, এরকম একটি পার্ক ও যাদুঘর নির্মাণের জন্য আমরা ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।


বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই চোত্তাখোলাতেই মুক্তিযোদ্ধদের অলিখিত ছাউনি ছিল। সেসময় মুক্তিবাহিনী চোত্তাখোলায় বেসক্যাম্প স্থাপন করে। এখান থেকেই দেশের ভেতরে প্রবেশ করে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। সেই স্মৃতি ধরে রাখতেই ২০০৯ সালে স্থানীয় এমএলএ সুধন দাস ওই স্থানকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পার্ক নাম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ উৎসব শুরু করলেও পরবর্তী সময় ওই স্থানের নামকরণ করা হয় ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যান। ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মণি এই পার্কের শিল্যান্যাস করেন।


বিবার্তা/ডিডি/ইমদাদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com